অর্নিথিস্কিয়া সময়গত পরিসীমা: অন্ত্য ট্রায়াসিক–অন্ত্য ক্রিটেশিয়াস, ২৩.১৪–৬.৬কোটি | |
---|---|
বিভিন্ন প্রকার অর্নিথিস্কিয়ান ডাইনোসরের জীবাশ্ম | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
উপপর্ব: | ভার্টিব্রাটা |
শ্রেণী: | সরীসৃপ |
মহাবর্গ: | ডাইনোসরিয়া |
বর্গ: | †অর্নিথিস্কিয়া সীলি, ১৮৮৮ |
উপবিভাগসমূহ | |
অর্নিথিস্কিয়া (উচ্চারণ /ɔːrn[অসমর্থিত ইনপুট: 'ɨ']ˈθɪskiə/ অর্-নি-থিস্-কি-আ)[১] বা প্রিডেন্টাটা রা হল নিরামিষাশী ডাইনোসরদের একটি অধুনা-বিলুপ্ত বর্গ। এদের সমস্ত প্রজাতির একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল মুখে পাখির মত চঞ্চুর উপস্থিতি। অর্নিথিস্কিয়া নামের উৎস হল গ্রিক অর্নিথেইয়স (ορνιθειος) অর্থাৎ 'পাখির মত', আর ইস্কিয়ন (ισχιον) অর্থাৎ 'পশ্চাদ্দেশ'। এদের শ্রোণীচক্রের পাখির মত গড়নের জন্য এই নামকরণ করা হয়েছে, যদিও বর্তমান পাখিরা প্রকৃতপক্ষে 'গিরগিটির মত পশ্চাদ্দেশবিশিষ্ট' সরিস্কিয়ান ডাইনোসরদের থেকে উদ্ভূত হয়।
পরিচিত অর্নিথিস্কিয়ান ডাইনোসরেদের মধ্যে পড়ে শিংওয়ালা সেরাটোপ্সিয়ান, বর্মধারী স্টেগোসর ও অ্যাঙ্কিলোসর, ইগুয়ানোডন এবং "হংসচঞ্চু" হ্যাড্রোসরিড-দের গোষ্ঠী। তৃণভোজী এই ডাইনোসরেরা প্রায়ই দল বেঁধে থাকত, আর এদের সংখ্যা ছিল সরিস্কিয়ানদের চেয়ে বেশি। বহু প্রজাতির অর্নিথিস্কিয়ান ছিল থেরোপডদের শিকার, আর সাধারণত আয়তনে তারা সরোপডদের চেয়ে ছোট হত।
১৮৮৭ খ্রিঃ হ্যারি গোভিয়ার সীলি ডাইনোসরিয়া মহাবর্গটিকে সরিস্কিয়া ও অর্নিথিস্কিয়া - এই দুই বর্গে ভাগ করেন। শ্রেণিবিভাগের এই পদ্ধতিটি বিজ্ঞানীমহলে সাধারণভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে। অর্নিথিস্কিয়া বর্গের স্বাতন্ত্র্য্য লক্ষ্য করা যায় তাদের শ্রোণীচক্রের সাথে পাখিদের শ্রোণীচক্রের সাদৃশ্যে (যদিও পাখিরা এদের থেকে বিবর্তিত হয়নি), কশেরুকা ও বর্মের গড়নে এবং নিচের চোয়ালের সামনে একটি 'প্রিডেন্টারি' হাড়ের অবস্থানে। এদের উপরের চোয়ালের সামনেও 'প্রিম্যাক্সিলা' নামক একটা অতিরিক্ত হাড় থাকত। এই দুটো হাড় একত্রে পাখির ঠোঁটের মত ধারালো একটা চঞ্চু নির্মাণ করত যার সাহায্যে এই ডাইনোসরেরা সহজেই গাছের ডালপালা ছিঁড়ে খেতে পারত।
