অলিম্পিয়া ডুকাকিস | |
---|---|
Olympia Dukakis | |
![]() ২০১৯ সালে ডুকাকিস | |
জন্ম | লোওয়েল, ম্যাসাচুসেট্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ২০ জুন ১৯৩১
মৃত্যু | ১ মে ২০২১ নিউ ইয়র্ক সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৮৯)
জাতীয়তা | মার্কিন |
শিক্ষা | বিএফএ ও এমএফএ |
মাতৃশিক্ষায়তন | বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৬২-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | লুই জরিখ (বি. ১৯৬২; মৃ. ২০১৮) |
সন্তান | ৩ |
আত্মীয় | মাইকেল ডুকাকিস (চাচাতো ভাই) |
অলিম্পিয়া ডুকাকিস (ইংরেজি: Olympia Dukakis; জন্ম: ২০ জুন ১৯৩১ - ১ মে ২০২১) একজন মার্কিন অভিনেত্রী ছিলেন। ম্যাসাচুসেট্সের উইলিয়ামস্টোনে মঞ্চ নাটকে অভিনয় দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৩০ এর অধিক মঞ্চ নাটকে, ষাটের বেশি চলচ্চিত্রে এবং ৫০টি টেলিভিশন ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। মঞ্চে অভিনয়ের জন্য তিনি একটি ওবি পুরস্কার, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য একটি একাডেমি পুরস্কার ও একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার-সহ একাধিক পুরস্কার অর্জন করেছেন।
ম্যাসাচুসেট্স থেকে নিউ ইয়র্কে পাড়ি জমানোর পর ১৯৬৩ সালে তিনি অফ-ব্রডওয়ে মঞ্চে ম্যান ইকুয়ালস ম্যান নাটকে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ওবিই পুরস্কার লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি মুনস্ট্রাক চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন এবং বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি সিনতারা (১৯৯২) মিনি ধারাবাহিকে অভিনয় করে অপর একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে মনোনীত হন এবং লাকি ডে, মোর টেলস অব দ্য সিটি, ও জোন অব আর্ক মিনি ধারাবাহিকে অভিনয় করে এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তার আত্মজীবনী আস্ক মি অ্যাগেইন টুমরো: আ লাইফ ইন প্রগ্রেস ২০০৩ সালে প্রকাশিত হয়। ২০১৮ সালে তার জীবনী সম্পর্কিত প্রামাণ্যচিত্র অলিম্পিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।
ডুকাকিস ১৯৩১ সালের ২০শে জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স অঙ্গরাজ্যের লোওয়েল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কনস্টান্টিন এস. ডুকাকিস এবং মাতা আলেকজান্ড্রা (জন্ম: ক্রিস্টস)। তার পিতামাতা দুজনেই গ্রিক অভিবাসী। তার পিতা ১৯১২ সালে তুরস্ক থেকে এবং তার মাতা ১৯০৭ সালে পেলেপোনিজ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তার পিতামাতা দুজনেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তার পিতা প্রথম জীবনে সমাজতান্ত্রিক ছিলেন, এবং শেষ জীবনে রিপাবলিকান দলের রাজনীতি করেছেন। তার মাতা সর্বদাই ডেমোক্র্যাটদের অনুসারী ছিলেন।[১] তার এক ভাই রয়েছে, তার নাম অ্যাপোলো। তিনি একজন মঞ্চ পরিচালক ও অভিনেতা। তার চাচাতো ভাই মাইকেল ডুকাকিস ছিলেন ম্যাসাচুসেট্সের গভর্নর এবং ১৯৮৮ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী।[১]
