![]() ১৯৫৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ওয়াকার হাসান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ওয়াকার হাসান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | অমৃতসর, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে - ভারত) | ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৩২|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০[১] করাচি, সিন্ধু প্রদেশ, পাকিস্তান | (বয়স ৮৭)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | পারভেজ সাজ্জাদ (ভ্রাতা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১১) | ১৬ অক্টোবর ১৯৫২ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২১ নভেম্বর ১৯৫৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ জুলাই ২০১৯ |
ওয়াকার হাসান (উর্দু: وقارحسن; ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ – ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০[২]) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অমৃতসর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে করাচি, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় ও সার্ভিসেস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে ডানহাতে বোলিং করতেন তিনি।
লাহোরের গভর্নমেন্ট কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন ওয়াকার হাসান। এখানে অবস্থানকালে ক্রিকেট দলের সাথে খেলতেন তিনি।[৩] ১৯৫১ সালে তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া পাকিস্তান ঈগলেটসের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন।[৩] আকর্ষণীয় ভঙ্গীমায় ডানহাতে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটাতে তার জুড়ি মেলা ভার ছিল।[৪]
১৯৪৮-৪৯ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত ওয়াকার হাসানের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৭ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে হাসান মাহমুদ একাদশের সদস্যরূপে এল. ডব্লিউ. ক্যানন একাদশের বিপক্ষে খেলে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস খেলেন।[৫] ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমের কায়েদ-ই-আজম ট্রফি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় করাচি ব্লুজকে নেতৃত্ব দিয়ে শিরোপা জয় করেন।[৬] ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমের নিজস্ব শেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায়ও নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জয়ী করেছিলেন।[৭]
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একুশ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ওয়াকার হাসান। ১৬ অক্টোবর, ১৯৫২ তারিখে দিল্লিতে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২১ নভেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে লাহোরে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
১৯৫২ সালে পাকিস্তান দল তাদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম টেস্টে ভারতের মুখোমুখি হয়। এ সফরে তিনি পাকিস্তান দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তৃতীয় টেস্টের প্রথমদিনে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৬০/৬ থাকাকালে ৮১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৫ রান তুলে দলের বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখেন। তবে, স্বাগতিক ভারত দল ঠিকই ঐ টেস্টে জয় তুলে নিয়েছিল। সিরিজের পঞ্চম টেস্টে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে পাঁচ ঘণ্টায় ৯৭ রানের ইনিংসটি ড্রয়ের দিকে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন।
১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দল পাকিস্তান গমন করে। লাহোর টেস্টে নিজস্ব একমাত্র টেস্ট সেঞ্চুরির সন্ধান পান। ৪৩০ মিনিটে ক্রিজে অবস্থান করে ১৮৯ রান তুলেন তিনি। এরপর আরও পাঁচ টেস্টে অংশ নিলেও অর্ধ-শতরানের কোঠায় পৌঁছুতে পারেননি।[৮] দলীয় সংগ্রহ ১১১/৬ থাকাবস্থায় মাঠে নামেন।[৯] ইমতিয়াজ আহমেদের সাথে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩০৯ রান যোগ করেন। তার সংগৃহীত ১৮৯ রান পাকিস্তানের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের মর্যাদা পায়। তবে, পরদিনই ইমতিয়াজ আহমেদ ২০৯ রান তুলে তার এ সংগ্রহকে ছাপিয়ে যান ও তৎকালীন সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের পাকিস্তানি ইনিংস করেন।[১০] নিউজিল্যান্ড দল স্বল্প ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল।
১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত বেশ কয়েক বছর জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে কাজ করেন। তন্মধ্যে, ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে স্বদেশে অতিথি ভারত দলকে ৩-০ ব্যবধানে পরাজয়কালে প্রধান নির্বাচক ছিলেন।[৩]
১৯৫৪ সালে লাহোরে কাজের সন্ধানে যান। করাচিতে পাকিস্তানে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টে সিনেমা পরিদর্শক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬০-এর দশকে ব্যবসায়িক কাজে যুক্ত ছিলেন তিনি।[৩] পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুডস লিমিটেডের কর্পোরেট পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।[১১] ২০০২ সালে ক্রিকেট সাংবাদিক কামার আহমেদের সহায়তায় ‘ফর ক্রিকেট এন্ড কান্ট্রি: অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।[১২]
ওয়াকার ভারতের প্রথমদিকের চিত্রনায়িকা সুলতানা রাজ্জাকের মেয়ে জামিলা রাজ্জাককে বিয়ে করেন। জামিলা রাজ্জাক ভারতের প্রথম মহিলা চলচ্চিত্র পরিচালক ফাতিমা বেগমের নাতনী এবং ভারতের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র আলম আরা’র শীর্ষ অভিনেত্রী জুবেইদার ভাতিজি ছিলেন। জুবেইদা, জামিলা রাজ্জাকের মা সুলতানার ছোট বোন ছিলেন।
২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৮৭ বছর বয়সে ওয়াকার মারা যান। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান এহসান মানি এতে শোক প্রকাশ করেন ও বলেন, "পাকিস্তানের ক্রিকেটের জন্য এটি একটি দুঃখের দিন কেননা আজ আমরা আমাদের শেষ নায়ককে হারিয়েছি, যিনি ১৯৫২ সালে বিশ্ব ক্রিকেটের মানচিত্রে আমাদের তুলে ধরেছিলেন"।[১৩]
তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা পারভেজ সাজ্জাদ পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।