প্রস্রবণ বা জল তাপীয় প্রস্রবন অথবা ভূ-তাপীয় প্রস্রবন হলো ভূত্বক থেকে উঠে আসা ভূ-তাপে উত্তপ্ত ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করে তৈরি এক ধরনের প্রস্রবণ। এদের মধ্যে কিছু প্রস্রবণে নিরাপদে স্নান করার মতো জল আছে কিন্তু অন্যগুলোতে নিমজ্জিত থাকার ফলে মানুষ আহত বা নিহতও হতে পারে।
এক ধরনের প্রস্রবণ যার তাপমাত্রা সেটির চারপাশের পরিবেশের তুলনায় বেশি।[২]
এক ধরনের প্রস্রবণ যার তাপমাত্রা মানুষের দেহের চেয়ে বেশি (সাধারণত ৩৬.৫° থেকে ৩৭.৫° পর্যন্ত অথবা ৯৭.৫° ফারেনহাইট থেকে ৯৯.৫° ফারেনহাইট পর্যন্ত)।[৩][৪][৫]
একটি তাপীয় প্রস্রবণ যার পানির তাপমাত্রা ৩৬.৭° সেলসিয়াস (৯৮° ফারেনহাইট) এর তুলনায় বেশি।[৬][৭]
একটি প্রাকৃতিক প্রম্রবণ, যার পানির তাপমাত্রা ২১.১° সেলসিয়াস (৭০° ফারেনহাইট) এর বেশি।[৮][৯][১০][১১]
এক ধরনের তাপীয় প্রম্রবণ, যার তলে উত্তপ্ত পানি নিয়ে আসা হয়। এ ধরনের প্রম্রবণের তাপমাত্রা সাধারণত বাতাসের তাপমাত্রার তুলনায় ৬.৫° সেলসিয়াস (১২° ফারেনহাইট) এর বেশি।[১৩] উল্লেখ্য এই যে, কোনো তাপীয় প্রস্রবণ উষ্ণ প্রস্রবণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয়।
এক ধরনের প্রম্রবণ যার তলে উষ্ণ পানি নিয়ে আসা হয় (তাপীয় প্রম্রবণ) এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ)। এই প্রম্রবণের পানির তাপমাত্রা সাধারণত মূল বায়ুর তাপমাত্রার তুলনায় ৮.৩° সেলসিয়াস (১৫ ফারেনহাইট) অথবা আরো বেশি।[১৪]
এক ধরনের প্রম্রবণ যার পানির তাপমাত্রা আশেপাশের পরিবেশের মাটির তাপমাত্রার তুলনায় বেশি।[১৫]
এক ধরনের প্রম্রবণ যার পানির তাপমাত্রা ৫০° সেলসিয়াস (১২২° ফারেনহাইট) অথবা তার বেশি।[১৬]
অনেক উৎস থেকে "ওয়ার্ম স্প্রিং" বলতে বোঝানো হয়েছে যে, এটি এক ধরনের প্রম্রবণ যার পানির তাপমাত্রা উষ্ণ প্রম্রবণের (Hot Spring) তুলনায় কম। যদিও পেন্টিকোস্ট এট আল (২০০৩)-এ বলা হয়েছে যে, এই শব্দটির কোনো উপযোগীতা নেই এবং এই শব্দটি ব্যবহার না করাই উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসন এটিকে এক ধরনের প্রম্রবণ যার পানির তাপমাত্রা ২০° থেকে ৫০° সেলসিয়াস (৬৮° থেকে ১২২° ফারেনহাইট) পর্যন্ত।[৫]
এর তাপের অধিকাংশ অংশ প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয় উপাদানসমূহের তেজস্ক্রিয়তা থেকে আসে। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উঠে বেরিয়ে আসা তাপের আনুমানিক ৪৫ থেকে ৯০ শতাংশ মূলত মেন্টলে থাকা তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলো থেকে সৃষ্টি হয়।[১৭][১৮][১৯]পটাশিয়াম-৪০, ইউরেনিয়াম-২৩৮, ইউরেনিয়াম-২৩৫ হলো পৃথিবীর প্রধান তাপ উৎপাদী আইসোটোপ।[২০]
