নু နု | |
---|---|
বার্মার ১ম প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ৪ জানুয়ারি, ১৯৪৮ – ১২ জুন, ১৯৫৬ | |
রাষ্ট্রপতি | সাও শি থাইক বা ইউ |
পূর্বসূরী | পদ সৃষ্ট |
উত্তরসূরী | বা সি |
কাজের মেয়াদ ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৭ – ২৮ অক্টোবর, ১৯৫৮ | |
রাষ্ট্রপতি | বা ইউ |
পূর্বসূরী | বা সি |
উত্তরসূরী | নে উইন |
কাজের মেয়াদ ৪ এপ্রিল, ১৯৬০ – ২ মার্চ, ১৯৬২ | |
রাষ্ট্রপতি | উইন মং |
পূর্বসূরী | নে উইন |
উত্তরসূরী | নে উইন |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ওয়াকেমা, মায়ংমায়া, ব্রিটিশ বার্মা | ২৫ মে ১৯০৭
মৃত্যু | ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ বাহান টাউনশীপ, ইয়াংগুন, মায়ানমার | (বয়স ৮৭)
জাতীয়তা | বর্মী |
রাজনৈতিক দল | এএফপিএফএল |
দাম্পত্য সঙ্গী | মায়া ই (বি. ১৯৩৫; মৃ. ১৯৯৩) |
সন্তান | সান সান নু থং তাইক মং অং থান থান নু খিন আই নু |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | র্যাঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় |
ধর্ম | থেরবাদ |
ইউ নু (বর্মী: ဦးနု; উচ্চারিত: [ʔú nṵ]; জন্ম: ২৫ মে, ১৯০৭ - মৃত্যু: ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫) মায়ংমায়া জেলার ওয়াকেমা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বার্মার (বর্তমান - মায়ানমার) জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রধান ও বিংশ শতাব্দীর অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি বার্মার প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রিটিশ বার্মায় ইউ সান তুন ও ড স খিন দম্পতির সন্তান ছিলেন। ইয়াংগুনের মিওমা হাই স্কুলে ভর্তি হন। এরপর ১৯২৯ সালে র্যাঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৯ সালে বি.এ. ডিগ্রী লাভ করেন। আইন বিষয়ে স্নাতক শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে মায়া ই’র সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় তার।
র্যাঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগঠনের সভাপতি হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯৩৭ সালে থাকিন থান তুনের সাথে নাগানি বুক ক্লাব গঠন করেন। মার্কসবাদ বিষয়ে বর্মী ভাষায় অনুবাদকৃত গ্রন্থ এখান থেকেই প্রথমবারের মতো প্রকাশ হতে থাকে। এছাড়া্ও পিপলস রিভল্যুশনারী পার্টি (পিআরপি) গঠন করেন ও নেতৃত্বে ছিলেন। পরবর্তীকালে ঐ দলটি সোশ্যালিস্ট পার্টিতে রূপান্তরিত হয়। দলটি ১৯৪০-এর দশকে জাপান ও ব্রিটিশ - উভয়ের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভে আন্দোলন করে। ১৯৪০ সালে থাকিন সো, থাকিন থান তুন, কিয় নেইন, ইউ মাদ এবং ড. বা ময়ের সাথে তিনি ঔপনিবেশিক সরকারের আমলে অভিযুক্ত হন। কিন্তু, ক্রমবর্ধমান জাপানীদের আক্রমণে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ নু’র কারাভোগ স্থগিত করে।[১]
আগস্ট, ১৯৪৩ সালে জাপান সরকার বা মকে প্রধান করে সীমিত পর্যায়ে বার্মার স্বাধীনতা ঘোষণা করে।[২] এতে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৪৪ সালে তথ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু, মার্চ, ১৯৪৫ সালে জাপানী সামরিকবাহিনী এএফপিএফএলের কাছ থেকে বিরোধীতার সম্মুখিন হয়। এপ্রিল, ১৯৪৫ সালে নু জাপানীদের সালে সম্পর্কচ্ছেদ করেন। ১২ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে মিত্রশক্তির পাইলট কর্তৃক তিনি সমূহ মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিলেন। বা ময়ের গৃহ ধ্বংস হয়। কিন্তু ঐ আক্রমণে তারা নিজেদের জীবন বাঁচিয়েছিলেন। জাপানের আত্মসমর্পণের পর নু সাময়িকভাবে রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন। এ সময়ে তিনি যুদ্ধকালীন বছরগুলোকে ঘিরে আত্মজীবনী রচনা করেন।
