আমিনদিভি আমিনীদ্বীপ അമിനിദ്വീപ് | |
---|---|
দ্বীপপুঞ্জ | |
রাষ্ট্র | ভারত |
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | লাক্ষাদ্বীপ |
জেলা | লাক্ষাদ্বীপ |
আয়তন | |
• মোট | ৯.২৬ বর্গকিমি (৩.৫৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৯,৬২৯ |
• জনঘনত্ব | ২,১০০/বর্গকিমি (৫,৫০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | মালয়ালম |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন[১] | ৬৮২ ৫৫২, ৫৫৪, ৫৫৫, ৫৫৬, ৫৫৮ |
যানবাহন নিবন্ধন | LD (এলডি) |
আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জ ভারতের লাক্ষাদ্বীপ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অবস্থিত তিনটি শ্রেণীর দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে উর্বোত্তরের শ্রেণী৷ লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের সহিত আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জ মোটামুটিভাবে ১১তম উত্তর অক্ষরেখা দ্বারা পৃথকীকৃত৷ [২] এই দ্বীপরাশির মোট ভূমির ক্ষেত্রফল ৯.২৬ বর্গ কিলোমিটার৷
লাক্ষাদ্বীপ নামে পরিচিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি পূর্বে লাক্ষা, মিনিকয় ও আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জনামে পরিচিত ছিল,[৩] তবে ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় আইনসভায় পেশ করা একটি অ্যাক্ট অনুসারে এটির নাম পরিবর্তন করে লাক্ষাদ্বীপ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।[৪] আমিনদিভি শ্রেণীটি এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একটি তালুক গঠন করে৷[৫] এই শ্রেণীতে অবস্থিত আমিনি, কিলতান, চেতলাত, কাদমাত এবং বিত্রা হল জনবসতিযুক্ত দ্বীপ৷ ২০০১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে এই দ্বীপের জনসংখ্যা ছিলো ১৮,৮৭৬ জন৷ দ্বীপবাসীদের মূল ধর্ম ইসলাম৷ [৬]
আমিনদিভি ৬ই মে ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে ২৪ ঘণ্টায় (দৈনিক) ভারতের সর্বাধিক ১,১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিভুক্ত করে৷
আমিনদিভিতে রয়েছে ভূদ্বীপ সহ একাধিক প্রবালদ্বীপ, তিনটি প্রবাল প্রাচীর বা উচ্চ উলরেখা সম্পন্ন বালুকাময় ঊষর প্রবালদ্বীপ এবং চারটি সমুদ্রগর্ভস্থ উচ্চভূমি৷ [৭] এছাড়া পিট্টি দ্বীপিকার উত্তর-পশ্চিমে ১১°০৬′ উত্তর ৭২°৪৫′ পূর্ব / ১১.১০০° উত্তর ৭২.৭৫০° পূর্ব স্থানাঙ্কে রয়েছে আমিনিদ্বীপ, যার নামে এই দ্বীপমালার নাম৷
আমিনদিভি (১৯৮১–২০১০, ১৯০১–২০১২)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) | ৩৬.৭ (৯৮.১) |
৩৫.৭ (৯৬.৩) |
৩৭.২ (৯৯.০) |
৩৭.৭ (৯৯.৯) |
৩৭.৫ (৯৯.৫) |
৩৬.২ (৯৭.২) |
৩৩.৩ (৯১.৯) |
৩৪.৪ (৯৩.৯) |
৩৩.৯ (৯৩.০) |
৩৬.৪ (৯৭.৫) |
৩৫.০ (৯৫.০) |
৩৫.১ (৯৫.২) |
৩৭.৭ (৯৯.৯) |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ৩১.৮ (৮৯.২) |
৩২.৪ (৯০.৩) |
৩৩.০ (৯১.৪) |
৩৩.৮ (৯২.৮) |
৩৩.৫ (৯২.৩) |
৩০.৫ (৮৬.৯) |
২৯.৮ (৮৫.৬) |
২৯.৭ (৮৫.৫) |
৩০.৩ (৮৬.৫) |
৩০.৯ (৮৭.৬) |
৩১.৫ (৮৮.৭) |
৩১.৭ (৮৯.১) |