উষ্ণ প্রম্রবণ এ প্রবেশকৃত পানি পৃথিবীর মেন্টল- এর তাপ দ্বরা ভূ-তাপীয়ভাবে উত্তপ্ত। সাধারণত, ভূ-পৃষ্ঠের শিলাগুলোর তাপমাত্রা গভীরতার সাথে বৃদ্ধি পায়। গভীরতার সাথে বর্ধিত তাপমাত্রার হারকে জিওথার্মাল গ্রেডিয়্যান্ট বলে। যদি পানি যথেষ্ট গভীরভাবে ভূ-ত্বকের উপর অনুস্রবণিত হয়, তাহলে এটি উত্তপ্ত শিলার সংস্পর্ষে এলে উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। আগ্নেয়গিরিহীন অঞ্চলগুলোতে এভাবে উষ্ণ প্রম্রবণের পানি উত্তপ্ত হয়।
ইয়েলোস্টোন জাতীয় উদ্যানের মতো আগ্নেয়গিরি বিদ্যমান থাকা অঞ্চলগুলোতে পানি ম্যাগমা (molten rock|গলিত শিলার) সংস্পর্শে এসে উত্তপ্ত হতে পারে। ম্যাগমার আশেপাশে বিদ্যমান উচ্চ তাপমাত্রা গ্রেডিয়্যান্ট এর কারণে পানি ফুটতে পারে এবং অাততপ্ত হয়ে উঠতে পারে। যদি পানি এত উত্তপ্ত হয় যে তা বাস্প চাপ তৈরি করে ভূ-ত্বকের উপর দিয়ে বিস্ফোরিত হয়, একে উষ্ণপ্রস্রবণ বলে। আর যদি পানি শুধু বাস্প রূপে পৃষ্ঠে পৌছায় তাহলে তাকে ফিউমেরােল বলে। যদি পানি কাদাপানির সাথে মিশ্রিত হয় তাহলে মাডপট বেলে।
উলেখ্য, আগ্নেগিরি বিদ্যমান অঞ্চলগুলোতে উষ্ণ প্রম্রবণ স্ফুটনাংক কাছাকাছি তাপমাত্রায় অবস্থান করে। মানুষ এই প্রম্রবণগুলোতে দুর্ঘটনাজনিতভাবে অথবা ঐচ্ছিকভাবে প্রবেশ করে মারাত্মকভাবে পুড়ে গিয়েছে এমনকি নিহতও হয়েছে।
"ওয়ার্ম স্প্রিং"-কে কখনো কখনো উষ্ণ এবং ঠান্ডা প্রম্রবণের মিলিত হওয়ার ফল বলা যায়। সেগুলো আগ্নেয়গিরি সক্রিয় বা আগ্নেয়গিরি না থাকা উভয় অঞ্চলেই আবির্ভাব হতে পারে। আগ্নেয়গিরিহীন অঞ্চচলের উষ্ণ প্রম্রবণের একটি উদাহরণ হলো জর্জিয়ার উষ্ণ প্রম্রবণ, যা চিকিৎসা ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবের কারণে প্যারাপ্লেজিয়া রোগে আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট বেশ কিছু বার সেখানে ভ্রমণ করেছিলেন এবং তিনি সেখানে লিটল হোয়াইট হাউজ নির্মাণ করেন।
প্রবাহের হারের দিক থেকে উষ্ণ প্রম্রবণ ছোট চোয়ান থেকে প্রাকৃতিক গরম পানির নদী পর্যন্ত বিস্তৃত থাকতে পারে। কখনো কখনো এখানে এত পরিমাণ চাপ থাকে যে উষ্ণপ্রস্রবণ বা ঝরণা থেবে পানি উপরের দিকে নিক্ষেপিত হয়।
সাহিত্যে উচ্চ প্রবাহ উষ্ণ প্রম্রবণের প্রববাহ মানের বিষয়ে অনেক তত্ত্ব আছে। ভূ-তাপীয় প্রম্রবণের তুলনায় অনেক বেশি উচ্চ-প্রবাহমান প্রম্রবণের সংখ্যা অনেক বেশি। শুধুমাত্র ফ্লোরিডাতেই স্বীকৃত "ম্যাগনেটিউড এক প্রম্রবণ" এর সংখ্যা ৩৩ টি।এগুলোর প্রবাহ হার ২৮০০ লি./সে (৯৯ ঘনফুট/সেকেন্ড) এর চেয়ে বেশি। ফ্লোরিডার "সিলভার স্প্রিংস"- এর প্রবাহ হার ২১,০০০ লি./সে (৭৪০/ঘনফুট/সেকেন্ড)। নিম্নোক্ত প্রম্রবণগুলোতে উচ্চ প্রবাহ হার বিদ্যমান:
দক্ষিণ ডাকোটার এভেন্স প্লঙ্গস এর প্রবাহ মান ৫,০০০ U.S. gal/min (০.৩২ মি৩/সে) এবং পানির তাপমাত্রা ৩১° সেলসিয়াস (৮৭° ফারেনহাইট)। এটি ১৮৯০ সালে নির্মাণ করা হয় এবং তা সর্বকৃহৎ প্রাকৃতিকভাবে উত্তপ্ত পানির আভ্যন্তরীন সুইমিং পুল।
ইতালির সাতুর্নিয়া উষ্ণ প্রম্রবণের প্রবাহ মান ৫০০ লি./সেকেন্ড।[২১]
নিউ মেক্সিকোর ট্রুথ অর কয়েসিকোয়েন্সেস শহরের উষ্ণ প্রম্রবণগুলোর প্রবাহ হার আনুমানিক ৯৯ লি./সেকেন্ড।[২২]
যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহো অঙ্গরাজ্যের উষ্ণ প্রম্রবণগুলোর প্রবাহ হার ১৩০ লি./সেকেন্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের গ্লেউড প্রম্রবণের প্রবাহ হার ১৪৩/সেকেন্ড।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চচলে অবস্থিত এলিজাবেথ স্প্রিংস এর প্রবাহ হার হয়তো উনিশ শতাব্দিতে ১৫৮/সেকেন্ড ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা ৫লি./সেকেন্ড।
ব্রাজিলের কালডাস নোভাস এর উষ্ণ প্রম্রবণ ৮৬ টি গর্তে বিভক্ত এবং সেখনে থেকে ১৪ ঘণ্টা ব্যাপী ৩৩৩লি./সে হারে পানি পাম্প করা হয়। যা প্রতিটি গর্তের ক্ষেত্রে প্রবাহ হার ৩.৮৯ এর সমান।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
জাপানের বেপ্পুর ২৮৫০ উষ্ণ প্রম্রবণ হচ্ছে জাপানের সবচেয়ে বেশি প্রবাহ হার সম্পন্ন উষ্ণ প্রম্রবণের সমষ্টি, যা সম্মিলিতভাবে ১৫৯২ লি./সেকেন্ড এদের প্রবাহ হার। অর্থাৎ, ০.৫৬ লি./সেকেন্ড প্রতিটি গর্তের গড় প্রবাহ হার।
জাপানের কোকোনো এর ৩০৩ টি উষ্ণ প্রম্রবণের প্রবাহ হার ১০২৮লি./সে। অর্থাৎ, ৩.৩৯ লি./সেকেন্ড প্রতিটি গর্তের গড় প্রবাহ হার।
ওওইতা প্রশাসনিক অঞ্চলে অবস্থিত ৪৭৬২ টি উষ্ণ প্রম্রবণের হার ৪৪৩৭ লি./সেকেন্ড। সূতরাং গড় উষ্ণ প্রম্রবণের প্রবাহ হার ০.৯৩ লি./সেকেন্ড।
জাপানেরআকিতা প্রশাসনিক অঞ্চলে অবস্থিত তামাগাওয়া উষ্ণ প্রম্রবণ জাপানের সবচেয়ে বেশি প্রবাহ হার সম্পন্ন উষ্ণ প্রম্রবণ। এটির প্রবাহ হার ১৫০ লি./সেকেন্ড। এটিতে ৯৮° সেলসিয়াস (২০৮° ফারেনহাইট) তাপমাত্রার ৩ মিটার (৯৮ ফুট) প্রশস্ত প্রবাহ বিদ্যমান।
ইন্দোনেশিয়ার ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) উত্তর-পূর্বে অবস্থিত নেজ প্রদেশে আরো তিনটি বড় উষ্ণ প্রম্রবণ (মেনগেরেডা, ওয়ে বানা এবং পিগা) রয়েছে। এদের সম্মিলিতভাবে প্রবাহ হার ৪৫০লি./সেকেন্ড।
অস্ট্রেলিয়ার ডালহাউজি উষ্ণ প্রম্রবণগুলোর ১৯১৫ সালে সম্মিলিত প্রবাহ হার ছিল ২৩,০০০ লি/সেকেন্ড। অর্থাৎ, প্রতিটির গড় প্রবাহ হার ৩২৫ লি./সেকেন্ড। বর্তমানে এই সম্মিলিত এবং গড় প্রবাহ হার হ্রাস পেয়ে যথাক্রমে ১৭৩৭০ লি./সেকেন্ড এবং ২৫০ লি./সেকেন্ড।[২৩]
