অরুন্ধতী দেবী | |
---|---|
জন্ম | ২৯ এপ্রিল ১৯২৪ |
মৃত্যু | ১ জানুয়ারি ১৯৯০ (৬৫ বছর) |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | অভিনেতা, পরিচালক, লেখক ও গায়ক |
কর্মজীবন | ১৯৪০ - ১৯৮২ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | বিচারক, জতুগৃহ |
সঙ্গী | প্রভাত মুখোপাধ্যায় ( ১৯৫৫, বিচ্ছেদ) তপন সিনহা ( বি. ১৯৫৭) |
সন্তান | অনিন্দ্য সিনহা সহ ১জন |
অরুন্ধতী দেবী (জন্ম: ১৯২৪ - মৃত্যু: ৩১ জানুয়ারি, ১৯৯০) একজন বাঙালি ভারতীয় অভিনেতা, পরিচালক, লেখক এবং গায়ক।[১][২] যিনি মূলত বাংলা সিনেমায় তাঁর কাজের জন্য পরিচিত।[৩]
অরুন্ধতী দেবী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী ছিলেন, যেখানে তিনি শৈলজারঞ্জন মজুমদারের কাছে রবীন্দ্রসংগীতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন । তিনি ১৯৪০ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে একজন রবীন্দ্রসংগীত গায়িকা হিসাবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। একজন অভিনেত্রী হিসেবে, অরুন্ধতী দেবী কার্তিক চট্টোপাধ্যায়ের বাংলা চলচ্চিত্র "মহাপ্রস্থানের পথে .(১৯৫২) চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন যার একটি হিন্দি সংস্করণও ছিল যাত্রিক শিরোনামে । পরবর্তীতে তিনি নবজন্ম (১৯৫৬) ছবিতে দেবকীকুমার বসু, চলচল (১৯৫৬) এবং পঞ্চতপা (১৯৫৭) ছবিতে অসিত সেন, প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন।মা (১৯৫৬), মমতা (১৯৫৭), বিচরক (১৯৫৯) এবং আকাশপাতাল (১৯৬০) এবং কালামাটি ``তে তপন সিনহা (১৯৫৮), ঝিন্দের বন্দী ( ১৯৬১ ), জতুগৃহ (১৯৬৪)। ১৯৬৩ সালে, তিনি বিজয় বসু পরিচালিত জাতীয় পুরস্কারবিজয়ী বাংলা চলচ্চিত্র ভগিনী নিবেদিতা (১৯৬২) তে নামভূমিকার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য বিএফজেএ পুরস্কারে ভূষিত হন । ১৯৬৭ সালে, তিনি ১৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাঁর পরিচালনায় প্রথম ছবি ছুটি " র জন্য উচ্চ সাহিত্যিক কাজের উপর ভিত্তি করে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন ।
তিনি ১৯২৩ সালে বাংলাদেশের বরিশালের বিখ্যাত গুহঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিকভাবে সাংস্কৃতিক পরিবেশের মধ্যে বেড়ে উঠেছিলেন। ছোটবেলায় নৃত্য ও সংগীতের অনুশীলন করেন ও গান শেখেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শৈলজারঞ্জন মজুমদার ছিলেন তাঁর সঙ্গীত শিক্ষক। সংগীত ও নৃত্য ছাড়াও অভিনয়ের প্রতি আকর্ষণ ছিল। মাত্র ছয় বছর বয়সে অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়। রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর নাটকে অমলের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে ‘মায়ার খেলা’ নাটকে অভিনয় করেন তিনি।[৪]
খ্যাতনামা চিত্রনির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিউ থিয়েটার্সের ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ (১৯৫২) ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জীবনে প্রবেশ করেন। চিত্রনাট্যকার বিনয় চট্টোপাধ্যায় একাজে তাকে প্রথম সহায়তা করেন। প্রথম ছবিতেই অভিনয় দক্ষতা প্রমাণ করেন এবং একের পর এক বাংলা সিনেমায় সফলভাবে অভিনয় করে গেছেন অরুন্ধতী দেবী। এর মধ্যে ‘নদ ও নদী’ (১৯৫৪), ‘বকুল’ (১৯৫৪), ‘সতী’ (১৯৫৪), ‘প্রশ্ন’ (১৯৫৪), ‘গোধূলি’ (১৯৫৫), ‘মা’ (১৯৬০), ‘পঞ্চতপা’ (১৯৬০), ক্ষুধিত পাষাণ (১৯৬০) ও ‘দুজনার’ (১৯৫৫) অন্যতম। ভগিনী নিবেদিতার জীবনাবলম্বনে তার অভিনীত ভগিনী নিবেদিতা সাড়া ফেলে। তিনি বেশ কয়েকটি ছবি পরিচালনাও করেন। চল্লিশের দশকে তার বিবাহ হয় প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে এবং তাদের অনুরাধা নামে একটি কন্যা হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তিনি বিখ্যাত পরিচালক তপন সিংহের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।তাদের এক পুত্র অনিন্দ্য সিংহ পেশায় বিজ্ঞানী।