৩১.৬ (৮৮.৯) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ২৩.৮ (৭৪.৮) |
২৪.৫ (৭৬.১) |
২৫.৫ (৭৭.৯) |
২৬.৭ (৮০.১) |
২৬.৯ (৮০.৪) |
২৫.৭ (৭৮.৩) |
২৫.৪ (৭৭.৭) |
২৫.৩ (৭৭.৫) |
২৫.৩ (৭৭.৫) |
২৫.১ (৭৭.২) |
২৪.৬ (৭৬.৩) |
২৩.৮ (৭৪.৮) |
২৫.২ (৭৭.৪) |
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) | ১৮.৯ (৬৬.০) |
১৯.৪ (৬৬.৯) |
২০.০ (৬৮.০) |
২০.০ (৬৮.০) |
১৬.৬ (৬১.৯) |
২১.১ (৭০.০) |
২১.০ (৬৯.৮) |
২০.৯ (৬৯.৬) |
২১.৩ (৭০.৩) |
১৯.৭ (৬৭.৫) |
১৮.৩ (৬৪.৯) |
১৮.৯ (৬৬.০) |
১৮.৩ (৬৪.৯) |
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ১৫.৯ (০.৬৩) |
১.৬ (০.০৬) |
৩.২ (০.১৩) |
১০.০ (০.৩৯) |
১৪৭.৭ (৫.৮১) |
৩৭৩.৫ (১৪.৭০) |
৩৩৬.০ (১৩.২৩) |
২৩১.২ (৯.১০) |
১৮৭.২ (৭.৩৭) |
১৪৬.০ (৫.৭৫) |
৯০.৫ (৩.৫৬) |
৩১.৩ (১.২৩) |
১,৫৭৪.৩ (৬১.৯৮) |
বৃষ্টিবহুল দিনগুলির গড় | ০.৬ | ০.১ | ০.২ | ০.৮ | ৫.৮ | ১৬.৮ | ১৬.১ | ১৩.৩ | ১০.৯ | ৮.৫ | ৫.১ | ২.২ | ৮০.২ |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) (১৭:৩০ ভারতীয় প্রমাণ সময়) | ৬৮ | ৬৭ | ৬৮ | ৬৮ | ৭২ | ৮৩ | ৮৫ | ৮৪ | ৮১ | ৭৭ | ৭৪ | ৭০ | ৭৫ |
উৎস: ভারতীয় মৌসম ভবন[৮][৯] |
লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের মতোই আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জও বহুপূর্ব থেকেই জনবসতিপূর্ণ ছিলো৷ প্রাথমিকভাবে নিকটবর্তী কেরালা থেকে এবং পরবর্তীকালে আরব থেকে আসা ধর্মপ্রচারক ও বণিকরা এখানে বসতি স্থাপন করেন৷ ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দের আশেপাশে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা দ্বীপপুঞ্জ পরিদর্শনে আসেন। ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে লাক্ষা মিনিকয় আমিনদিভি এই তিন শ্রেণীর দ্বীপপুঞ্জের সমস্ত অধিবাসী পর্তুগিজ আধিপত্য থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য আরক্কাল সাম্রাজ্যের প্রতি আনুগত্য দেখায় ও তাদের জায়গীর-এ পরিণত হয়। [১০]
আরো পরে অষ্টাদশ শতাব্দী শুরুর দিকে আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারীদের উপর ব্যবসায়িক স্বার্থে জোর পূর্বক নারকেলের ছোবড়া থেকে দড়ি উৎপাদন শিল্প চাপিয়ে দেওয়া হয়। [১১] এর বিদ্রোহ করে উত্তর দিকের দ্বীপপুঞ্জ ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের রাজা টিপু সুলতানের শরণাপন্ন হয়। আবার দক্ষিণ দিকের দ্বীপপুঞ্জ পূর্বের মতোই কণ্ণনূর তথা আরক্কালের অনুগত রয়ে যায় যা পরবর্তীকালে কণ্ণনূর দ্বীপপুঞ্জ নামে পরিচিত হয়। [১২]
১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে টিপু সুলতানের পরাজয় হলে ফলস্বরূপ ব্রিটিল বাহিনী শ্রীরঙ্গপত্তমের দখলের মাধ্যমে আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে। ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে আমিনদিভি শ্রেণীর দ্বীপপুঞ্জকে ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীর দক্ষিণ কানাড়া জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। [১৩][১৪] এরপর থেকে এই দ্বীপপুঞ্জ দক্ষিণ কানাড়া দ্বীপপুঞ্জ নামে পরিচিতি পায়।[১৫]