এ৩১৮ | |
---|---|
এয়ার ফ্রান্সের একটি এয়ারবাস এ৩১৮, এটির বৃহত্তম পরিচালনাকারী | |
ভূমিকা | সংকীর্ণ-দেহ জেট এয়ারলাইনার |
উৎস দেশ | বহুজাতিক[ক] |
নির্মাতা | এয়ারবাস |
প্রথম উড্ডয়ন | ১৫ জানুয়ারি ২০০২ |
প্রবর্তন | ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্সের সঙ্গে ২০০৩ সালে |
অবস্থা | পরিষেবায় নিযুক্ত |
মুখ্য ব্যবহারকারী | এয়ার ফ্রান্স ট্যারম |
নির্মিত হচ্ছে | ২০০১–২০১৩ |
নির্মিত সংখ্যা | ৮০[১] |
যা হতে উদ্ভূত | এয়ারবাস এ৩১৯ |
এয়ারবাস এ৩১৮ হল এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের সবচেয়ে ছোট ও সর্বনিম্ন বহুসংখ্যক বৈকল্পিক বিমান। এ৩১৮ ১০৭ জন থেকে ১৩২ জন যাত্রী বহন করে এবং এর সর্বোচ্চ উড্ডয়ন পরিসীমা ৫,৭০০ কিমি (৩,১০০ মাইল)।[২] বিমানটির যন্ত্রাংশের চূড়ান্ত সংযোজন জার্মানির হামবুর্গে সংঘটিত হয়। এটি প্রাথমিকভাবে স্বল্প-পরিসরের পরিষেবার উদ্দেশ্য তৈরি করা হয়।
অন্যান্য সকল এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের বৈকল্পিকের সঙ্গে উড়োজাহাজটি একটি সাধারণ টাইপ রেটিং ভাগভাগি করে, যার ফলে বিদ্যমান এ৩২০ পরিবারের বিমানচালকদের অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন ছাড়াই বিমান চালানোর অনুমতি দেওয়া। এটি খাড়া অ্যাপ্রোচ পরিচালনার জন্য ইউরোপীয় এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি দ্বারা প্রত্যয়িত বৃহত্তম বাণিজ্যিক বিমান, লন্ডন সিটির মতো বিমানবন্দরে উড়ানের অনুমতি প্রাপ্ত।[৩]
এ৩১৮ ২০০৩ সালের জুলাই মাসে ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্সের সঙ্গে পরিষেবাতে প্রবেশ করে। অন্যান্য এয়ারবাস এ৩২০ পরিবারের বৈকল্পিকের সাপেক্ষে, এটি মোট ৮০ টি বিমানের ক্রয় আদেশ সহ অল্প সংখ্যায় বিক্রি হয়েছে এবং ২০২১ সালের ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত ক্রয় আদেশ খালি ছিল।[১] এয়ার ফ্রান্স এয়ারবাস এ৩১৮-এর বৃহত্তম পরিচালনাকারী ছিল। এই বিমানের শূন্য সংখ্যক দুর্ঘটনা নথিভুক্ত রয়েছে।
এয়ারবাস এ৩১৮ হল একটি প্রত্যাহারযোগ্য তিন চাকাত্তয়ালা ল্যান্ডিং গিয়ার সহ একটি ছোট বাণিজ্যিক সংকীর্ণ-দেহ (একক-আইল) বিমান এবং দুটি উইং পাইলন-মাউন্ট করা টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। এ৩১৮-এর জন্য দুটি সরবরাহকারী টার্বোফ্যান ইঞ্জিন সরবরাহ করে, সরবরাহকারী সংস্থাদুটি হল সিএফএম৫৬-৫বি ইঞ্জিন সহ সিএফএম ইন্টারন্যাশনাল ও পিডব্লিউ৬০০০ ইঞ্জিন সহ প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি। এটি একক উল্লম্ব স্টেবিলাইজার ও রুডার যুক্ত একটি প্রচলিত টেল ইউনিট সহ একটি নিম্ন-পাখার ক্যান্টিলিভার মনোপ্লেন।