অর্নিথিস্কিয়ান পিউবিস হাড়দু'টি ইলিয়ামের সমান্তরালভাবে নিম্নমুখী ও পশ্চাৎমুখী, এবং সামনের দিকে প্রলম্বিত একটি করে অস্থিময় উপবৃদ্ধির সাহায্যে তলপেটের বিভিন্ন অঙ্গের ভারসাম্য রক্ষা করে। এর ফলে গোটা শ্রোণীচক্র চারটে কাঁটার সংযোগস্থলের আকার পায়। অন্যদিকে সরিস্কিয়ান পিউবিস হাড়টি নিম্নমুখী হলেও আদিম গিরগিটিদের মত সামনের দিকে ফেরানো থাকে। অর্নিথিস্কিয়ানদের চক্ষুকোটরের সম্মুখবর্তী গহ্বর তথা অ্যান্টিঅর্বিটাল ফেনেস্ত্রাগুলিও আয়তনে সরিস্কিয়ানদের চেয়ে ছোট হত, আর তাদের শ্রোণীচক্রের সার্বিক গঠনও ছিল অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল। সুষুম্নাকাণ্ডের সমান্তরালভাবে পিউবিসের বিন্যাস ডাইনোসরদের মধ্যে তিন বার আলাদাভাবে বিবর্তিত হয়েছিল, যথা - অর্নিথিস্কিয়ানদের মধ্যে, থেরিজিনোসরদের মধ্যে আর পক্ষীসদৃশ ড্রোমিওসরদের মধ্যে।
বিবর্তনীয় ইতিহাস থেকে বোঝা যায় অর্নিথিস্কিয়ানরা অন্তত তিন বার দ্বিপদ থেকে চতুষ্পদ প্রজাতির জন্ম দিয়েছিল, আর প্রথম দিকে দ্বিপদ আর চতুষ্পদ - দুই রকম অবস্থানেই স্বচ্ছন্দ ছিল।[২]
নিচে প্রদত্ত অর্নিথিস্কিয়ানদের সরলীকৃত শ্রেণিবিভাগের ছকটি ২০১১ খ্রিঃ টমাস আর. হলৎজ্ কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের অনুসারী।[৩]
জেনাসরিয়ান অর্নিথিস্কিয়ানরা দু'টো ক্লেডে বিভক্ত: থাইরিওফোরা ও সেরাপোডা। থাইরিওফোরার মধ্যে পড়ে স্টেগোসরিয়া (যেমন বর্মধারী স্টেগোসরাস) ও অ্যাঙ্কিলোসরিয়া (যেমন অ্যাঙ্কিলোসরাস)। সেরাপোডার অন্তর্গত হল মার্জিনোসেফালিয়া (শিংওয়ালা ট্রাইসেরাটপ্স প্রভৃতি ও প্যাকেসেফালোসরিয়া) এবং অর্নিথোপোডা (হংসচঞ্চু হ্যাড্রোসরাস ও এডমন্টোসরাস প্রভৃতি)। সেরাপোডার ধারণাটি অপেক্ষাকৃত সাম্প্রতিক (সেরেনো, ১৯৮৬)।
নিচের ক্ল্যাডোগ্রামটি ২০০০ খ্রিঃ ঝেং ও তার সহকর্মীদের প্রদত্ত একটি বিশ্লেষণের অনুসারী। হেটারোডন্টোসরিডির সমস্ত চিহ্নিত সদস্যেরা এক উৎস থেকে একই সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে।[৪]
অর্নিথিস্কিয়া |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বাট্লার ও অন্যান্যদের দ্বারা ২০১১ খ্রিঃ প্রস্তুত ক্ল্যাডোগ্রামটি নিচে দেওয়া হল। হিপ্সিলোফোডন, জেহোলোসরাস প্রভৃতিকে অর্নিথোপোডার অন্তর্গত বিবেচনা করা হয়েছে।[৫]
অর্নিথিস্কিয়া |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||