আল্লাহর ৯৯টি নাম (আরবি: أسماء الله الحسنى) হলো ইসলাম ধর্ম মতে কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত আল্লাহ্র গুণবাচক নামের একটি তালিকা বা সংকলন।[১] ইসলাম ধর্ম মতে বুনিয়াদি নাম বা ভিত্তি নাম একটিই। আর তা হলো আল্লাহ্, কিন্তু তার গুণবাচক নাম অনেকগুলো।
বিভিন্ন হাদীস অনুসারে আল্লাহ'র ৯৯টি নামের একটি তালিকা আছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো সুনির্দিষ্ট ধারাবাহিক ক্রম নেই। তাই সম্মিলিত মতৈক্যের ভিত্তিতে কোনো সুনির্দিষ্ট তালিকাও নেই। তাছাড়া কুরআন এবং হাদিসের বর্ণনা অনুসারে আল্লাহ্'র সর্বমোট নামের সংখ্যা ৯৯-এর অধিক, প্রায় ৪,০০০। অধিকন্তু আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ কর্তৃক বর্ণিত একটা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ্ তার কিছু নাম মানবজাতির অজ্ঞাত রেখেছেন।[২]
এই নামসমূহের ব্যাপারে কুরআনের বর্ণনায় আল্লাহ তাআলার উদ্ধৃতি এসেছে
“ | আল্লাহ বলে আহ্বান কর কিংবা রাহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। --- সূরা বনী-ইসরাঈল আয়াত ১১০। | ” |
অনেকগুলো হাদিস দ্বারাই প্রমাণিত যে,[৩]নবী মুহাম্মাদ আল্লাহর অনেকগুলো নাম-এর উল্লেখ করেছেন।
উদাহরণস্বরূপ একটি বিশুদ্ধ হাদিসে আবু হোরায়রা মুহাম্মাদ এর একটি উক্তি বর্ণনা করেন,
“ | "আল্লাহ তাআলার ৯৯টি নাম আছে; সেগুলো মুখস্থকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বিজোড় (অর্থাৎ, তিনি একক, এবং এক একটি বিজোড় সংখ্যা), তিনি বিজোড় সংখ্যাকে ভালোবাসেন। আর ইবনে উমর উনার বর্ণনায় এসেছে যে, (শব্দগুলো হলো) "যে ব্যক্তি সেগুলোকে পড়বে"।[৪] | ” |
কুরআনের বর্ণনায় আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহকে "সুন্দরতম নামসমূহ" বলে উল্লেখ করা হয়েছে। (নিম্ন-বর্ণিত দেখুন সূরা আল আরাফ ৭:১৮০, বনী-ইসরাঈল ১৭:১১০, ত্বোয়া-হা ২০:৮, আল হাশ্র ৫৯:২৪)।
আল্লাহর কিছু নাম কুরআনেও উল্লেখ করা হয়েছে এবং বিস্তারিতভাবে হাদীসে ৯৯ টি নামের একটি তালিকা পাওয়া যায়, কিন্তু সেটির সনদ দূর্বল। এছাড়াও নাসিরুদ্দিন আলবানী সুনানে ইবনে মাজাহ'তে উল্লেখিত হাদীসটির ক্ষেত্রে বলেছেন যে, "নাম গণনা ব্যতীত সহীহ"।[৫] আর জামি তিরমিজিতে হাদীসের শেষে ইমাম তিরমিজিও মন্তব্য করেছেন।[৬]
# | আরবীতে | উচ্চারণ | বর্ণান্তর | অনুবাদ (আলোচ্য বিষয়বস্তুর উপর অর্থ নির্ভরশীল) | ক্বুরআন-কারীমে এই নামের ব্যবহার | ||
---|---|---|---|---|---|---|---|
الرحمن | আর রাহমান | পরম দয়ালু | সূরা তাওবাহ ব্যতীত প্রত্যেক সূরার শুরুতে, সূরা আর-রহমানে(সূরা নং:৫৫)[কুরআন ৫৫:১] অনেকবার ব্যবহৃত। | ||||
الرحيم | আর-রাহ়ীম | অতিশয়-মেহেরবান | সূরা তাওবাহ ব্যতীত প্রত্যেক সূরার শুরুতে, এবং আরও অসংখ্যবার ব্যবহৃত। | ||||
الملك | আল-মালিক | সর্বকর্তৃত্বময় | ৫৯:২৩, ২০:১১৪, ২৩:১১৬ | ||||
القدوس | আল-কুদ্দুস | নিষ্কলুষ, অতি পবিত্র | ৫৯:২৩, ৬২:১ | ||||
السلام | আস-সালাম | নিরাপত্তা-দানকারী, শান্তি-দানকারী | ৫৯:২৩ | ||||
المؤمن | আল-মু'মিন | নিরাপত্তা ও ঈমান দানকারী | ৫৯:২৩ | ||||
المهيمن | আল-মুহাইমিন | পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণকারী | ৫৯:২৩ | ||||
العزيز | আল-আ'জীজ | পরাক্রমশালী, অপরাজেয় | ৩:৬, ৪:১৫৮, ৯:৪০, ৪৮:৭, ৫৯:২৩ | ||||
الجبار | আল-জাব্বার | দুর্নিবার | ৫৯:২৩ | ||||
المتكبر | আল-মুতাকাব্বির | নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী | ৫৯:২৩ | ||||
الخالق | আল-খালিক্ব | সৃষ্টিকর্তা | ৬:১০২, ১৩:১৬, ৩৯:৬২, ৪০:৬২, ৫৯:২৪ | ||||
البارئ | আল-বারী | সঠিকভাবে সৃষ্টিকারী | ৫৯:২৪ | ||||
المصور | আল-মুছউউইর | আকৃতি-দানকারী | ৫৯:২৪ | ||||
الغفار | আল-গফ্ফার | পরম ক্ষমাশীল | ২০:৮২, ৩৮:৬৬, ৩৯:৫, ৪০:৪২, ৭১:১০ | ||||
القهار | আল-ক্বাহার | কঠোর | ১২:৩৯, ১৩:১৬, ১৪:৪৮, ৩৮:৬৫, ৩৯:৪, ৪০:১৬ | ||||
الوهاب | আল-ওয়াহ্হাব | সবকিছু দানকারী | ৩:৮, ৩৮:৯, ৩৮:৩৫ | ||||
الرزاق | আর-রজ্জাক্ব | রিযিকদাতা | ৫১:৫৮ | ||||
الفتاح | আল ফাত্তাহ | বিজয়দানকারী | ৩৪:২৬ | ||||
العليم | আল-আ'লীম | সর্বজ্ঞ | ২:১৫৮, ৩:৯২, ৪:৩৫, ২৪:৪১, ৩৩:৪০ | ||||
القابض | আল-ক্ববিদ্ব' | নিয়ন্ত্রণকারী, সরল পথ প্রদর্শনকারী | ২:২৪৫ | ||||
الباسط | আল-বাসিত | প্রশস্তকারী | ২:২৪৫ | ||||
الخافض | আল-খফিদ্বু | অবনতকারী (কাফির ও মুশরিকদের) | ৫৩:৬ | ||||
الرافع | আর-রফীই' | উন্নতকারী | ৫৮:১১, ৬:৮৩ | ||||
المعز | আল-মুই'জ্ব | সম্মান-দানকারী | ৩:২৬ | ||||
المذل | আল-মুদ্বি'ল্লু | (অবিশ্বাসীদের) বেইজ্জতকারী | ৩:২৬ | ||||