উত্তপ্ত পানি ঠান্ডা পানির তুলনায় বেশি কঠিন পতার্থ দ্রবীভূত রাখতে পারে। ওয়ার্ম এবং উষ্ণ প্রম্রবণে উপকারী গন্ধকতুল্য পানি[২৫], অনেক সময় উচ্চ পরিশোধন পদার্থসমূহ, সাধারণ ক্যালসিয়াম, লিথিয়াম এবং রেডিয়াম ইত্যাদি দ্রবীভূত করা সম্ভব। এই প্রম্রবণগুলোর লোককথা এবং জোর দিয়ে বলা চিবিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বের কারণে এরা অনেক সময় পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় স্থান হওয়ার সাথে অক্ষম অবস্থার মানুষদের পুনর্বাসন ক্লিনিকের একটি স্থান।[২৬][২৭][২৮]
থার্মোফিল হলো এক ধরনের জীব।[২৯] এদের উষ্ণ প্রম্রবণ, গভীর সমুদ্রের হাইড্রথার্মাল ভেন্ট এবং ক্ষতিতকর উদ্ভিদ পদার্থ, যেমন: পিট, বোগ এবং কম্পোস্টে পাওয়া যয়ে। এরা সেলসিয়াস (১১৩°-১৭৩° ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় বিকাশিত হয়।
মানুষের জন্য ক্ষতিকর কিছু উঞ্চ প্রস্রবণের মাইক্রোবায়োটা:
যুক্তরাষ্ট্র রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের মতে, অ্যাকেনথোমিবাও উষ্ণ প্রম্রবণের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি চোখ অথবা উন্মুক্ত ক্ষত এর মাধ্যমে প্রবেশ করে।[৩৩]
আর্জেন্টিনার উত্তরাঞ্চচলে অবস্থিক রিও হোন্ডো উষ্ণ বসন্তগুলোকে ১৯১৮ সালে একজন পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নের অধ্যাপক পৃথিবীর সবচেয়ে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিশোধিত পানি বলে উল্লেখ করলে এটি বহুল পরিচিত হয়ে উঠে এবং এটি পৃথিবীর সর্বাধিক ভ্রমণকৃত স্থানগুলোর একটি হয়ে যায়।[৩৬]ক্যাচিউটা স্পা আর্জেন্টিনার আরও একটি জনপ্রিয় উষ্ণ প্রম্রবণ।
ইউরোপের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা প্রম্রবণগুলো ফ্রান্সের সুদেস এইগেস নামক একটি ছোট গ্রামে অবস্থিত।.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]ওভের্ন এর কেন্দ্রে অবস্থিত সুদেস এইগেস এর ৩০টি উষ্ণ প্রম্রবণের তাপমাত্রা ৪৫° সেলসিয়াস (১১৩° ফারেনহাইট) থেকে ৮০° সেলসিয়াস (১৭৬° ফারেনহাইট) এর বেশি। এই উত্তপ্ত পানি গ্রামটির নিচ দিয়ে বয়ে চলে এবং ১৪ শতক থেকে গ্রামের বসতবাড়ি এবং চার্চকে তাপ প্রদান করে। সুদেস এইগেস রোমান সম্রাজ্য থেকে বাতের চিকিৎসার জন্য পরিচিত।
অন্তরীপ গঠন সেটিংসের কার্বনেট একুইফারে তাপীয় প্রম্রবণ থাকতে পারে, যদিও তা উচ্চ তাপ প্রবাহ হারের অপরিচিত অঞ্চলে। এরকম ক্ষেত্রে তটরেখার কাছে বরাবর অবস্থিত তাপীয় প্রম্রবণগুলো, সাবেরিয়াল বা সমুদ্রগর্ভস্থ প্রম্রবণগুলো সমুদ্রের ভূ-গর্ভস্থ পানির বহিঃপ্রবাহ গঠন করে, যা সেই স্থানের ফাটল এবং কারস্টিক শিলাসমূহের মধ্যে প্রবাহিত হয়। এ কারণেই অ্যাপুলিয়া প্রদেশে (দক্ষিণ ইতালি) প্রম্রবণ সৃষ্টির কারণ। এখান থেকে কিছু গন্ধকতুল্য এবং উষ্ণ পানি আড্রিয়াটিক উপকূলীয় কিছু অর্ধ-নিমজ্জিত গুহা দিয়ে নির্গত হয়, যা ঐতিহাসিক সানতা সিজারিয়া টার্মের স্পাগুলো প্রদান করে। এই প্রম্রবণগুলো প্রচীন কাল থেকে পরিচিত (খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে অ্যারিস্টটল) এবং তাদের ভূ-তাপীয় পানি পদার্থ বৈজ্ঞানিক আর রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার উপর নির্ভরশীল।[৩৭]
