ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মোহাম্মদ আসিফ মুজতবা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ৪ নভেম্বর, ১৯৬৭ করাচি, সিন্ধু, পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার, কোচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১০৫) | ৭ নভেম্বর ১৯৮৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৬ অক্টোবর ১৯৯৭ বনাম শ্রীলঙ্কা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৫৯) | ৪ নভেম্বর ১৯৮৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ মে ২০২০ |
মোহাম্মদ আসিফ মুজতবা (উর্দু: آصف مجتبی; জন্ম: ৪ নভেম্বর, ১৯৬৭) সিন্ধু প্রদেশের করাচি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৭ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে করাচি ও পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স এবং ইংরেজ ক্রিকেটে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন আসিফ মুজতবা।
১৯৮৪-৮৫ মৌসুম থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আসিফ মুজতবা’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে পিআইএ দলের অধিনায়কত্ব করেন।
মার্চ, ১৯৮৭ সালে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-২৫ দলের নেতৃত্বে থেকে সফলভাবে জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করেন। এক দশক পর ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে ঢাকায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় সার্ক কোয়াড্রাঙ্গুলার ট্রফি প্রতিযোগিতায় নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তান এ দলকে শিরোপা জয়ে সহায়তা করেন। প্রকৃত অধিনায়কদের ন্যায় তিনি সম্মুখসারিতে অগ্রসর হন। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম খেলায় ৬৭ ও চূড়ান্ত খেলায় ভারত এ-দলের বিপক্ষে ৯১ রান তুলেছিলেন। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচসহ প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পঁচিশটি টেস্ট ও ছিষট্টিটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন আসিফ মুজতবা। ৭ নভেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে লাহোরে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৬ এপ্রিল, ১৯৯৭ তারিখে কলম্বোয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
নভেম্বর, ১৯৮৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট খেলার জন্যে আসিফ মুজতবাকে মনোনীত করা হয়। সেলিম মালিকের আঘাতপ্রাপ্তিতে ওয়াসিম রাজাকে পাশ কাটিয়ে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাকে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে, ১৯ বছরের তরুণ মুজতবা দল নির্বাচকমণ্ডলীর আশাকে নিরাশায় পরিণত করেন। ঐ সিরিজে চার ইনিংসে তিনি মাত্র ৩২ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। এর এক বছর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পুনরায় ব্যর্থ হলে তাকে পাঁচ বছর দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়।[১]
ঘরোয়া পর্যায়ে দূর্দান্ত ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯২ সালের গ্রীষ্মকালে ইংল্যান্ড গমনার্থে তাকে দলে রাখা হয়। এবারও দল নির্বাচকমণ্ডলী তার উপর আস্থা রাখেন ও তিন নম্বর অবস্থানের উপযোগী হিসেবে মাঠে নামান। ব্যাটিংয়ের অবস্থান পরিবর্তনের ফলে আংশিক সফল হন। লর্ডস টেস্টে নিজস্ব প্রথম অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলেন। ঐ খেলায় তার দল ২ উইকেটের ব্যবধানে জয়লাভে সক্ষম হয়। এরপর, ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৫৭ ও ৪০ রান সংগ্রহ করেন।
কার্যকরী বামহাতি স্পিন বোলার হিসেবে তার সুনাম ছিল। টেস্টে ৭৫.৭৫ গড়ে চার উইকেট পান। ১৯৯২ সালে লর্ডস টেস্টের প্রথম দিনে চাবিরতির ঠিক পূর্বক্ষণে অ্যালেক স্টুয়ার্টের উইকেট পান। ঐ ইনিংসে তিনি মাত্র এক ওভার বোলিং করে ইংরেজ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ৭৪ রানে জাভেদ মিয়াঁদাদের তালুবন্দী করান। এছাড়াও, ভারতের বিপক্ষে ডাবল হ্যাট্রিক লাভের জন্যে পরিচিতি পেয়েছেন।
১৯৯৩ সালের বসন্তকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বেশ সাহসী ভঙ্গীমায় ব্যাটিং কর্মে অগ্রসর হন। সেন্ট জোন্সে ৫৯ ও ব্রিজটাউনে ৪১ রান করেন। ঐ বছরের শেষদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে অংশ নিয়ে তিনটি অর্ধ-শতরানের সন্ধান পান। কিন্তু কোন ইনিংসকেই তিন অঙ্কের কোটা স্পর্শ করাতে ব্যর্থ হন।