السميع | আস্-সামি' | সর্বশ্রোতা | ২:১২৭, ২:২৫৬, ৮:১৭, ৪৯:১ | ||||
البصير | আল-বাছীর | সর্ববিষয়-দর্শনকারী | ৪:৫৮, ১৭:১, ৪২:১১, ৪২:২৭ | ||||
الحكم | আল-হা'কাম | অটল বিচারক | ২২:৬৯ | ||||
العدل | আল-আ'দল | পরিপূর্ণ-ন্যায়বিচারক | ৬:১১৫ | ||||
اللطيف | আল-লাতীফ | সকল-গোপন-বিষয়ে-অবগত | ৬:১০৩, ২২:৬৩, ৩১:১৬, ৩৩:৩৪ | ||||
الخبير | আল-খ'বীর | সকল ব্যাপারে জ্ঞাত | ৬:১৮, ১৭:৩০, ৪৯:১৩, ৫৯:১৮ | ||||
الحليم | আল-হা'লীম | অত্যন্ত ধৈর্যশীল | ২:২৩৫, ১৭:৪৪, ২২:৫৯, ৩৫:৪১ | ||||
العظيم | আল-আ'জীম | সর্বোচ্চ-মর্যাদাশীল | ২:২৫৫, ৪২:৪, ৫৬:৯৬ | ||||
الغفور | আল-গফুর | পরম ক্ষমাশীল | ২:১৭৩, ৮:৬৯, ১৬:১১০, ৪১:৩২ | ||||
الشكور | আশ্-শাকুর | গুণগ্রাহী | ৩৫:৩০, ৩৫:৩৪, ৪২:২৩, ৬৪:১৭ | ||||
العلي | আল-আ'লিইউ | উচ্চ-মর্যাদাশীল | ৪:৩৪, ৩১:৩০, ৪২:৪, ৪২:৫১ | ||||
الكبير | আল-কাবিইর | সুমহান | ১৩:৯, ২২:৬২, ৩১:৩০ | ||||
الحفيظ | আল-হা'ফীজ | সংরক্ষণকারী | ১১:৫৭, ৩৪:২১, ৪২:৬ | ||||
المقيت | আল-মুক্বীত | সকলের জীবনোপকরণ-দানকারী | ৪:৮৫ | ||||
الحسيب | আল-হাসীব | হিসাব-গ্রহণকারী | ৪:৬, ৪:৮৬, ৩৩:৩৯ | ||||
الجليل | আল-জালীল | পরম মর্যাদার অধিকারী | ৫৫:২৭, ৩৯:১৪, ৭:১৪৩ | ||||
الكريم | আল-কারীম | সুমহান দাতা | ২৭:৪০, ৮২:৬ | ||||
الرقيب | আর-রক্বীব | তত্ত্বাবধায়ক | ৪:১, ৫:১১৭ | ||||
المجيب | আল-মুজীব | জবাব-দানকারী, কবুলকারী | ১১:৬১ | ||||
الواسع | আল-ওয়াসি' | সর্ব-ব্যাপী, সর্বত্র-বিরাজমান | ২:২৬৮, ৩:৭৩, ৫:৫৪ | ||||
الحكيم | আল-হাকীম | পরম-প্রজ্ঞাময় | ৩১:২৭, ৪৬:২, ৫৭:১, ৬৬:২ | ||||
الودود | আল-ওয়াদুদ | (বান্দাদের প্রতি) সদয় | ১১:৯০, ৮৫:১৪ | ||||
المجيد | আল-মাজীদ | সকল-মর্যাদার-অধিকারী | ১১:৭৩ | ||||
الباعث | আল-বাই'ছ' | পুনুরুজ্জীবিতকারী | ২২:৭ | ||||
الشهيد | আশ্-শাহীদ | সর্বজ্ঞ-স্বাক্ষী | ৪:১৬৬, ২২:১৭, ৪১:৫৩, ৪৮:২৮ | ||||
৫১ | الحق | আল-হা'ক্ব | পরম সত্য | ৬:৬২, ২২:৬, ২৩:১১৬, ২৪:২৫ | |||
৫২ | الوكيل | আল-ওয়াকিল | পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী | ৩:১৭৩, ৪:১৭১, ২৮:২৮, ৭৩:৯ | |||
৫৩ | القوي | আল-ক্বউইউ | পরম-শক্তির-অধিকারী | ২২:৪০, ২২:৭৪, ৪২:১৯, ৫৭:২৫ | |||
৫৪ | المتين | আল-মাতীন | সুদৃঢ় | ৫১:৫৮ | |||
