আমেরিকান সাইকো | |
---|---|
পরিচালক | মেরি হ্যারন |
প্রযোজক |
|
চিত্রনাট্যকার |
|
উৎস | ব্রেট এস্টন এলিস কর্তৃক আমেরিকান সাইকো |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | জন ক্যাল |
চিত্রগ্রাহক | আন্দ্রজেয সেকুলা |
সম্পাদক | অ্যান্ড্রু মারকাস |
প্রযোজনা কোম্পানি |
|
পরিবেশক | লায়ন্স গেট ফিল্মস[১][২] |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১০২ মিনিট[৩] |
দেশ | |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $৭ মিলিয়ন[৪] |
আয় | $৩৪.৩ মিলিয়ন[৪] |
আমেরিকান সাইকো হলো ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যঙ্গাত্মক লোমহর্ষক ধর্মী একটি মার্কিন চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন ম্যারি হ্যারন যিনি গুইনেভরে টার্নার এর সাথে মিলে এটির চিত্রনাট্যও লিখেছেন। ব্রেট এস্টন এলিস এর ১৯৯১ এর একই নামের উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে এটি বানানো হয়েছে, এতে প্যাট্রিক বেইটম্যান এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ক্রিশ্চিয়ান বেল, একজন নিউ ইয়র্ক সিটির ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার যে একজন ধারাবাহিক খুনি হিসেবে দ্বৈত জীবনযাপন করছে। উইলেম ডাফো, জ্যারেড লেটো, জশ লুকাস, ছোলে সেভিগনি, সামান্থা ম্যাথিস, কারা সেইমর, জাস্টিন থিরক্স এবং রিজ উইদারস্পুন কে পার্শ্ব চরিত্রে দেখা যায়। চলচ্চিত্রটি ১৯৮০'র দশকের ইউপ্পি সংস্কৃতি এবং ভোগবাদকে ব্যঙ্গ করার জন্য লোমহর্ষকতা এবং তিক্ত হাস্যরসাত্মক সৃষ্টিকর্মকে মিশ্রিত করেছে, যার উদাহরণ বেইটম্যান এর মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে।
এলিস তার বিতর্কিত উপন্যাসটিকে চিত্রায়ণ করার অযোগ্য বিবেচনা করেছিলেন, কিন্তু প্রযোজক এডওয়ার্ড আর. প্রেসম্যান এটি বানাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন এবং ১৯৯২ সালে তিনি চলচ্চিত্রটির সত্ত্বাধিকার কিনে নেয়। ১৯৯৬ সালে হ্যারন এবং টার্নার চিত্রনাট্য লেখা শুরু করার আগে স্টুয়ার্ট গর্ডন, ডেভিড ক্রোনেনবার্গ এবং রব ওয়েইস চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করার কথা বিবেচনা করেছিলেন। তারা ১৯৮০'র দশকের সময়কালের একটি চলচ্চিত্র তৈরি করতে চেয়েছিল যা উপন্যাসের বিদ্রুপাত্মক ভঙ্গির উপর জোর দেয়। প্রি-প্রোডাকশনের সময়টা ছিল গোলমেলে; হ্যারন বেইটম্যানের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বেলকে বেছে নিয়েছিলো, কিন্তু পরিবেশক লায়ন্স গেট ফিল্মস লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওকে এই চরিত্রে চাওয়ায়, হ্যারনকে বরখাস্ত করা হয় এবং অলিভার স্টোনকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। মত পার্থক্যের কারণে স্টোন এবং ডিক্যাপ্রিও চলে যাওয়ার পর, হ্যারনকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয় এবং বেলকে এই চরিত্রে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। মূল চিত্রায়ণ ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে টরন্টো এবং নিউ ইয়র্ক সিটিতে শুরু হয়েছিল।
আমেরিকান সাইকো ২১শে জানুয়ারি, ২০০০ এ সানডেন্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রিমিয়ার হয় এবং ১৪ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থিয়েটারে মুক্তি পায়। বেলের অভিনয় এবং চিত্রনাট্যের প্রশংসা সহ চলচ্চিত্রটি বেশিরভাগ ইতিবাচক পর্যালোচনা পেয়েছে এবং $৭ মিলিয়ন বাজেটে নির্মিত চলচ্চিত্রটি $৩৪ মিলিয়নের বেশি আয় করে। তখন থেকেই এটি বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং সমসাময়িক মিম সংস্কৃতিতে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি গড়ে তোলে।[৫] একটি ডাইরেক্ট-টু-ভিডিও সিক্যুয়েল, আমেরিকান সাইকো ২, ২০০২ সালে মুক্তি পায়, যদিও এটির মূল চলচ্চিত্রের সাথে খুব কম সম্পর্কই ছিল।
