মুসলিমদের পারস্য বিজয় এর মাধ্যমেই ইরানের ইসলামীকরণের যাত্রা শুরু হয়। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছিল। সমগ্র জনগোষ্ঠীর একটা বড়ো অংশ ইসলামকে ধীরে ধীরে গ্রহণ শুরু করে, যদিও বাকিরা ইসলামকে প্রত্যাখ্যান করতো। অপরদিকে ইরানিরা কিছু নির্দিষ্ট প্রাক-ইসলামী প্রথা মেনে চলতো এবং নিজেদেরকে ইসলামী ভাষা, সংস্কৃতি, ও আইন কানুনের সাথে মানিয়ে চলতো। অবশেষে এই দুই রীতিনীতি এবং প্রথা একীভূত হয়ে "ইরানি ইসলামী" রূপলাভ করে।[১]
ইরানের ইসলামীকরণের ফলে ইরান সমাজের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক , ও বৈজ্ঞানিক কাঠামোতে এক বড়ো ধরনের পরিবর্তন এসেছিলো। নবগঠিত মুসলিম সমাজের প্রধান উপাদান হয়ে উঠে শিল্প, ফার্সী সাহিত্য, ঔষধ ও দর্শন। হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সভ্যতার একীভূতকরণ , পারস্যের সমৃদ্ধি এবং সংস্কৃতির প্রধান ক্ষেত্র তৈরীকরণের মাধ্যমে তৎকালীন সময়টা ইরানের ইসলামী স্বর্ণযুগ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে।
সাসানীয় সাম্রাজ্য এর ইসলামী বিজয়ের পরে, উমাইয়া রাজবংশ এর ৯০ বছরের দীর্ঘ শাসনকালে, আরব বিজয়ীরা তাদের সাম্রাজ্যে প্রাথমিক ভাষা হিসেবে আরবি ভাষা আরোপ করতে চেয়েছিলো। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ তার সাম্রাজ্যে ফার্সি ভাষার বিস্তার হোক এটা পছন্দ করতেন না, তিনি আরবি ভাষাকে ইরানের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ব্যবহারের আদেশ দেন।[২]
আবু আল-ফারাজ আল-ইসফাহানী এবং আবু রায়হান আল বিরুনি এর গ্রন্থসমূহে উমাইয়াদের আমলে জোরপূর্বক পারস্য সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়ায় তাদের দুই অথবা তিন শতাব্দী পতনের বর্ণনা পাওয়া যায়।[৩]