৫৫ | الولي | আল-ওয়ালিইউ | অভিভাবক ও সাহায্যকারী | ৪:৪৫, ৭:১৯৬, ৪২:২৮, ৪৫:১৯ | |||
৫৬ | الحميد | আল-হা'মীদ | সকল প্রশংসার অধিকারী | ১৪:৮, ৩১:১২, ৩১:২৬, ৪১:৪২ | |||
৫৭ | المحصي | আল-মুহছী | সকল সৃষ্টির ব্যপারে অবগত | ৭২:২৮, ৭৮:২৯, ৮২:১০-১২ | |||
৫৮ | المبدئ | আল-মুব্দি' | প্রথমবার-সৃষ্টিকর্তা | ১০:৩৪, ২৭:৬৪, ২৯:১৯, ৮৫:১৩ | |||
৫৯ | المعيد | আল-মুঈ'দ | পুনরায়-সৃষ্টিকর্তা | ১০:৩৪, ২৭:৬৪, ২৯:১৯, ৮৫:১৩ | |||
৬০ | المحيي | আল-মুহ'য়ী | জীবন-দানকারী | ৭:১৫৮, ১৫:২৩, ৩০:৫০, ৫৭:২ | |||
৬১ | المميت | আল-মুমীত | মৃত্যু-দানকারী | ৩:১৫৬, ৭:১৫৮, ১৫:২৩, ৫৭:২ | |||
৬২ | الحي | আল-হাইয়্যু | চিরঞ্জীব | ২:২৫৫, ৩:২, ২৫:৫৮, ৪০:৬৫ | |||
৬৩ | القيوم | আল-ক্বাইয়্যুম | সমস্তকিছুর ধারক ও সংরক্ষণকারী | ২:২৫৫, ৩:২, ২০:১১১ | |||
৬৪ | الواجد | আল-ওয়াজিদ | অফুরন্ত ভান্ডারের অধিকারী | ৩৮:৪৪ | |||
৬৫ | الماجد | আল-মাজিদ | শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী | ৮৫:১৫, ১১:৭৩, | |||
৬৬ | الواحد | আল-ওয়াহি'দ | এক ও অদ্বিতীয় | ২:১৬৩, ৫:৭৩, ৯:৩১, ১৮:১১০ | |||
৬৭ | الاحد | আল আহাদ | এক | ১১২:১ | |||
৬৮ | الصمد | আছ্-ছমাদ | অমুখাপেক্ষী | ১১২:২ | |||
৬৯ | القادر | আল-ক্বদির | সর্বশক্তিমান | ৬:৬৫, ৩৬:৮১, ৪৬:৩৩, ৭৫:৪০ | |||
৭০ | المقتدر | আল-মুক্ব্তাদির | নিরঙ্কুশ-সিদ্বান্তের-অধিকারী | ১৮:৪৫, ৫৪:৪২, ৫৪:৫৫ | |||
৭১ | المقدم | আল-মুক্বদ্দিম | অগ্রসারক | ১৬:৬১, ১৭:৩৪, | |||
৭২ | المؤخر | আল-মুয়াক্খির | অবকাশ দানকারী | ৭১:৪ | |||
৭৩ | الأول | আল-আউয়াল | অনাদি | ৫৭:৩ | |||
الأخر | আল-আখির | অনন্ত, সর্বশেষ | ৫৭:৩ | ||||
৭৫ | الظاهر | আজ-জ'হির | সম্পূর্নরূপে-প্রকাশিত | ৫৭:৩ | |||
৭৬ | الباطن | আল-বাত্বিন | দৃষ্টি হতে অদৃশ্য | ৫৭:৩ | |||
৭৭ | الوالي | আল-ওয়ালি | সমস্ত-কিছুর-অভিভাবক | ১৩:১১, ২২:৭ | |||
৭৮ | المتعالي | আল-মুতাআ'লি | সৃষ্টির গুনাবলীর ঊর্ধ্বে | ১৩:৯ | |||
৭৯ | البر | আল-বার্ | পরম-উপকারী, অণুগ্রহশীল | ৫২:২৮ | |||
৮০ | التواب | আত্-তাওয়াব | তাওবার তাওফিক দানকারী এবং কবুলকারী | ২:১২৮, ৪:৬৪, ৪৯:১২, ১১০:৩ | |||
৮১ | المنتقم | আল-মুনতাক্বিম | প্রতিশোধ-গ্রহণকারী | ৩২:২২, ৪৩:৪১, ৪৪:১৬ | |||
العفو | আল-আ'ফঊ | পরম-উদার | ৪:৯৯, ৪:১৪৯, ২২:৬০ | ||||