ডুকাকিস ম্যাসাচুসেট্সের আর্লিংটনের আর্লিংটন হাই স্কুলে পড়াশুনা করেন। শৈশব থেকে তিনি বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, যেমন - বাস্কেটবল, ফিল্ড হকি, টেনিস, ও বন্দুক চালনার সাথে জড়িত ছিলেন এবং ভাবতেন তিনি একজন অ্যাথলেট হবেন। তিনি ১৯ বছর বয়স থেকে টানা তিনবার ফেন্সিং খেলায় নিউ ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে তিনি অভিনয় বিষয়ে পড়াশুনা করার জন্য বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।[১] তিনি সেখান থেকে বিএফএ ও এমএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন।[২]
ডুকাকিস ১৯৮৭ সালে প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র মুনস্ট্রাক-এ শের অভিনীত লরেটা চরিত্রের মা রোজ ক্যাস্টোরিনি চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটির পরিচালক নরমান জিউইসন প্রত্যাশা করেন যে তিনি এই চরিত্রের জন্য পুরস্কৃত হবেন।[৩] ডুকাকিস এই কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন এবং জিউইসনের কথা বিশ্বাস করেন। অস্কারের পাশাপাশি তিনি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন[২] এবং বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তার তাৎক্ষণিক পরিবর্তিত অভিনয় এবং গুরুগম্ভীরের পাশাপাশি হাস্যকর অভিনয়ের জন্য লস অ্যাঞ্জেলেস চলচ্চিত্র সমালোচক সমিতি থেকে পুরস্কৃত হন।[৪]
১৯৮৯ সালে তিনি নরমান জিউসন পরিচালিত স্টিল ম্যাগনোলিয়াস চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এতে তাকে শার্লি ম্যাকলেইন ও স্যালি ফিল্ডের সাথে কাজ করতে দেখা যায়। একই বছর তিনি লুক হুজ টকিং ও ড্যাড চলচ্চিত্রে মাতৃস্থানীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন। এই তিনটি ছবিই হিট তকমা লাভ করে।[১]
২০১১ সালে ডুকাকিস ল অ্যান্ড অর্ডার: স্পেশাল ভিকটিমস ইউনিট-এ অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন। এতে তাকে ডেবি মার্শ নামক অ্যাটর্নি চরিত্রে দেখা যায়।[৫] ২০১৩ সালে তিনি মন্টানা অ্যামাজন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং নির্বাহী প্রযোজকের দায়িত্ব পালন করেন।[৬] একই বছরের ২৪শে মে হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামাঙ্কিত তারকা খচিত হয়।[৭]
২০১৮ সালে তার জীবনী ও কর্মজীবন নিয়ে নির্মিত মার্কিন প্রামাণ্য চলচ্চিত্র অলিম্পিয়া মুক্তি পায়। হ্যারি মাভরোমিশালিস পরিচালিত চলচ্চিত্রটিতে উপি গোল্ডবার্গ, লরা লিনি, এড অ্যাজনার, লেইনি কাজান, আর্মিস্টিড মপিন, অস্টিন পেন্ডলটন, ডায়ান ল্যাড এবং ডুকাকিসের চাচাতো ভাই গভর্নর মাইকেল ডুকাকিস অভিনয় করেন।[৮] এটি ২০২০ সালের জুলাই মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[৯]
ডুকাকিসের সর্বশেষ অভিনীত কাজ হল ২০২১ সালের নট টু ফরগেট চলচ্চিত্রে বিচারক চরিত্রে অভিনয়।[১০]
ডুকাকিস ১৯৬২ সালে অভিনেতা লুই জরিখকে বিয়ে করেন। জরিখ ২০১৮ সালের ৩০শে জানুয়ারি মারা যান। তাদের এক কন্যা ক্রিস্টিনা এবং দুই পুত্র পিটার ও স্টিফান। তার আত্মজীবনী আস্ক মি অ্যাগেইন টুমরো: আ লাইফ ইন প্রোগ্রেস ২০০৩ সালে হারপার কলিন্স থেকে প্রকাশিত হয়।[২]
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ডুকাকিস ২০২১ সালের ১লা মে ৮৯ বছর বয়সে ম্যানহাটনে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।[১১][১২]