সামগ্রিকভাবে, এ৩১৮ বিমানটি এ৩২০-এর থেকে ছয় মিটারের বেশি খাটো ও প্রায় ৩ টন (৬,৬০০ পাউন্ড) হালকা। এটিতে হ্রাসকৃত বাহুর ক্ষতিপূরণ হিসাবে একটি বড় উল্লম্ব স্টেবিলাইজার রয়েছে। যদিও প্রাথমিক ধারণাসমূহ বোয়িং ৭৩৭-৩০০-শৈলীযুক্ত পৃষ্ঠীয় পাখনা সম্প্রসারণের সঙ্গে বিমানটিকে চিত্রিত করেছিল,[৪] চূড়ান্ত নকশায় একটি পাখনার ডগা সম্প্রসারণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যা এটিকে অন্যান্য এ৩২০ বৈকল্পিকের তুলনায় ৭৫ সেন্টিমিটার (৩০ ইঞ্চি) লম্বা করে তোলে। অন্যান্য বৈকল্পিকে প্রশিক্ষিত বিমানচালক অতিরিক্ত কোনো শংসাপত্র ছাড়াই এ৩১৮ বিমান উড়াতে সক্ষম, কারণ এতে একটি সাধারণ ফ্লাইট ডেক ও এর ভগিনী বিমানের মতো একই ধরনের রেটিং রয়েছে। এ৩১৮-কে এ৩১৮-১০০ হিসাবেও উল্লেখ করা হয়।[৫]
এ৩১৮ বিমানটি ৫৯ টন (৫৮ দীর্ঘ টন; ৬৫ সংক্ষিপ্ত টন) ও ২,৭৫০ কিলোমিটার (১,৪৮০ মাইল) উড়ান পরিসীমার ভিত্তি মডেল থেকে ৬৮ টন (৬৭ দীর্ঘ টন; ৭৫ সংক্ষিপ্ত টন) ও ৬,০০০ কিলোমিটার (৩,২০০ মাইল) উড়ান পরিসীমার সংস্করণ সহ বিভিন্ন প্রকারের সর্বোচ্চ উড্ডয়ন ওজনের (এমটিওডব্লিউ) সঙ্গে উপলব্ধ। সিএফএম৫৬-৫বি৮/পি ইঞ্জিন দিয়ে সজ্জিত হলে, এ৩১৮ একটি ৫৬,০০০ কেজি বা ৬৮,০০০ কেজি (১,২৩,০০০ বা ১,৫০,০০০ পাউন্ড) এমটিওডব্লিউ-এর সঙ্গে উপলব্ধ হয়। সিএফএম৫৬-৫বি৯/পি ইঞ্জিন দিয়ে সজ্জিত হলে, এ৩১৮ একটি ৫৯,০০০ কেজি বা ৬৮,০০০ কেজি (১,৩০,০০০ বা ১,৫০,০০০ পাউন্ড) এমটিওডব্লিউ-এর সঙ্গে উপলব্ধ হয়।[৬] এটিকে স্বল্প এমটিওডব্লিউ বৈশিষ্ট্য আঞ্চলিক রুটসমূহে অর্থনৈতিকভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম করে, যখন উড়ান পরিসীমা পরিত্যাগ করে এবং এটিকে উচ্চতর এমটিওডব্লিউ বৈশিষ্ট্য প্রান্তিক রুটে এ৩২০ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পরিপূরক করার অনুমতি দেয়। এ৩১৮-এর হালকা ওজন এটিকে এ৩২০-এর চেয়ে ১০% বেশি কার্যক্ষম উড়ান পরিসীমা প্রদান করে, বিমানটি এমন কিছু রুটে পরিচালনার করার অনুমতি দেয় যা এ৩২০ বিমান করতে অক্ষম হবে: উদাহরণস্বরূপ- লন্ডন–নিউইয়র্ক, পার্থ–অকল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর–টোকিও।
ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সেফটি এজেন্সি (ইএএসএ) ২০০৬ সালের মার্চ মাসে এয়ারবাস এ৩১৮ বিমানে একটি পরিবর্তিত নিয়ন্ত্রণ সফ্টওয়্যার বর্ধিতকরণ প্রত্যয়িত করেছে, যা বিমানটিকে খাড়া অভিগমন সম্পাদন করার অনুমতি দেওয়ার জন্য নকশা করা হয়েছে।[৭] উড়োজাহাজটি খাড়া অভিগমন পরিচালনার জন্য ইএএসএ দ্বারা প্রত্যয়িত বৃহত্তম বাণিজ্যিক বিমান।[৩] ক্রু দ্বারা স্ট্রীপ অ্যাপ্রোচ ফাংশন নির্বাচন করা হলে বিমানটি অবতরণ কনফিগারেশনে থাকা অবস্থায় অতিরিক্ত টেনে আনতে কিছু স্বয়ংক্রিয় স্পয়লার প্যানেলের মাধ্যমে সফ্টওয়্যারটি বিমানের নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে।[৭] এটি ক্রুদের বিকল্প শ্রবণ সতর্কতা প্রদান করে এবং অবতরণের সময় ১২০ (৩৭ মিটার) ফুটের কম দূরত্বে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্পয়লার স্থাপনার পরিবর্তন করে।[৭] বিমানটিকে খাড়া অভিগমন পদ্ধতি ৫.৫° অবধি অবতরণ কোণে অভিগমন সম্পাদন করতে দেয়, যা সাধারণ অভিগমনেরর জন্য আদর্শ কোণ ৩°-এর বিপরী।[৩]
লন্ডন সিটি বিমানবন্দরে অবতরণের মাধ্যমে বিমানের খাড়া অভিগমন ও ছোট রানওয়ের কার্যকারিতা প্রমাণ করার জন্য ২০০৬ সালের মে মাসে একটি পরীক্ষামূলক উড়ান পরিচালিত হয়েছিল, যেখানে এই ধরনের খাড়া অভিগমনের প্রয়োজন হয়। পরীক্ষামূলক উড়ানটি উক্ত বিমানবন্দরে সীমিত কৌশল ও পার্কিংয়ের জায়গার সঙ্গে বিমানের সামঞ্জস্যতা নিশ্চিত করেছে।[৭]
যদিও এ৩২০ পরিবারের বিমানের যন্ত্রাংশের চূড়ান্ত সংযোজন ফ্রান্সের তুলুসে; জার্মানির হামবুর্গ; চীনের থিয়েনচিন; ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামার মোবাইলে সংঘটিত হয়, এয়ারবাস এ৩১৮-এর যন্ত্রাংশের চূড়ান্ত সংযোজন জার্মানির হামবুর্গে সংঘটিত হয়।[৮] এয়ারবাস এ৩১৮-এর প্রথম উড়ানটি ২০০২ সালের ১৫ই জানুয়ারি হামবুর্গের ফিঙ্কেনওয়ার্ডার এয়ারফিল্ড থেকে শুরু হয়েছিল।[৯] ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্সের নিকট ২০০৩ সালের ২২শে জুলাই প্রথম গ্রাহক সরবরাহ শুরু করা হয়েছিল।[১০] সরকার, নির্বাহী ও ব্যক্তিগত জেট এবং অপ্রকাশিত পরিচালনাকারী ছাড়াও ৬৭ টি এ৩২০ পাঁচটি বিমান সংস্থার সঙ্গে ২০১৭ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিষেবাতে নিয়োজিত ছিল।[১] বিমানসংস্থার পরিষেবা থেকে অবসর নেওয়া বেশিরভাগ এ৩১৮ বিমানের ইঞ্জিন ও উপাদানসমূহ পুরো বিমানের চেয়ে বেশি মূল্যবান হওয়ার কারণে বাতিল করা হয়েছে। ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইন্স প্রথম গ্রাহক ছিল, যারা ২০০৩ সাল থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে এ৩১৮ বিমান ক্রয় করেছিল, তারা তাদের শেষ এ৩১৮ বিমানকে ২০১৩ সালের মধ্যে অবসর দিয়েছিল।[১১]
২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত, এয়ারবাস এ৩১৮-এর পরিচালনাকারীরা হল:[১][১২]
দেশ | পরিচালনাকারী | কার্যক্ষম |
---|---|---|