৮৩ | الرؤوف | আর-রউফ | পরম-স্নেহশীল | ৩:৩০, ৯:১১৭, ৫৭:৯, ৫৯:১০ | |||
৮৪ | مالك الملك | মালিকুল-মুলক | সমগ্র জগতের বাদশাহ্ | ৩:২৬ | |||
৮৫ | ذو الجلال والإكرام | যুল-জালালি-ওয়াল-ইকরাম | মহিমান্বিত ও দয়াবান সত্তা | ৫৫:২৭, ৫৫:৭৮ | |||
৮৬ | المقسط | আল-মুক্ব্সিত | হকদারের হক-আদায়কারী | ৭:২৯, ৩:১৮ | |||
৮৭ | الجامع | আল-জামিই' | একত্রকারী, সমবেতকারী | ৩:৯ | |||
৮৮ | الغني | আল-গণিই' | অমুখাপেক্ষী ধনী | ৩:৯৭, ৩৯:৭, ৪৭:৩৮, ৫৭:২৪ | |||
৮৯ | المغني | আল-মুগণিই' | পরম-অভাবমোচনকারী | ৯:২৮ | |||
৯০ | المانع | আল-মানিই' | অকল্যাণরোধক | ৬৭:২১ | |||
الضار | আয্-যর | ক্ষতিসাধনকারী | ৬:১৭ | ||||
৯২ | النافع | আন্-নাফিই' | কল্যাণকারী | ৩০:৩৭ | |||
৯৩ | النور | আন্-নূর | পরম-আলো | ২৪:৩৫ | |||
৯৪ | الهادي | আল-হাদী | পথ-প্রদর্শক | ২২:৫৪ | |||
৯৫ | البديع | আল-বাদীই' | অতুলনীয় | ২:১১৭, ৬:১০১ | |||
৯৬ | الباقي | আল-বাক্বী | চিরস্থায়ী, অবিনশ্বর | ৫৫:২৭ | |||
৯৭ | الوارث | আল-ওয়ারিস' | উত্তরাধিকারী | ১৫:২৩, ৫৭:১০ | |||
৯৮ | الرشيد | আর-রাশীদ | সঠিক পথ-প্রদর্শক | ২:২৫৬, ৭২:১০ | |||
৯৯ | الصبور | আস-সবুর | অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী | ২:১৫৩, ৩:২০০, ১০৩:৩ |
বিভিন্ন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ একটি নাম রয়েছে। ইসলামিক পরিভাষায় একে ইসমে আজম (অর্থ: "সর্বশ্রেষ্ঠ নাম")[৭] বলা হয়। এবং কেউ যদি এই নামসমূহের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, সেটা তিনি (আল্লাহ) অবশ্যই কবুল করবেন।[৮]
বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাদীসসমূহ বর্ণিত হয়েছে। যেমন, এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মুহাম্মাদ এক ব্যক্তিকে দেখলেন সালাতে তাশাহহুদে সে এ বলে দুআ করছে:
“ | হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি -এ কথার উসীলায় যে, সকল প্রশংসা আপনার, আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি দানশীল, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, হে মহামহিম ও মহানুভব! হে চিরঞ্জীব ও সর্ব সত্তার ধারক!- আপনার কাছে জান্নাত চাইছি এবং মুক্তি চাইছি জাহান্নাম থেকে। | ” |
তখন নবী এই প্রার্থনা শুনে তার সাহাবীদের বললেন:
