ইফতার

ইফতার
সুলতান আহমেদ মসজিদে একসাথে ইফতারের আয়োজন করা হয় (ইস্তাম্বুল, তুরস্ক)।
দেশমুসলিম বিশ্ব
ধরনধর্মীয় চর্চা,সামাজিক চর্চা, ঐতিহ্যবাহী উৎসব
সূত্র01984
ইউনেস্কো অঞ্চলবিশ্ব
অন্তর্ভূক্তির ইতিহাস
অন্তর্ভূক্তি২০২৩

ইফতার (আরবি: إفطار ইফ্‌ত্বার্) হলো রমজান মাসে মুসলিমদের দ্বারা পালিত একটি ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় আচার। এটি সূর্যাস্তের পরে রোজা ভাঙার জন্য একটি খাবার। ইফতার সাধারণত একটি হালকা খাবার দিয়ে শুরু হয়, যেমন খেজুর বা পানি। এর পরে, আরও ভারী খাবার পরিবেশন করা হয়, যেমন ফল, শাকসবজি, সালাদ, ডাল, ভাত, রুটি, এবং মিষ্টি ইত্যাদি।[] খেজুরের মাধ্যমে ইফতার শুরু করা সুন্নত

ইফতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আচার। এটি মুসলিমদের সারাদিনের রোজা ভাঙার এবং একসাথে খাওয়ার একটি উপলক্ষ। এটি আত্মত্যাগ, ধৈর্য, এবং সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। এটি মুসলিমদের সারাদিন রোজা রাখার পরে পুনরুজ্জীবিত হতে সাহায্য করে। এটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানও যা পরিবার এবং বন্ধুদের একত্রিত করে।

ইউনেস্কো ২০২৩ সালে মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় রীতি ইফতারকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আওতাভুক্ত করে।[] ইউনেস্কোর ভাষায়, ইফতার (ইফতারি কিংবা ইফতর হিসেবেও পরিচিত) রমজান মাসে সব ধরনের ধর্মীয় বিধান মানার পর সূর্যাস্তের সময় মুসলিমদের পালনীয় রীতি। সংস্থাটি মনে করে, এই ধর্মীয় রীতি পরিবার ও সমাজিক বন্ধন দৃঢ় করে এবং দান, সৌহার্দ্যের মতো বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসে।[]

পটভূমি

[সম্পাদনা]

ইফতার পালনের ইতিহাস ইসলামের সূচনালগ্নেই শুরু হয়। কুরআনের সূরা বাকারার ১৮৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,

এই আয়াতের নির্দেশ অনুসারে, মুসলিমরা রমজান মাসে সূর্যাস্তের পর রোজা ভাঙে এবং ইফতার করে।

ইসলামের নবী মুহাম্মাদ নিজেও রমজান মাসে ইফতার করেছেন। হাদিসে বর্ণিত আছে যে, তিনি ইফতার খেজুর দিয়ে শুরু করতেন। তারপর তিনি পানি পান করতেন এবং হালকা খাবার খেতেন। ইফতারের পর তিনি সালাত আদায়ে দাঁড়াতেন।

ইফতার পালন মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এটি তাদের সারাদিনের রোজা ভাঙার এবং পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। এটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানও যা পরিবার এবং বন্ধুদের একত্রিত করে।

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে ইফতার পালনের বিভিন্ন রীতি-নীতি প্রচলিত হয়েছে। প্রাচীনকালে মুসলিমরা ইফতারে সাধারণত খেজুর, পানি, দুধ, ফল এবং হালকা খাবার খেত। পরবর্তীকালে ইফতারের খাবারের তালিকায় বিভিন্ন ধরনের খাবার যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে ইফতারে বিভিন্ন ধরনের ফল, মিষ্টি, মুখরোচক খাবার, মাংস, ভাত, ডাল, তরকারি ইত্যাদি খাওয়া হয়।

ইফতার পালন মুসলিমদের জন্য একটি আনন্দঘন অনুষ্ঠান। এটি তাদের ধর্মীয় কর্তব্য পালনের পাশাপাশি সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "How to fast responsibly during Ramadan"The Independent (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৪-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-১২ 
  2. "ইউনেস্কো - ইফতার এবং এর সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য"ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৭ 
  3. এএফপি (২০২৩-১২-০৮)। "ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল ইফতার"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৯ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]