সিলিকা সমৃদ্ধ আদান-প্রদান নিল পাঠেরা, মঙ্গল গ্রহের সিরিটিস মেজর এর আগ্নেয় কাডেরায় পাওয়া যায়। এটিকে একটি উষ্ণ প্রম্রবণ সিস্টেমের ভগ্নাবশেষ বলে বিবেচনা করা হয়।[৪০]
প্রথা এবং চর্চা উষ্ণ প্রম্রবণের প্রেক্ষিতে করা হয়। প্রবেশের পূর্বে গোশলের উদ্দেশ্যে আসা মানুষদের নিজেদের ধৌত করা একটি সাধারণ চর্চা যাতে তাদের দ্বারা পানি দূষিত না হয় (সাবানসহ বা সাবান ছাড়া)।[৪১] জাপানসহ অনেক দেশে সুইমস্যুট সহ কোনো কাপড় ছাড়া প্রম্রবণের পানিতে প্রবেশ করা বাধ্যতামূলক। সাধারণত এরকম ক্ষেত্রে পুরুষ এবং নারীদের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থাপনা বা সময় থাকে। কিছু দেশে সার্বজনীন উষ্ণ প্রম্রবণের ক্ষেত্রে সুইমস্যুট বাধ্যতামূলক।
বর্তমানে জীবাশ্ম জ্বালানি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, তাই উষ্ণ প্রস্রবণে ধারণকৃত ভূ-তাপীয় শক্তির (Geothermal energy) ব্যবহারের ব্যাপারে উংসাহ প্রদান করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়া, ইটালী ও আইসল্যান্ডে এ ধরনের ভূ-তাপীয় শক্তির ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, চট্টগ্রাম জেলা ও সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চলে অনেক প্রাকৃতিক ঝর্ণা আছে। পর্বতমালার পাদদেশের এক বা একাধিক প্রস্রবণ হচ্ছে প্রতিটি পার্বত্য নদীর উৎস। প্রকৃতপক্ষে, প্রতিটি ছোট পাহাড়ের পাদদেশেই ঝর্ণা রয়েছে। নিকটবর্তী গ্রামবাসীরা এগুলো থেকে পানি সংগ্রহ করে।ধারণা করা হয় যে, বান্দরবানের বগাকাইন হ্রদ বা বগা লেকের নিচে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ রয়েছে এবং লেকটির পানির রং ওই ঝর্নার পানি ক্ষরণের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। মহাভারতের দক্ষ-যজ্ঞ পর্বে বর্ণনা করা শাক্তপীঠের উৎস সংক্রান্ত কাহিনী অনুসারে বিষ্ণুর চক্রের আঘাতে খন্ড-বিখন্ড সতীর (দুর্গার অন্য নাম) দেহের দক্ষিণহস্তটি সীতাকুন্ড এলাকার একটি উষ্ণ প্রস্রবণের সন্নিকটে পড়ে। বর্তমানে ঝর্নাটির কোনো অস্তিত্ব নাই। তবে সে স্থানে প্রতিষ্ঠিত চন্দ্রনাথ মন্দিরের ঠিব নিচে শম্ভুনাথের মন্দির উষ্ণ প্রস্রবণটির স্মৃতি বহন করছে।[৪২]
