ইন্সট্রুমেন্ট অফ অ্যাক্সেশন একটি আইনি দলিল যা প্রথম ভারত সরকার আইন ১৯৩৫ দ্বারা প্রবর্তিত হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের সার্বভৌমত্বের অধীনে থাকা প্রতিটি দেশীয় শাসককে ভারত বা পাকিস্তানের নতুন রাজ্যগুলির একটিতে যোগ দেবার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল যা ব্রিটিশ দ্বারা ভারত বিভাজন নামে পরিচিত।
দেশীয় রাজা দ্বারা এই একীভূতকরণের দলিল টি ঠিকঠাক ভাবে ভারত বা পাকিস্তানে অংশগ্রহণ বিষয়ে কার্যকরী হয়েছিল । মূলত তিনটি বিষয় ছিলঃ- প্রতিরক্ষা, বিদেশ মন্ত্রক, যোগাযোগ ব্যবস্থা ।
ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতবর্ষে ৫৬৫ টি দেশীয় রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। এগুলি যথাযথভাবে ব্রিটিশ ভারতের অংশ ছিল না, ব্রিটিশ মুকুটের সম্পত্তিতে পরিণত হয় নি, তারা অধীনতামূলক মিত্রতা নীতিতে
চুক্তিবদ্ধ ছিল।
ভারত সরকার আইন ১৯৩৫ সালে এই একীভূতকরণের ধারনাটি প্রবর্তন করেন , যেখানে কোনও একজন দেশীয় রাজ্য এর শাসক তার রাজ্যকে 'ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া'তে প্রবেশ করাতে পারেন। ফেডারেশন ধারণাটি প্রথমে ভারতীয় রাজকুমারদের দ্বারা বিরোধিতা করা হয়েছিল, তবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুতে এর স্বীকৃতি লাভ করেছিল।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগের জন্য তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে এবং তাদের ভবিষ্যতের প্রশ্নটি দোদুল্যমান হয়ে দাঁড়ায়।তারা যেহেতু ব্রিটিশ চিল না তাই তাদের ভারত ও পাকিস্তান এই দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত করতে পারেনি । ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭ এর বিধান অনুসারে দেশীয় রাজ্যগুলির উপর ব্রিটিশের কর্তৃত্ব ১৫ ই আগস্ট ১৯৪৭ এর পর থেকেই বাতিল হয়ে যাবে । এর ফল্র দেশীয় রাজারা সম্পূর্ণ ভাবে স্বাধীন হয়ে যাবে যদিও তাদের প্রতিরক্ষা,অর্থ এবং অন্যান্য পরিকাঠামোগুলির জন্য পুরোপুরি ভারত সরকারের উপর নির্ভরশীল ছিল ।স্বাধীনতার পাশাপাশি তাদের এটাও সিদ্ধান্ত নেবার প্রয়োজন হয়ে পড়ে যে তারা ভারত না পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হবে না স্বাধীন থাকবে ।
একীভূতকরনের দলিল টি হল এক প্রকার আইনি নথি যাতে এই একীভূতকরনটি ঠিক কোন বিষয়ে হবে সেই বিষয়ে । এটি ভারত সরকার দ্বারা কার্যকর হয়েছিল যার একদিকে ছিল ভারত সরকার আর অন্য দিকে চিল দেশীয় রাজ্য গুলি ।
এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টি ছিল ২৬ শে অক্টোবর ,১৯৪৭ সালে মহারাজা হরি সিং এর সাথে কাশ্মীর সংযুক্তকরন বিষয়ে ।এই চুক্তি ভারতকে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ প্রদান করেছিল । এটি ২৭ শে অক্টোবর ,১৯৪৭ সালে গৃহীত হয়েছিল বার্মার লর্ড মাউন্টব্যাটেন,ভারতের গভর্নর জেনারেল দ্বারা । এর মূল অংশ টি নিম্নরূপ(তফসিল বাদে উল্লিখিত তৃতীয় পয়েন্টে);- [১] ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ১৯৪৭-এর মতে, ১৯৪৭ সালের আগস্টের পনেরো তারিখ থেকে ভারত নামে পরিচিত একটি স্বতন্ত্র আধিপত্য রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং ভারত সরকার আইন, ১৯৩৫ অনুসারে এধরনের বাদ, সংযোজন, অভিযোজন এবং গভর্নর-জেনারেল হিসাবে পরিবর্তনগুলি আদেশ দ্বারা নির্দিষ্ট করে, ভারতের আধিপত্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।
এবং যেখানে গভর্নর-জেনারেল কর্তৃক ভারত সরকার আইন, ১৯৩৫ অনুসারে রূপান্তরিত হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছে যে কোনও ভারতীয় দেশীয় রাজ্য এর শাসক দ্বারা এই একীভূতকরনের দলিল কার্যকর করতে পারবে ।
সুতরাং ,এখন, আমি শ্রীমান ইন্দ্র মহান্দার রাজরাজেশ্বর মহারাজধীরাজ শ্রী হরি সিংজি, জম্মু ও কাশ্মীরের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শাসক নরেশ তথা তিব্বতাদি দেশাদিপতি, আমার সার্বভৌমত্বের অনুশীলনে এবং আমার বক্তব্য অনুযায়ী আমার রাজ্য এইভাবে আমার এই রাজ্যপালনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি এবং
আমার হাতে আজকের এই ২৬শে অক্টোবর ১৯৪৭ সালের এই দিনটিতে
হরি সিং
জম্মু ও কাশ্মীরের মহারাজাধিরাজ
——————————————————————————————————————————
আমি এই একীভূতকরনের দলিল টিতে স্বাক্ষর করলাম ,আজকের দিন ২৭ শে অক্টোবর ১৯৪৭
(বার্মার মাউন্টব্যাটেন,ভারতের গভর্নর জেনারেল )