অং সানের সাথে পূর্বেকার সম্পর্ক থাকায় ও ছাত্রাবস্থায় জাতীয়তাবাদীদের সাথে সম্পর্কের কারণে নু পুনরায় এএফপিএফএলের সাথে রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করেন। কিন্তু শুরুতে দলের মধ্যে বহমান সমাজতান্ত্রিক চেতনাকে বাস্তবায়নে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।[৩]
দলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা অং সান ও তার মন্ত্রীসভার সদস্যগণ ১৯ জুলাই, ১৯৪৭ তারিখে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এরপর ইউ নু এএফপিএফএলের নেতৃত্ব দেন। অক্টোবর, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এটলি’র সাথে স্বাধীনতার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন যা নু-এটলি সন্ধি নামে পরিচিত।[৪]
৪ জানুয়ারি, ১৯৪৮ তারিখে ব্রিটেনের কাছ থেকে বার্মা স্বাধীনতা লাভ করে। ওল্ড মাইওমা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হন। স্বাধীন বার্মার প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন ও সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলোর সাথে আলোচনা করেন।
নির্বাসিত কুমিনতাং দলের ঘাঁটি পূর্ব বার্মায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে তাদেরকে বিতাড়ন করা সম্ভব হয়। দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করেন ও বেশ কয়েকবার সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৫০-এর দশকে পিয়াদথা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বার্মাকে শিল্পায়নের দিকে ধাবিত করেন। ১৯৫৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে স্বেচ্ছায় চলে আসেন।
থেরবাদ বৌদ্ধ ধর্মে তিনি নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। ১৯৫২ সালে কাবা আয়া প্যাগোডা ও মহা পসন্ন গুহ নির্মাণ করেন। কলমা সুত্তে আকৃষ্ট ইউ নু। বৌদ্ধ ধর্মীয় এ মতবাদে বিশ্বাসীগণকে তাদের বিশ্বাস ও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তে গৃহীত যে-কোন বাস্তব বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়: স্বয়ং যাচাই না করে কোন কিছু বিশ্বাস করা যাবে না।[৫]
২৯ আগস্ট, ১৯৬১ নিজ উদ্যোগে রাষ্ট্রধর্ম বিষয়ে সংসদে অণুমোদন দেন।[৬] এ আইনে বৌদ্ধ ধর্মকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়া হয়। তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেও এ বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছিল।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৫ তারিখে ৮৭ বছর বয়সে ইয়াংগুনের বাহান শহরে তার দেহাবসান ঘটে।[৭] তার পূর্বেই ১৯৯৩ সালে মায়া ই’র মৃত্যু ঘটেছিল। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান ছিল।
১৯৫৫ সালে যুগোস্লাভিয়ার বেলগ্রেড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করে।[৮]
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী পদ সৃষ্ট |
বার্মার প্রধানমন্ত্রী ১৯৪৮-১৯৫৬ |
উত্তরসূরী বা সি |
পূর্বসূরী বা সি |
বার্মার প্রধানমন্ত্রী ১৯৫৭-১৯৫৮ |
উত্তরসূরী নে উইন |
পূর্বসূরী নে উইন |
বার্মার প্রধানমন্ত্রী ১৯৬০-১৯৬২ |
উত্তরসূরী নে উইন |