ফ্রান্স | এয়ার ফ্রান্স | ১৮ |
রোমানিয়া | ট্যারম | ৪ |
বিবিধ | সরকার, নির্বাহী ও ব্যক্তিগত জেট | ১৯ |
বিবিধ | অপ্রকাশিত পরিচালনাকারী | ১৯ |
মোট | ৬০ |
ক্রয়াদেশ | সরবরাহ | |||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ধরন | মোট | বকেয়া | মোট | ২০১৭ | ২০১৬ | ২০১৫ | ২০১৪ | ২০১৩ | ২০১২ | ২০১১ | ২০১০ | ২০০৯ | ২০০৮ | ২০০৭ | ২০০৬ | ২০০৫ | ২০০৪ | ২০০৩ |
এ৩১৮ | ৮১ | — | ৮১ | — | — | — | — | ২ | ৩ | ২ | ২ | ৬ | ১৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ৯ |
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষ পর্যন্ত তথ্য। ২০১৭ সালের ৭ই অক্টোবর হালনাগাদ করা হয়েছে।[১]
ককপিট ক্রু | দুই | |||
---|---|---|---|---|
প্রস্থান সীমা | ১৩৬[১৩][১৪] | |||
১-শ্রেণির সর্বোচ্চ আসন[১৫] | ২৯–৩০ ইঞ্চি (৭৪–৭৬ সেমি) পিচে ১৩২ জন | |||
১-শ্রেণি, সাধারণ[১৫] | ৩২ ইঞ্চি (৮১ সেমি) পিচে ১১৭ জন | |||
২-শ্রেণি, সাধারণ[১৫] | ১০৭ (৮এফ @ ৩৮ ইঞ্চি, ৯৯ওয়াই @ ৩২ ইঞ্চি) | |||
পণ্য বহন ক্ষমতা | ২১.২ মি৩ (৭৫০ ঘনফুট) | |||
দৈর্ঘ্য | ৩১.৪৪ মি (১০৩ ফু ২ ইঞ্চি) | |||
ডানার বিস্তার | ৩৪.১০ মি (১১১ ফু ১১ ইঞ্চি) | |||
ডানা এলাকা | ১২২.৪ মি২ (১,৩১৮ ফু২)[১৬] | |||
উইং সুইপব্যাক | ২৫ ডিগ্রী[১৬] | |||
লেজের উচ্চতা | ১২.৫৬ মি (৪১ ফু ২ ইঞ্চি) | |||
কেবিনের প্রস্থ | ৩.৭০ মি (১২ ফু ২ ইঞ্চি) | |||
বিমানদেহের প্রস্থ | ৩.৯৫ মি (১৩ ফু ০ ইঞ্চি) | |||
পরিচালনাগত খালি ওজন | ৩৯,৫০০ কেজি (৮৭,১০০ পা)[১৫] | |||
সর্বোচ্চ শূন্য-জ্বালানী ওজন (এমজেডএফডব্লিউ) | ৫৪,৫০০ কেজি (১,২০,২০০ পা) | |||
সর্বোচ্চ অবতরণ ওজন (এমএলডব্লিউ) | ৫৭,৫০০ কেজি (১,২৬,৮০০ পা) | |||
সর্বোচ্চ উড্ডয়ন ওজন (এমটিওডব্লিউ) | ৬৮,০০০ কেজি (১,৫০,০০০ পা) | |||
ক্রুজিং গতি | ম্যাক ০.৭৮ (৫৯৩.৭৪ মা/ঘ; ৯৫৫.৫৩ কিমি/ঘ)[১৭] | |||
সর্বোচ্চ গতি | ম্যাক ০.৮২ (৬২৪.১৯ মা/ঘ; ১,০০৪.৫৪ কিমি/ঘ) | |||
পরিসীমা (সাধারণ পেলোড) | ৫,৭৪০ কিমি (৩,১০০ নটিক্যাল মাইল) | |||
এসিজে-এর পরিসীমা | ৪,২০০ নটিক্যাল মাইল (৭,৮০০ কিমি)[১৮] | |||
উড্ডয়ন (এমটিওডব্লিউ, এসএল, আইএসএ) | ১,৭৮০ মি (৫,৮৪০ ফু)[১৮] | |||
অবতরণ (এমএলডব্লিউ, এসএল, আইএসএ) | ১,২৩০ মি (৪,০৪০ ফু)[১৮] | |||
জ্বালানি ধারন ক্ষমতা | ২৪,২১০ লি (৫,৩৩০ ইম্পেরিয়াল গ্যালন; ৬,৪০০ ইউএস গ্যালন) | |||
সিলিং | ৩৯,১০০–৪১,০০০ ফু (১১,৯০০–১২,৫০০ মি)[১৩] | |||
ইঞ্জিন (×২) | সিএফএম৫৬-৫বি ৬৮.৩ ইঞ্চি (১.৭৩ মি) পাখা পিডব্লিউ৬০০০এ, ৫৬.৫ ইঞ্চি (১.৪৪ মি) পাখা | |||
থ্রাস্ট (×২) | ৯৬–১০৬ কিN (২২,০০০–২৪,০০০ পা-বল) |