আজারবাইজান |
ইন্দোনেশিয়া |
---|
আজারবাইজান-ইন্দোনেশিয়া সম্পর্ক, আজারবাইজান ও ইরান এর এর মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বৈদেশিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ইন্দোনেশিয়া এর রাজধানী জাকার্তাতে আজারবাইজানের দূতাবাস রয়েছে, অন্যদিকে আজারবাইজান এর রাজধানী বাকুতে ইন্দোনেশিয়ার একটি দূতাবাস রয়েছে। ১৯৯২ সালে দেশদুটির মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] নাগোর্নো-কারাবাখ দ্বন্দ্ব বিষয়ে আজারবাইজানের অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনায়, ইন্দোনেশিয়ার সমর্থনের জন্য আজারবাইজান ইন্দোনেশিয়াকে ধন্যবাদ জানায়।[২] উভয় দেশই অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) ও জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এর সদস্য। এবং তারা নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক এবং অন্যান্য সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য এই দুটি সংস্থাকে ব্যবহার করেছে। বর্তমানে আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিক একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে।
আজারবাইজান পূর্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে, যে সকল রাষ্ট্র গঠিত হয়, তার একটি হল আজারবাইজান। ১৯৯১ সালের ২৮ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়া আজারবাইজান প্রজাতন্ত্র এর স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। এরও প্রায় ১ বছর পর, ১৯৯২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর, আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়া এর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। যদিও, কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও, ২০০৬ সাল পর্যন্ত, ইন্দোনেশিয়ায় আজারবাইজানের বা আজারবাইজানে ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাস ছিল না। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি, জাকার্তায় আজারবাইজানের দূতাবাস স্থাপিত হয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোন দেশে, এটিই ছিল আজারবাইজানের প্রথম দূতাবাস।[১] ইন্দোনেশিয়াও পরবর্তীতে, আজারবাইজানে নিজেদের দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করে। ২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর, আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ইন্দোনেশিয়ার এই দূতাবাস স্থাপিত হয়।[৩]
আজারবাইজান ও ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য প্রধানত, শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রেই রয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে থাকলেও, শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রেই দেশ দুটির মধ্যে মধ্যে বাণিজ্য সবচেয়ে বৃহৎ। সৌদি আরব এর পর, আজারবাইজানই ছিল ইন্দোনেশিয়ায় অপরিশোধিত তেলের বৃহৎ সরবরাহকারী। ২০০৭ সালে আজারবাইজান এবং ইন্দোনেশিয়া এর মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক ছিল ১০১.১০ মিলিয়ন (প্রায় ১০ কোটি) মার্কিন ডলার এর। পরবর্তীতে ২০১১ সালে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ১.৭৬ বিলিয়ন (১৭৬ কোটি) মার্কিন ডলারে।[৪] তবে এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। যেখানে ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য ঘাটতি অতি মাত্রায় বেশি। আর এই বাণিজ্য ঘাটতির কারণ হল, ইন্দোনেশিয়ায়, আজারবাইজানের তেল রপ্তানি। এই দুই দেশের মধ্যকার প্রধান বাণিজ্য পণ্যও হল অপরিশোধিত তেল।
২০১০ সালে আজারবাইজান ইউনিভার্সিটি অব ল্যাঙ্গুয়েজেস (এইউএল), সেন্টার অব ইন্দোনেশিয়ান স্টাডিজ চালু করে। এই প্রতিষ্ঠানটি ইন্দোনেশীয় ভাষা ও ইন্দোনেশীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে আজারবাইজানের ছাত্রছাত্রীদের অবহিত করা এবং সচেতন করার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে, এই প্রতিষ্ঠানটি, ইন্দোনেশীয় দূতাবাসের সহায়তায়, রাজধানী শহর বাকুতে বাটিক বিষয়ক কর্মশালা এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করে। জাভানীয় বাটিক নকশাকারী যোগ্যকর্তা এই আয়োজনের প্রধান বক্তা ছিলেন। দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ানোর লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল।[৫]