আলবের্তিনা বের্কেনব্রোক (১১ এপ্রিল ১৯১৯ - ১৫ জুন ১৯৩১) ব্রাজিলের একজন ব্রাজিলিয়ান রোমান ক্যাথলিক ছিলেন, যিনি ১৯৩১ সালে তিনি তার আক্রমণকারীর ধর্ষণের চেষ্টা প্রত্যাখ্যান করার পর "ডেফেনসাম ক্যাস্টিটাটিসে" (আত্মসম্মান রক্ষা করতে গিয়ে) নিহত হন।[১] বের্কেনব্রোক জার্মান বংশোদ্ভূত ছিলেন এবং তিনি নিজের খামারে কাজ করতেন। এছাড়াও তিনি সহকর্মীদের ক্যাটেকিজম (প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শিক্ষাদান) শেখান এবং ঘন ঘন 'মাস' পরিষেবায় অংশগ্রহণ করতেন।[২]
২০০৭ সালের ২০শে অক্টোবর তারিখে অনুষ্ঠিত বিটিফিকেশনের মাধ্যমে বার্কেনব্রোকের বিটিফিকেশন করা হয়।[৩]
আলবের্তিনা বের্কেনব্রোক ১৯১৯ সালের ১১ ই এপ্রিল ব্রাজিলের ইমারুইতে ধর্মপ্রাণ কৃষক জোহান হারমান এবং এলিজাবেথ শ্মোলারের নয়সন্তানের মধ্যে একজন হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন।[১][৪] তার দাদু-ঠাকুমা শোপেনজেন থেকে ব্রাজিলে অভিবাসিত হন এবং তাদের তিন সন্তানকে তাদের সাথে নিয়ে আসেন যার মধ্যে একজন ছিলেন জোহান হারম্যান।[৪]
বার্কেনব্রোক ১৯১৯ সালের ২৫ শে মে বাপ্তিস্ম নেন এবং ৯ মার্চ ১৯২৫ সালে তার নিশ্চিতকরণ পান। ১৯২৮ সালের ১৬ ই আগস্ট তিনি তার প্রথম কমিউনিয়ন হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতাকে তিনি নিজেই তার পুরো জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।[১] ঈশ্বরের মা এবং সাও লুইসের পৃষ্ঠপোষক সাধু সেন্ট অ্যালয়সিয়াস গ্যানজাগার প্রতিও বার্কেনব্রোকের বিশেষ ভক্তি গড়ে উঠেছিল। তার শিক্ষকরা তার নৈতিকতা এবং তার উদার প্রকৃতির প্রশংসা করেছিলেন এবং যারা তাকে উত্ত্যক্ত করেছিল বা তার ভাইদের মতো তাকে কটূক্তি করেছিল তাদের বিরুদ্ধে তিনি কখনও প্রতিশোধ নেননি।[২][৪][৩]
মানেকো পালহোকা ১৯৩১ সালে ১৫ জুন তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। সে তার বাবার জন্য কাজ করত। সেদিন বার্কেনব্রোক একটি পালিয়ে যাওয়া ষাঁড়ের সন্ধান করেছিলেন। খুঁজতে খুঁজতে মানেকোর কাছে আসেন। সেতিনি একটি গাড়িতে মটরশুটি ভরছিল। আলবের্তিনা তাকে গরুটির কথা জিজ্ঞাসা করেন। মানেকো তাকে একটি জঙ্গল এলাকার দিকে, ভুল অভিমুখে, ইঙ্গিত করেছিল যাতে সে তাকে আক্রমণ করতে পারে। বার্কেনব্রোক তার নির্দেশ অনুসরণ করেন এবং ডালপালার আওয়াজ শুনে মনে করেন যে এটি সেই ষাঁড়। তারপর পিছনে মানেকোকে দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।[১][৪] বার্কেনব্রোক পাল্টা লড়াই করার চেষ্টা করেছিলেন। তার আক্রমণকারী বুঝতে পেরেছিল যে সে ব্যর্থ হবে এবং তিনি তাকে ধরিয়ে দেবেন। তাই সে তার চুল ধরে ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে ফেলে। সে নিজের অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং জোয়াও ক্যান্ডিনহোর উপর দোষারোপ করে এবং তারপরে পালিয়ে যায় কিন্তু লোকেরা তাকে সন্দেহ করার পরে শীঘ্রই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়; যতবার মানেকোকে মেয়েটির মৃতদেহের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ততবার বার্কেনব্রোকের ঘাড় থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে এবং চিহ্ন হিসাবে সে অপরাধী হয়।[১] সে তার অপরাধের পাশাপাশি আগের দুটি হত্যার কথা স্বীকার করেছিল। তাকে বিচার করা হয়েছিল এবং তাকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কারাগারে সে অন্য বন্দীদের কাছে স্বীকার করেছিল যে সে মেয়েটিকে খুন করেছে কারণ তিনি তার ধর্ষণের চেষ্টাকে প্রতিহত করেছিলেন। ২০০২ সালে বার্কেনব্রোকেরর দেহাবশেষ স্থানান্তর করা হয়।[৩]
বিটিফিকেশন বা "স্বর্গসুখভোগ" প্রক্রিয়াটি তুবারাওতে একটি তথ্যমূলক প্রক্রিয়ায় খোলা হয়েছিল যা ১৯৫৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০০১ সালের পরে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল; সাধুদের কারণের জন্য মণ্ডলী ২০০২ সালের ১৮ জানুয়ারি রোমে এই প্রক্রিয়াকে বৈধতা দেয়। ২০০১ সালের ২ অক্টোবর পোপ দ্বিতীয় জন পলের অধীনে আনুষ্ঠানিক পর্যায়ে এই কারণ শুরু হয় এবং বার্কেনব্রোককে ঈশ্বরের সেবক হিসেবে শিরোনাম দেওয়া হয়। সি.সি.এস মূল্যায়নের জন্য ২০০২ সালে পোস্টুলেশন থেকে অফিসিয়াল পজিটিও ডসিয়ার পেয়েছিল। ধর্মতত্ত্ববিদরা ২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সি.সি.এস-এর মতো ২০০৬ সালের ২১ নভেম্বর এই কারণঅনুমোদন করেন এবং পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট অনুমোদন করেন যে ১৬ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে বের্কেনব্রোককে "ডিফেনসাম ক্যাস্টিটাটিসে" হত্যা করা হয় এবং এভাবে তিনি তার বিটিফিকেশন অনুমোদন করেন।
কার্ডিনাল জোসে সারাইভা মার্টিন্স ২০ অক্টোবর ২০০৭ সালে ব্রাজিলে পোপের পক্ষে বিটিফিকেশনের সভাপতিত্ব করেন।
এই কাজের জন্য বর্তমান পোস্টুলেটর হলেন ডঃ পাওলো ভিলোটা।