মুফতি, ডক্টর ইয়াসির নাদিম আল ওয়াজিদি | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৯৮২ (বয়স ৪১–৪২) দেওবন্দ, ভারত |
ধর্ম | ইসলাম |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
উল্লেখযোগ্য কাজ | দারুল উলুম অনলাইন |
যেখানের শিক্ষার্থী |
|
আত্মীয় | দেওবন্দের উসমানি পরিবার (মাতৃ-সম্পর্কীয়) |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
সাহিত্যকর্ম | ইসলাম ও বিশ্বায়ন |
ইয়াসির নাদিম আল ওয়াজিদি (জন্ম: ১৯৮২) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ভিত্তিক একজন ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত, সংখ্যালঘু অধিকার কর্মী এবং ইউটিউবার। তিনি শিকাগোর মাহদ তালিমুল ইসলামের শিক্ষক এবং দারুল উলুম অনলাইনের প্রতিষ্ঠাতা। তার রচনার মধ্যে ইসলাম ও বিশ্বায়ন অন্যতম।
ইয়াসির নাদিম আল ওয়াজিদি ১৯৮২ সালে ভারতের দেওবন্দে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তার দাদা ওয়াজিদ হুসাইন দেওবন্দি জামিয়া ইসলামিয়া তালিমুদ্দিন ডাভেলের মুহাদ্দিস ছিলেন। তিনি মায়ের দিক থেকে দেওবন্দের উসমানি পরিবারের সাথে সম্পর্কিত। তার পিতামহ শিকাগোতে প্রথম মাদ্রাসা হিসেবে মাহদ তালিমুল ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[২]
শুরুতে তিনি পিতামাতার কাছে কুরআন মুখস্থ করেন।[১] ২০০১ সালে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে দাওরায়ে হাদিস (স্নাতক) সম্পন্ন করে আরবি সাহিত্য এবং ফিকহশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।[৩] তার শিক্ষকদের মধ্যে সাঈদ আহমদ পালনপুরী অন্যতম।[২] ২০০৪ সালে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং আমেরিকান উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি সাহিত্যে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।[৪] আবুল লইস খাইরাবাদীর তত্ত্বাবধানে ২০১২ সালে তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়া থেকে হাদিসে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ২০০৪ সালে মাহদ তালিমুল ইসলামে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং ২০০৯ সালে দারুল উলুম অনলাইন প্রতিষ্ঠা করেন। দারুল উলুম অনলাইনকে দারসে নিজামি পাঠ্যক্রমের শিক্ষার দিকে প্রথম উদ্যোগ বলে মনে করা হয়।[১] তিনি ইসলামি পুনরুজ্জীবন সম্পর্কিত একটি আন্তর্জাতিক সাময়িকী ইসলামি সাহিত্য পর্যালোচনার সহ-সভাপতি। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি পাকিস্তানি কানাডিয়ান লেখক ও ফাতাহ কা ফতোয়ার আয়োজক তারেক ফাতাহকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছিলেন, ‘যদি ফাতেহ সত্যই ইসলাম নিয়ে বিতর্ক করতে পছন্দ করে তবে স্বাধীন বিচারকদের উপস্থিতি ও টিভি স্টুডিও ছাড়া জনসমক্ষে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় নাদিমের সাথে তার বিতর্ক করা উচিত।’[৪] নাদিম আরও বলেছিলেন, ‘প্রশ্ন ও অভিযোগ হবে ফাতেহ’র, জবাব হবে নাদিমের।’ ফাতেহ অবশ্য নাদিমের এই একাডেমিক বিতর্কের প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। ফতেহর ফাতাহ কা ফতওয়ার বিপরীতে নাদিম সার্জিক্যাল স্ট্রাইক শুরু করেছিলেন।[৫] এটি ২ বছর ধরে ৭২টি সফল পর্বে সমাপ্ত হয়, যেখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন আরিফ মোহাম্মদ খান, মাহমুদ মাদানি, ওরিয়া মকবুল জান, রাম পুননিয়াণী, রবি শঙ্কর প্রমুখ।[২]
২০১৩ সালের মে মাসে তিনি হিন্দু ছেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে ইসলাম ত্যাগকারী মুসলিম মেয়েদের সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘এর জন্য আলেমরাই বেশি দায়ী, কারণ তারা ইসলাম শিখতে আসা তরুণ ছেলে-মেয়েদের উপেক্ষা করে, যাদের ৯৭% কোনো মাদ্রাসায় যায় না।’[৬] ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তিনি একটি বিতর্ক উসকে দিয়ে বলেছিলেন, জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে–তে বহু-ঈশ্বরবাদ সম্পর্কিত কোন ধারণা নেই, যেমনটি সাধারণত অনেক মুসলমান মনে করে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঈশ্বরের প্রশংসায় কবিতা লিখেছিলেন।[৭] তিনি বলেছিলেন, যদি ঠাকুর বহু-ঈশ্বরবাদী হয়ে থাকেন, তবে এটি বোঝা গেল যে কবিতাটি বহু-ঈশ্বরবাদী ধারণা দ্বারা প্রভাবিত, কিন্তু ঠাকুরকে বহু-ঈশ্বরবাদী হিসেবে চিহ্নিত করার মতো কোনো প্রমাণ নেই।[৮] তিনি জন বি. ওয়াটসনকে উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, ঠাকুরের ধর্ম ছিল ঈশ্বর এবং প্রকৃতির সাথে প্রেম। ২০২১ সালের মার্চ মাসে তিনি ইসলামে বর্ণবাদের উপস্থিতিকে নিন্দা করে বলেন, ‘এটি একটি সামাজিক কুফল।’[৯]
তিনি ‘কামুস আল আসরি’ নামে একটি ত্রিভাষিক অভিধান লিখেছেন, যার মধ্যে আরবি, ইংরেজি এবং উর্দু ভাষার ৭৫ হাজার শব্দ রয়েছে।[১] তার অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে: