এই নিবন্ধটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। |
অ্যান্ড্রোজেন বা অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন হল সে সকল প্রাকৃতিক স্টেরয়েড হরমোন, যেগুলো মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে পুরুষদের এন্ড্রোজেন রিসেপ্টর বন্ধিত করতে কাজ করে| এটি পুরুষের যৌনাঙ্গ গঠন এবং গৌন শারীরিক বৈশিষ্ট গঠনে কাজ করে| টেস্টোস্টেরন একটি এন্ড্রোজেনিক হরমোন| বয়োসন্ধিকালে ছেলে - মেয়ে উভয়ের মাঝেই এন্ড্রোজেন নিঃসরণ বেড়ে যায়।[১] পুরুষদের প্রধান এন্ড্রোজেন হল টেস্টোস্টেরন। [২] এছাড়াও পুরুষ শরীর গঠনে ডিহাইড্রোটেসটোসটেরন (DHT) ও এন্ড্রোসটেনেডিওন একইভাবে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। [২] ডিএইচটির প্রভাবে পুরুষ জননাঙ্গ, শুক্রাশয় ও প্রস্টেট গ্রন্থির বিকাশ ঘটে। বয়ঃসন্ধিকালেই পুরুষের প্রস্টেট বৃদ্ধিতে ও সেবাসিওস গ্রন্থির কর্মতৎপড়তা এর প্রভাবেই বৃদ্ধি পায়। এন্ড্রোজেন সাধারণত পুরুষ হরমোন বলে বহুল প্রচলিত হলেও, নারীদেহেও এর উপস্থিতি বিদ্যমান। বিশেষ করে নারী যৌনাকাঙ্খা উৎপন্নে এন্ড্রোজেনের ভূমিকা আছে। এছাড়াও এন্ড্রোজেন সরাসরিভাবে এস্ট্রোজেনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। উল্লেখ্য, এস্ট্রোজেন নারী ও পুরুষ উভয়ের দেহেই উপস্থিত। প্রাকৃতিক কারণ ছাড়াও, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এন্ড্রোজেন হরমোনের ব্যবহার রয়েছে।
জীববিজ্ঞানীয় দিক দিয়ে এন্ড্রোজেনের প্রধান কাজ হল এন্ড্রোজেন রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয়ে এদের সচল করা। এতেই এন্ড্রোজেন হরমোনগুলো প্রাণীদেহের কাজে ব্যবহার হতে পারে। স্তন্যপায়ী প্রাণীর বৃদ্ধিকালীন সময়ে গোনাড দুইটি অঙ্গে রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ থাকে। জরায়ু অথবা শুক্রাশয়ে।[৩] মানুষের ক্ষেত্রে, প্রায় ৪র্থ সপ্তাহের দিকে বৃক্কের বিকাশের কাছাকাছি গোনাডাল রুডিমেন্ট অভ্যন্তরীণ মেসোডার্মের মাঝে উদয় হয়। ৬ষ্ঠ সপ্তাহ নাগাদ, এপিথেলিয়াল কোষ শুক্রাশয় গঠন করে ও বীজ কোষ গোনাডে স্থানান্তরিত হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে ওয়াই ক্রোমোজোম আরো বিশেষায়িত করে বললে এসআরওয়াই পুরুষের বৃদ্ধির ফিনোটাইপ রক্ষণাবেক্ষণ করে। যদি শুক্রাশয় খুব বেশি বা খুব কম পরিমাণ এস্ট্রোজেন হরমোনের সংস্পর্শে আসে, তবে শুক্রাণু উৎপাদন এমন পর্যায়ে ব্যহত হতে পারে যে পুরুষ প্রাণীটি অনুর্বর হয়ে যেতে পারে।[৪] সাধারণত পুরুষদের কঙ্কালীয় পেশীকোষ নারীদেহের চেয়ে তুলনামূলক বেশি। এন্ড্রোজেন এই সমস্ত পেশির বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এন্ড্রোজেনের প্রভাবে পুরুষদের পেশী বৃহাদাকার লাভ করে।[৫] মস্তিষ্কের এন্ড্রোজেনের প্রভাব পর্যবেক্ষিত হয়েছে।দেখা গেছে যে, ইঁদুর ও প্রাইমেট বর্গীয় প্রাণীর মস্তিষ্কের গঠনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম এই হরমোন।[৬] যার ফলে, প্রাণীদের মধ্যে যৌন পরিচয়ের ভিন্নতা দেখতে পাওয়া যায়। একাধিক গবেষণায় এন্ড্রোজেন একাই মস্তিষ্কে পরিবর্তন আনতে সক্ষম বলে প্রমাণিত হয়েছে।[৭]
ক্লোরেস্টরল থেকে সংশ্লেষিত হয়ে এন্ড্রোজেন মূলতঃ গোনাড তথা শুক্রাশয় বা জরায়ুতে উৎপন্ন হয়। এছাড়াও এড্রেনাল গ্রন্থিতেও এন্ড্রোজেন উৎপন্ন হয়।
এন্ড্রোজেনের বিপাক ঘটে যকৃতে।