কলানিধি নারায়ণন | |
---|---|
জন্ম | কলানিধি গণপতি ৭ ডিসেম্বর ১৯২৮ তামিলনাড়ু, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ চেন্নাই, ভারত | (বয়স ৮৭)
পেশা | ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, নাচের শিক্ষক |
কর্মজীবন | ১৯৪০-১৯৪৪; ১৯৭৩-২০১৬ |
বর্তমান গোষ্ঠী | মাদ্রাজ সংগীত একাডেমি [১] |
নৃত্য | ভরতনাট্যম |
কলানিধি নারায়ণন (৭ ডিসেম্বর ১৯২৮ - ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬) একজন ভারতীয় নৃত্যশিল্পী এবং ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যে ভরতনাট্যমের শিক্ষক ছিলেন, তিনিই প্রথম অ-দেবদাসী মেয়ে ছিলেন যিনি নৃত্যের এই ধরন শিখে ১৯৩০ এর দশক ও ১৯৪০ এর দশকে মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করেছিলেন। ১৯৪০ এর দশকে তাঁর একটি সংক্ষিপ্ত নৃত্যজীবন শেষ হবার পর, তিনি ১৯৭৩ সালে আবার নৃত্যে ফিরে আসেন এবং অভিনয় এর উল্লেখযোগ্য শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি পান। [২][৩][৪]
তিনি ১৯৮৫ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন।[৫] তিনি ১৯৯০ সালে ভারতের সঙ্গীত, নৃত্য ও নাটকের জাতীয় একাডেমি সঙ্গীত নাটক একাডেমী কর্তৃক ভরতনাট্যম নৃত্যে তাঁর অবদানের জন্য সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার [৬] এবং ১৯৯৮ সালে কালিদাস সম্মান লাভ করেন। ২০১১ সালে, নাচের জন্য তাঁকে সংগীত নাটক অকাদেমি ঠাকুর রত্ন পুরস্কার প্রদান করা হয়েছিল।
সুমিত্রা ও গণপতির ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কলানিধি গণপতি [৭]। তাঁর মা তাঁকে নৃত্য শিক্ষা দিতে আগ্রহী ছিলেন এবং এটি তাঁর পিতা সমর্থন করেছিলেন। এরপর সাত বছর বয়সে তিনি বিভিন্ন গুরুর অধীনে নিবিড়ভাবে প্রশিক্ষণ নেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন, পদম ও জাভালিসের জন্য বীণা ধনমের কন্যা কামাক্ষী আম্মল, এবং কন্ঠ পাঠের জন্য মানাক্কাল শিবরাজন। কাঞ্চিপুরমের খ্যাতিমান গুরু কান্নাপ্পা পিল্লাই ছিলেন তাঁর নৃত্যের প্রধান শিক্ষক এবং তিনি বালাসরস্বতীরও শিক্ষক ছিলেন। চিন্নায়া নাইডু এবং মাইলাপোর গৌরী আম্মল তাঁকে অভিনয় (ভাবের কলা) শিখিয়েছিলেন। গৌরী আম্মল তাঁকে নিজেই অভিনয়তে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে শিখিয়েছিলেন। [২]
চেন্নাইয়ের সিনেট হাউসে মাদ্রাজ সংগীত একাডেমির এক অনুষ্ঠানে ১২ বছর বয়সে তাঁর মঞ্চ-অভিষেক (আরঙ্গেত্রম) হয়েছিল। [৭][৮] কৈশোর বয়সে, তিনি দুটি উল্লেখযোগ্য আবৃত্তি করেছিলেন, একটি ধনমানিক্কামের সাথে এবং অন্যটি কান্দাপ্পা পিল্লাইয়ের পুত্র নট্টুভানর কে গণেশনের সাথে। [৩]
তিনি ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালে মারা যান। [৯]
১৯৪০-এর দশকে যখন তাঁর মা মারা গিয়েছিলেন, তখনই তাঁর ছোট্ট নাচের জীবন শেষ হয়ে গিয়েছিল। একটি রক্ষণশীল পরিবারে তাঁর বিবাহ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য শিল্প পৃষ্ঠপোষক ওয়াই জি দোরাইস্বামী তাঁর কিশোর বয়সে তাঁর নাচ দেখেছিলেন। তিনি কলানিধিকে অনুরোধ করেন আলারমেল ভাল্লিকে অভিনয় নৃত্য শেখাতে। তাঁর প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে তাঁকে এই কাজে উৎসাহ দেওয়ায় তিনি রাজি হয়েছিলেন। ৪৬ বছর বয়সে ৩০ বছরের ব্যবধানে তাঁর নৃত্য জীবনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছিল। তিনি নৃত্যে নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলতে শুরু করেছিলেন, ভাগ্যক্রমে তাঁর কিশোর বয়সের বইগুলি ছিল। তিনি শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নৃত্য এবং আরঙ্গেত্রমে উপস্থিত থাকতে শুরু করেন। এছাড়াও তিনি ডক্টর পদ্মা সুব্রমনিয়ামের ভারতনাট্যম নৃত্য তত্ত্বের একটি কোর্সে ভর্তি হন। ধীরে ধীরে আরও ছাত্র তাঁর কাছে আসতে শুরু করে এবং পরের দশকে তিনি "অভিনয় এর সর্বাধিক কাঙ্ক্ষিত শিক্ষক" হয়ে ওঠেন। [২][৩]
২০০৩ সালের ৭ই ডিসেম্বর, বিভিন্ন নৃত্যশিল্পী ও তাঁর শিষ্যরা, তাঁর ৭৫ তম জন্মদিন উদ্যাপন করেছেন চেন্নাইয়ের লুজ কমিউনিটি হলে, এটি 'অভিনয়' এর দুই দিনের একটি সেমিনার হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল, যেখানে ভারতনাট্যমের বিশিষ্ট গুরুরা অংশ নিয়েছিলেন। এই উপলক্ষে পদম সমূহের ৪টি সিডি প্রকাশিত হয়েছিল। [৩][৮]
তাঁর উল্লেখযোগ্য শিষ্যদের মধ্যে আছেন, এ. লক্ষ্মণস্বামী (ভারত), ব্রাঘা বাসেল (ভারত), সুভশ্রী নারায়ণন (ইউএসএ), মিনাল প্রভু (ভারত), প্রিয়া গোবিন্দ (ভারত),[২] শর্মিলা বিশ্বাস,[১০] মীনাক্ষী চিতরঞ্জন (অভিনয় ), মিলানা সেভেরস্কায়া (রাশিয়া),[১১] এবং আরো অনেকে। [১২] তিনি বহু বছর ধরে অসংখ্য শিষ্যকে শিখিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অনেকেই তাঁর মতাদর্শকে নিজের করে নিয়েছেন।