নারীদের রাজকীয় নৌবাহিনী সেবা (ওমেন্স রয়্যাল নেভাল সার্ভিস, সংক্ষেপে ডব্লিউআরএনএস, যেটাকে রেন্স হিসেবে উচ্চারণ করা হয়) ব্রিটিশ নৌবাহিনীর নারী শাখা ছিল। এটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯১৭ সালে তৈরী করা হয়, দুই বছর পর এটি ভেঙ্গে দেওয়া হলেও ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরু হওয়ার সময় পুনরায় তৈরী করা হয়, ১৯৯৩ সালে এটিকে মূলধারার নৌবাহিনীর সাথে যুক্ত করা হয়। নারীদের রাজকীয় নৌবাহিনী সেবাতে ছিল পাচক, করণিক, ওয়্যারলেস টেলিগ্রাফিস্ট, রাডার প্লটার, ওয়েপোন্স এ্যানালিস্ট, রেঞ্জ এ্যাসেসর, ইলেক্ট্রিশিয়ান এবং এয়ার মেকানিক অর্থাৎ নন-কমব্যাট (অযুদ্ধ) এবং কমব্যাট সাপোর্ট (যুদ্ধ সমর্থন বা সাহায্য) ডিউটি (দায়িত্ব) পালন করাই ছিল নারীদের রাজকীয় নৌবাহিনী সেবার (ডব্লিউআরএনএস, রেন্স) কাজ।[১][২][৩]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় এই ডব্লিউআরএনএস (রেন্স) গড়ে ওঠে। ১৯১৮ সালের ১০ অক্টোবর ১৯ বছর বয়সী 'জোসেফিন কার' ছিলেন প্রথম 'রেন' (এ বাহিনীর সদস্যদের রেন বলা হত) যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যান যখন তার কর্মস্থল জাহাজ 'আরএমএস লেইন্সটার'কে টর্পেডো মারা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে রেন্সের সদস্যসংখ্যা ছিল ৫,৫০০ জন যাদের মধ্যে ৫০০ জন কর্মকর্তা ছিলেন।
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রেন্স পুনরায় জেগে ওঠে। ১৯৪৪ সালে দেখা যায় যে এটার ৭৫,০০০ নারী সদস্য আছে। যুদ্ধ শেষে ১০০ নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞাপনে শ্লোগান দেওয়া থাকত যে, 'নারীরা রেন্সে যোগ দিন, পুরুষদেরকে যুদ্ধ করতে দিন', যেহেতু রেন্সের কাজ সম্মুখ সমরে জড়ানো ছিলনা।
১৯৯৩ সালে রেন্সকে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
১৯৯০ এর অক্টোবরে 'উপসাগরীয় যুদ্ধ' চলাকালীম সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সবসময় পুরুষবহনকারী জাহাজ 'এইচএমএস ব্রিলিয়ান্ট' এ প্রথমবারের মত নারী সদস্য ঢুকানো হয়।
১৯৯৩ এর আগে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর সকল নারী সদস্য এই ডব্লিউআরএনএস (রেন্স) এর সদস্য ছিলেন তবে সেবিকারা (নার্স) বাদে কারণ তারা ছিলেন 'কুইন আলেকজান্দ্রা'স রয়্যাল নেভাল নার্সিং সার্ভিস' (রাণী আলেকজান্দ্রার রাজকীয় নৌবাহিনী সেবিকা শাখা) এবং এখনও (২০১৬) তারা এটাতেই ঢোকেন।
স্মৃতি কথা