১০ ডিসেম্বর, ১৯৯২ তারিখে হোবার্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২২৮/৭ হয়। পাকিস্তানের শীর্ষসারির ব্যাটসম্যানেরা ধীরলয়ে যাত্রা শুরু করে। ছয় নম্বরে নেমে বেশ চাপের মুখোমুখি হন। তবে, উইকেট-রক্ষক রশীদ লতিফের সাথে সপ্তম উইকেটে ৬৮ রান তুলে জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। খেলার শেষ বলে স্টিভ ওয়াহ’র বলে ছক্কা হাঁকিয়ে টাইয়ে রূপান্তর করেন। অপরাজিত ৫৬* রানের সুবাদে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।
১৯৯৩ সালে শারজায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা ১১৩ রান তুলেন। এ পর্যায়ে সাঈদ আনোয়ারের সাথে ১৭১ রানের জুটি গড়েন। তবে, ওডিআইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যক্তিগত সেরা সফলতা পান। ২ জানুয়ারি, ১৯৮৭ তারিখে পার্থে ডিন জোন্সের দূর্দান্ত ১২১ রানের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়ার ৫০ ওভারে সংগৃহীত ২৭১/৬ ইনিংসের বিপরীতে সফরকারীরা এক পর্যায়ে ১২৯/৬ হয় ও খেলার বাইরে চলে যায়। তবে, ৫৬ বলে অপরাজিত ৬০ রান তুলে দলকে নাটকীয়ভাবে ১ উইকেটে বিজয়ে ভূমিকা রাখেন। মঞ্জুর এলাহি’র সাথে ৫৩, উইকেট-রক্ষক সেলিম ইউসুফের সাথে ৫৩ ও ওয়াসিম আকরামের সাথে ৪৩ রানের জুটি গড়েন। খেলায় তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।
একদিনের আন্তর্জাতিকের সূচনালগ্নটি তার জন্যে বেশ ভয়াবহ ছিল। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুইটি শূন্য রানের ইনিংস খেলেন। একদিনের আন্তর্জাতিকে তাকে কখনো উপযুক্ত বলে মনে হয়নি। ৬৬টি ওডিআইয়ে ২৬.০৪ গড়ে মাঝারিমানের রান সংগ্রহ করেছেন। তবে, একটি সেঞ্চুরির সন্ধান পেয়েছিলেন তিনি।
স্টিভ ওয়াহ’র ফুল টসে খেলার শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে হোবার্টে একদিনের আন্তর্জাতিকে পাকিস্তানের জয়ের জন্যে ৭ রানের দরকার ছিল। এরফলে, খেলাটি টাইয়ে গড়ায়। শেষ ওভারে ১৬ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অংশগ্রহণকৃত ৬টি ওডিআইয়ে ২১৪.০০ গড়ে রান তুলেছিলেন। সবগুলো একদিনের আন্তর্জাতিকে ৯৪.০০ গড়ে সাত উইকেট পেয়েছেন।
মাঝারিসারিতে ইনজামাম-উল-হকের আবির্ভাবে মুজতবাকে সহায়তা করেনি। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সময়কালে দলে তিনি আসা-যাওয়ার পালায় ছিলেন। দলে স্থায়ী সদস্যের মর্যাদা পাননি। এপ্রিল, ১৯৯৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন।
১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা সেলিম মালিকের সহকারী হিসেবে সংক্ষিপ্তকাল দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলোয়াড়ী জীবন তেমন দর্শনীয় ছিল না। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পঞ্চাশোর্ধ্ব গড়ে ব্যাটিং করলেও মুজতবা নিজেকে কখনও শীর্ষস্তরের ক্রিকেটের সাথে তাল মেলাতে পারেননি। ২৫ টেস্টে মাত্র ২৪ ও ৬৬টি ওডিআইয়ে ২৬ গড়ে রান তুলতে পেরেছিলেন।
ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানকার ডালাস ইয়ুথ ক্রিকেট লীগে শিশুদেরকে ক্রিকেট খেলায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। বর্তমানে তিনি টেক্সাসের প্লানো এলাকায় বসবাস করছেন।
একদিনের আন্তর্জাতিকে আসিফ মুজতবা’র শতক | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ক্রমিক | রান | খেলা | প্রতিপক্ষ | শহর/দেশ | মাঠ | তারিখ | ফলাফল |
[১] | ১১৩* | ৩৬ | শ্রীলঙ্কা | শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত | শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম | ৩০ অক্টোবর, ১৯৯৩ | জয় |
ক্রমিক | প্রতিপক্ষ | মাঠ | তারিখ | অবদান | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|
১ | অস্ট্রেলিয়া | বেলেরিভ ওভাল, হোবার্ট | ১০ ডিসেম্বর, ১৯৯২ | ১-০-৯-০; ৫৬* (৫১ বল, ৩x৪, ১x৬) | টাই[২] |
২ | শ্রীলঙ্কা | শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শারজাহ | ৩০ অক্টোবর, ১৯৯৩ | ১১৩* (১৩৪ বল, ৫x৪); ৯-০-২৮-১ | পাকিস্তান ১১৪ রানে বিজয়ী[৩] |
৩ | জিম্বাবুয়ে | রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, রাওয়ালপিন্ডি | ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ | ডিএনবি, ১ কট; ৬১ (১০২ বল, ২x৪) | পাকিস্তান ৬ উইকেটে বিজয়ী[৪] |