↑Don L. Leet (১৯৮২)। Physical Geology (6th সংস্করণ)। Englewood Cliffs, NJ: Prentice-Hall। আইএসবিএন978-0-13-669706-0। ২ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০২০। A thermal spring is defined as a spring that brings warm or hot water to the surface. Leet states that there are two types of thermal springs; hot springs and warm springs.
↑John W. Lund; James C. Witcher (ডিসেম্বর ২০০২)। "Truth or Consequences, New Mexico- A Spa City"(পিডিএফ)। GHC Bulletin। 23 (4)। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০২০।
↑W. F. Ponder (২০০২)। "Desert Springs of Great Australian Arterial Basin"। Conference Proceedings. Spring-fed Wetlands: Important Scientific and Cultural Resources of the Intermountain Region। ২০০৮-১০-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-০৬।
↑"Archived copy"। ২০১৪-০২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৯-২৮।
↑Zuffianò, L. E.; Polemio, M.; Laviano, R.; De Giorgio, G.; Pallara, M.; Limoni, P. P.; Santaloia, F. (২০১৮-০৭-০৬)। "Sulphuric acid geofluid contribution on thermal carbonate coastal springs (Italy)"। Environmental Earth Sciences (ইংরেজি ভাষায়)। 77 (13): 517। আইএসএসএন1866-6299। ডিওআই:10.1007/s12665-018-7688-8।
↑Shinji Izumiyama; Kenji Yagita; Reiko Furushima-Shimogawara; Tokiko Asakura; Tatsuya Karasudani; Takuro Endo (জুলাই ২০০৩)। "Occurrence and Distribution of Naegleria Species in Thermal Waters in Japan"। J Eukaryot Microbiol। 50: 514–5। ডিওআই:10.1111/j.1550-7408.2003.tb00614.x। পিএমআইডি14736147।
↑Yasuo Sugita; Teruhiko Fujii; Itsurou Hayashi; Takachika Aoki; Toshirou Yokoyama; Minoru Morimatsu; Toshihide Fukuma; Yoshiaki Takamiya (মে ১৯৯৯)। "Primary amebic meningoencephalitis due to Naegleria fowleri: An autopsy case in Japan"। Pathology International। 49 (5): 468–70। ডিওআই:10.1046/j.1440-1827.1999.00893.x। পিএমআইডি10417693।
↑Miyamoto H, Jitsurong S, Shiota R, Maruta K, Yoshida S, Yabuuchi E (১৯৯৭)। "Molecular determination of infection source of a sporadic Legionella pneumonia case associated with a hot spring bath"। Microbiol. Immunol.। 41 (3): 197–202। ডিওআই:10.1111/j.1348-0421.1997.tb01190.x। পিএমআইডি9130230।
↑Santaloia, F.; Zuffianò, L. E.; Palladino, G.; Limoni, P. P.; Liotta, D.; Minissale, A.; Brogi, A.; Polemio, M. (২০১৬-১১-০১)। "Coastal thermal springs in a foreland setting: The Santa Cesarea Terme system (Italy)"। Geothermics। 64: 344–361। আইএসএসএন0375-6505। ডিওআই:10.1016/j.geothermics.2016.06.013।