“ | তোমরা কি জানো, সে কি দিয়ে দুআ করেছে? তারা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, সে আল্লাহর মহান নাম দিয়ে দুআ করেছে। যে ব্যক্তি এ নামের মাধ্যমে দুআ করবে তার দুআ তিনি কবুল করবেন। (অন্য এক বর্ণনায় এসেছে যে, ইসমে আজম দিয়ে দুআ করেছে)[৯][১০][১১] | ” |
অপর এক হাদিসে তিনি বলেন:
“ | ইউনুস এর প্রার্থনা -যখন তিনি মাছের পেটে ছিলেন- তুমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই তুমি পবিত্র, মহান! আমি তো সীমালংঘনকারী। যে কোনো মুসলিম এ কথা দিয়ে প্রার্থনা করবে তার প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করবেন। [১২] | ” |
তবে হাদিসসমূহে সুনির্দিষ্ট করে কোন একটি নামের কথা উল্লেখ করা হয় নি, যার কারণে ঠিক কোন নামটি সেই ইসমে আজম, সেটা নিয়ে ইসলামী ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের ভিতরে ব্যাপক মতভেদ আছে। কারো কারো মতে, যেহেতু এই নামটি দুআ' কবুলের ব্যপারে খুবই শক্তিশালী (অর্থাৎ, ব্যক্তিবিশেষ অসৎ উদ্দেশ্যে সেটা ব্যবহার করতে পারে), তাই আল্লাহ তাআলা নিজে (এবং সেই অনুযায়ী মুহাম্মাদ ও এই নামটি জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ইসলামিক মতানুসারে, হুবহু এই নামগুলো দ্বারা কোনো ব্যক্তির নামকরণ করার অনুমতি নেই।[১৩] উদাহরণস্বরূপ: কারো নাম সরাসরি "আল-মালিক" রাখা যাবে না, বরং "মালিক" রাখা যেতে পারে। এটা এই বিশ্বাসের কারণে যে, কোনো সৃষ্টি, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ'র সমকক্ষ হতে পারে না। তাই নামগুলো ব্যবহার করা যাবে; কিন্তু "আল-" শব্দাংশ-সহ ব্যবহার করা যাবে না।[১৪] অধিকন্তু, কিছু নাম ব্যবহার করা একেবারেই নিষিদ্ধ; কারণ সেই গুণাবলীগুলো মানুষের সম্পূর্ণ আয়ত্তের বাইরে। যেমন: "আল্লাহ", "খালিক্ব" ইত্যাদি।
তবে, যেকোনো নামের প্রথমে (ক্ষেত্রভেদে) "আব্দ"/"আব্দুল"/"আব্দুর"/"আব্দুস" শব্দাংশ (বাংলায় যার অর্থ "দাস" বা "গোলাম") যোগ করে সেটাকে কোনো ব্যক্তির নাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যেমন: "খালিক্ব" (অর্থাৎ "সৃষ্টিকর্তা") ব্যক্তির নাম হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও "আব্দুল খালিক্ব" (অর্থাৎ "সৃষ্টিকর্তার গোলাম") নামটি খুবই গ্রহণযোগ্য এবং মুসলমান সমাজে প্রচলিত।