প্যাট্রিক বেইটম্যান একজন সুদর্শন, নিজের প্রতি যত্নশীল, আত্মপ্রেমী যুবক। সে তার বাবার "পিয়ার্সে এবং পিয়ার্সে" কোম্পানি তে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছে। কাজের চেয়ে সে নিজেকে জাহির করতেই বেশি পছন্দ করে। বন্ধুদের আড্ডা থেকে শুরু করে বিজনেস কার্ড সবক্ষেত্রেই সে নিজেকে অন্যের চেয়ে বড় দেখাতে চায়। দারুণ আড্ডাবাজ হলেও সে তার বন্ধুদের হিংসা করে কোনো কারণ ছাড়াই। বাইরে থেকে মোটামুটি স্বাভাবিক মনে হলেও তার একটি অন্যরূপও রয়েছে। সেটি হলো ধারাবাহিক খুনি। কোনো কারণ ছাড়া কিংবা প্রতিহিংসাবশত সে যাকে তাকে হত্যা করে। সহকর্মী, গৃহহীন ব্যক্তি কিংবা পতিতা কাউকে হত্যা করতেই দ্বিধাবোধ করে না সে।
হ্যারন বেইটম্যানের সমকামভীত হিসাবে চিত্রিত করার জন্য তদন্তের মুখোমুখি হওয়ার কথা স্মরণ করেন, এই সমালোচনা তার কাছে অদ্ভুত বলে মনে হয়েছিল, কারণ বেইটম্যানের হত্যার বিষয়ে কোন আপত্তি উত্থাপিত হয়নি। তিনি বেইটম্যানের মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য অনুরোধও পেয়েছিলেন, কিন্তু বলেছিলেন যে "একটি খুব স্পষ্ট মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা থাকা আমার কাছে খুব আগ্রহের বিষয় ছিল না" যেহেতু তিনি ধারণাটিকে সাধারণ, অগভীর এবং অবাস্তব বলে মনে করেছিলেন।[৬] হ্যারন বেইটম্যানের পরিবার এবং পিছনের গল্প দেখানোর পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেন; কারন তিনি অনুভব করেছিলেন যে এটি অপ্রয়োজনীয় কেননা বেইটম্যান কেবল "একজন দানব"।[৬]
মূল চিত্রায়ণ ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৯ সালে শুরু হয়[৭] এবং সাত সপ্তাহ স্থায়ী হয়েছিল, যার বাজেট ছিল $৭ মিলিয়ন।
আমেরিকান সাইকো ২০০০ সালে সানডেন্স চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম প্রদর্শিত হয়।[৮] আমেরিকান মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন (এমপিএএ) প্রাথমিকভাবে চলচ্চিত্রটি একটি এনসি-১৭ রেটিং দিয়েছিল একটি দৃশ্যের জন্য যেখানে বেইটম্যানকে দুইজন পতিতার সাথে ত্রয়ী করতে দেখা যায়। প্রযোজকরা চলচ্চিত্রটির একটি আর-রেটেড সংস্করণ পেতে প্রায় ১৮ সেকেন্ডের ফুটেজ কেটে ফেলেন।[৯][১০]
২১শে জুলাই, ২০০৫ সালে একটি বিশেষ সংস্করণের ডিভিডি প্রকাশিত হয়৷[১১]
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর থেকে, চলচ্চিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনাগুলিতে ইতিবাচক পর্যালোচনা পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস যারা এটিকে "নীচ এবং নিষ্ফলা লোমহর্ষক রম্য ধ্রুপদী" বলে অভিহিত করেছে।[১২] রোটেন টমেটোস -এ, চলচ্চিত্রটি ৬৮% সমর্থনকারী রেটিং পেয়েছে ১৫৪ টি পর্যালোচনার উপর ভিত্তি করে, যার গড় রেটিং ৬.২/১০।[১৩] মেটাক্রিটিকে ৩৫ জন সমালোচকের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটি ১০০ এর মধ্যে ৬৪ পেয়েছে। যার মানে "সাধারণত ইতিবাচক সাড়া"।[১৪] দর্শক পোল সিনেমাস্কোরে এ+ থেকে এফ গ্রেডের মধ্যে চলচ্চিত্রটির গড় গ্রেড "ডি"।[১৫]
২০০০'এর মাঝামাঝি সময়ে চলচ্চিত্রটি বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছে বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে,[১৬][১৭][১৮][১৯] যেটি ২০১০'এর দিকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে বৃদ্ধি পায়।[২০]
এই চলচ্চিত্রের প্রভাব কানইয়ে ওয়েস্ট এর মিউজিক ভিডিও "লাভ লকডাউন"[২১] এবং মারুন ৫ এর মিউজিক ভিডিও "এনিমেলস" এ দেখা যায়।[২২]
চলচ্চিত্রটি প্রায়শই মিমের একটি বিষয় এবং কেউ কেউ এর বিষয়বস্তু এবং ব্যঙ্গাত্মক প্রকৃতির কারণে এটিকে প্রাসঙ্গিক বলে মনে করে; অন্যদিকে, প্যাট্রিক বেইটম্যানের চরিত্রটি "সিগমা পুরুষ" ধারণার প্রতি আকৃষ্ট পুরুষদের মধ্যে বিরল আরাধনার জন্ম দেয় এবং বেইটম্যানের দ্বারা অনুপ্রাণিত "কর্ম সংস্কৃতি"র পুঁজিবাদী আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে, যদিও চলচ্চিত্রটি পুঁজিবাদ এবং সমাজে পুরুষদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করে।[৫][২৩][২৪][২৫]
The $10 million pic begins production Sunday in Toronto. There will also be some shooting in New York.