ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | অ্যান্ড্রু মার্ক জেফারসন হিলডিচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | উত্তর অ্যাডিলেড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ২০ মে ১৯৫৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, প্রশাসক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৭৭–১৯৮১ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮২–১৯৯২ | সাউথ অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ |
অ্যান্ড্রু মার্ক জেফারসন হিলডিচ (ইংরেজি: Andrew Hilditch; জন্ম: ২০ মে, ১৯৫৬) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর অ্যাডিলেডে জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও প্রশাসক। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৫ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন অ্যান্ড্রু হিলডিচ। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৮ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে অ্যান্ড্রু হিলডিচের। পাশাপাশি ৮টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন তিনি।
১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণের পর ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সাউথ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন অ্যান্ড্রু হিলডিচ।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর অ্যাডিলেডে জন্মগ্রহণ করলেও প্রথম-শ্রেণীর খেলায় নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ সালে হোবার্টে তাসমানিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলাটিতে ৫ ও ৪২ রান তুলেন তিনি। তাসমানিয়া দল তখনও শেফিল্ড শিল্ডে অংশগ্রহণ করেন ও এনএসডব্লিউ দলেও তরুণ খেলোয়াড়দের প্রাধান্য ছিল। ১৯৭৭-৭৮ মৌসুমে বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের ফলে শূন্যতা দেখা দিলে এনএসডব্লিউ’র পক্ষে চারটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, নিজস্ব তৃতীয় খেলায় এনএসডব্লিউ’র অধিনায়কের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন অ্যান্ড্রু হিলডিচ।[১]
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে অ্যান্ড্রু হিলডিচের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর ছিল। এনএসডব্লিউ দলে নিয়মিতভাবে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ৪৫.৭৬ গড়ে ৭৭৮ রান তুলেন তিনি। নিজ শহর অ্যাডিলেডে ১২৪ রানের প্রথম সেঞ্চুরিটি করে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এছাড়াও, সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৩ রান তুলেছিলেন।[২]
ছয় টেস্টের অ্যাশেজ সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে ইংল্যান্ড দল এগিয়ে যাওয়া অবস্থায় সিডনিতে চূড়ান্ত টেস্ট খেলার জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। তবে, তিনি মাত্র ৩ ও ১ রান তুলেছিলেন।[৩] তাসত্ত্বেও, পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলার জন্য হিলডিচকে দলে রাখা হয়।
মেলবোর্নে সফররত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলার সুযোগ পান। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬২ রানের ইনিংস খেলে সরফরাজ নওয়াজের বলে আউট হন।[৪]
পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩৬ রানের লক্ষ্যমাত্রায় অগ্রসর হবার প্রাক্কালে ২৯ রানে থাকা অবস্থায় পিচে বল লাফানো অবস্থায় বল ধরে সরফরাজ নওয়াজের কাছে দেন। কিন্তু, সরফরাজ আম্পায়ারের কাছে আবেদন করলে হিলডিচকে আউট হিসেবে মাঠ ত্যাগ করতে বলেন। এরফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় ও প্রথম নন-স্ট্রাইকার হিসেবে হ্যান্ডল্ড দ্য বল হিসেবে আউট হন।[৫][৬]
১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে ভারত গমন করেন ও ছয় টেস্টের সবকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। তবে, বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেট থেকে চলে আসা বাদ পড়া খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তির ফলে একবার দলের বাইরে অবস্থান করত বাধ্য হন। এমনকি এনএসডব্লিউ’র পক্ষে নিয়মিতভাবে খেলার বিষয়টিও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি অ্যান্ড্রু হিলডিচ।
