ইন্দোনেশিয়া |
সুরিনাম |
---|
ইন্দোনেশিয়া-সুরিনাম সম্পর্ক ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনাম এর মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। এর পাশাপাশি দেশদুটির মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্ককেও নির্দেশ করে। ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনাম উভয় দেশই ডাচ সাম্রাজ্য এর অধীনে ছিল, ফলে তাদের একটি সাধারণ অতীত রয়েছে এবং দেশদুটির মাঝে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।[১] ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের শুরুর দিকে বহু জাভানীয়কে কাজের জন্য সুরিনামে পাঠানো হয়।
সুরিনামের রাজধানী পারামারিবোতে ইন্দোনেশিয়ার একটি দূতাবাস রয়েছে। এই দূতাবাসের মাধ্যমে, ইন্দোনেশিয়ার সাথে গায়ানার বিভিন্ন বিষয়াবলী এবং কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সুরিনামের একটি দূতাবাস রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনাম উভয় দেশই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এবং ফোরাম অব ইস্ট এশিয়া-লাতিন আমেরিকা কো-অপারেশন এর সদস্য।
ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনামের মধ্যকার ঐতিহাসিক সম্পর্কের সূচনা হয় ১৮৯০ সালে, যখন জাভানীয় মানুষদের কাজের জন্য, ইন্দোনেশিয়া থেকে সুরিনামে পাঠানো হয়। অন্য কলোনিতে তথা সুরিনামে শ্রমিকের প্রয়োজন মেটানোর জন্য, ডাচ সাম্রাজ্যের এক উপনিবেশ ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ থেকে মানুষকে সুরিনামে পাঠানো হত। এদের অধিকাংশই কৃষি খাতে কাজ করতেন। বর্তমানে সুরিনামের প্রায় ৭০,০০০ বা ১৫ শতাংশ নাগরিক জাভানীয় বংশোদ্ভূত। এর পাশাপাশি সুরিনামের কিছুসংখ্যক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যেমন: মন্ত্রিসভার সদস্য জাভানীয় বংশোদ্ভূত।[১] ১৯৭৫ সালে ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনামের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। যদিও ১৯৬৪ সাল থেকেই সুরিনামের রাজধানী পারামারিবোতে ইন্দোনেশিয়ার একটি কনস্যুলেট রয়েছে।[২]
ইন্দোনেশিয়া উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে সুরিনামকে একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে এবং উত্তর আমেরিকার বাজারে প্রবেশের একটি বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবেও বিবেচনা করে। ২০১২ সালে ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনামের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল, ৮.৯ মিলিয়ন (৮৯ লক্ষ) মার্কিন ডলারের। এর মাঝে সুরিনামে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের রপ্তানি মুল্য ছিল ৭.১ মিলিয়ন (৭১ লক্ষ) মার্কিন ডলার এবং ইন্দোনেশিয়ায় সুরিনামের পণ্যের রপ্তানি মুল্য ছিল ১.৮ মিলিয়ন (১৮ লক্ষ) মার্কিন ডলার। অর্থাৎ ২০১২ সালে ইন্দোনেশিয়া এবং সুরিনামের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ইন্দোনেশিয়ার উদ্বৃত্ত ছিল ৫.৩ মিলিয়ন (৫৩ লক্ষ) মার্কিন ডলার।[১] সুরিনামে ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে, টেক্সটাইল, আসবাবপত্র, পোশাক, গৃহস্থালির সামগ্রী, প্লাস্টিক পণ্য, জুতা, রান্নার উপকরণ, বাদ্যযন্ত্র প্রভৃতি।[৩]
২০১১ সালের ৪ এপ্রিল, ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগাকার্তা এবং সুরিনামের কোমেউইজনে শহর সিস্টার সিটি চুক্তি সাক্ষর করে।[৪] জাভানীয় ইন্দোনেশীয় এবং জাভানীয় সুরিনামিজদের মধ্যকার সাধারণ জাভানীয় সংস্কৃতি এই দুই দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন করে।