১৯৮২-৮৩ মৌসুমে নিজ রাজ্য দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান। মৌসুমের অধিকাংশ সময়ই তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন। নতুন দল অ্যাডিলেডের সদস্যরূপে মাইকেল হোল্ডিংয়ের ন্যায় ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলারের বোলিং আক্রমণ প্রতিহত করে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ১০৯ রানের প্রথম সেঞ্চুরি করেন। এরপর হিলডিচ নিজস্ব পছন্দের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের অবস্থানে চলে যান। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। ৫৮.৫৬ গড়ে ৯৩৭ রান তুলেন তিনি। তন্মধ্যে, মেলবোর্নে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৩০ রান তুলেন।
১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে শেফিল্ড শিল্ডের প্রথম খেলায় এনএসডব্লিউর বিপক্ষে মনোরম ১৮৪ রানের ইনিংসসহ আরও কয়েকটি ভালোমানের ইনিংস খেলেন। ফলশ্রুতিতে, মেলবোর্নে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে খেলার জন্য তাকে পুনরায় দলে আমন্ত্রণ জানানো হয়। খেলায় তিনি ৭০ ও ১১৩ রানের ইনিংস খেলেন। তন্মধ্যে, ১১৩ রান তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। শুধু তাই নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৎকালীন ১১টি ধারাবাহিক টেস্ট জয়ের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। সিডনির পরবর্তী টেস্টে হিলডিচকে দলের সহঃঅধিনায়কের মর্যাদা দেয়া হয়।
১৯৮৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিয়া দলের সহঃঅধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। হেডিংলিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস ১১৯ ও ৮০ তুললেও দল পরাজিত হয়েছিল। এরপর সিরিজের মাঝামাঝি সময়ে তিনবার চল্লিশ রানের কোটায় আউট হন। লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের স্বল্প লক্ষ্যমাত্রায় এসেও ইয়ান বোথামের বাউন্সারে হুক শট মারতে গিয়ে বাউন্ডারি সীমানায় কট আউট হন। এজবাস্টনের পঞ্চম টেস্টেও একইভাবে বোথামের বলে আউট হন। ওভালে ষষ্ঠ টেস্টেও তৃতীয়বারের মতো ঘটনা ঘটে। এরফলে হুক শটে সন্দেহাতীতভাবে আউট হবার খ্যাতি কুড়ান।
অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার পর ব্রিসবেনে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে খেলেন। হুক মারের সাহায্যে খেলতে গিয়ে দুইবারই ফাইন লেগ অঞ্চলে ফিল্ডারের হাতে তালুবন্দী হন। এভাবেই আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ শেষ হয়ে যায়। তাকে দল থেকে বাদ দেয়া হয় ও তিনি তার স্থান আর দখল করতে পারেননি।
টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর অ্যান্ড্রু হিলডিচ বেশ রান খরায় ভোগেন।[৭] তবে এ সঙ্কট অতিক্রমনে সক্ষম হন ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেন নিজেকে। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহক হন। এরপর আইন পেশায় মনোনিবেশ ঘটানোর লক্ষ্যে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।
১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে জাতীয় দল নির্বাচক হিসেবে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে পুনরায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ট্রেভর হোন্সের পদত্যাগের পর এপ্রিল, ২০০৬ সালে দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে অস্ট্রেলিয়া দল আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানে ছিল।[৮] তবে, অক্টোবর, ২০১০ সালে দলটি পঞ্চম স্থানে চলে যায়।[৯] ফলশ্রুতে অল্প কিছুদিন পরই, আগস্ট, ২০১১ সালে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০০৯ সালে তৃতীয় টেস্ট চলাকালে স্বীয় কন্যা ও কুকুরকে নিয়ে সমুদ্র তীরে যাবার ফলে গণমাধ্যম ও সাবেক টেস্ট খেলোয়াড়েরা তার সমালোচনায় মুখরিত হয়। দুই টেস্টে ব্র্যাড হজকে বাদ দেয়া হয় ও এরপর দ্বি-শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি।[১০] দল নির্বাচকমণ্ডলী শেন ওয়ার্নের অবসর গ্রহণের পরবর্তী চার বছর দশজন স্পিনারকে দলে অন্তর্ভুক্ত করে।[১১] টেস্টে পুনরায় অংশগ্রহণের পর অ্যালাস্টেয়ার কুকের পরই বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী সাইমন ক্যাটিচের সাথে চুক্তি ছিন্ন করেন।[১২]
সাবেক অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ও কোচ বব সিম্পসন সম্পর্কে তার শ্বশুর হন। জাতীয় আইনজীবী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার তিনি। বীমা আইনে সবিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।