কলামন্ডলম ক্ষেমবতী | |
---|---|
জন্ম | ১৯৪৮ (বয়স ৭৫–৭৬) |
পেশা | মোহিনীঅট্টম নৃত্যশিল্পী |
ওয়েবসাইট | www |
কলামণ্ডলম ক্ষেমবতী (জন্ম ১৯৪৮) কেরালার ত্রিশূরের একজন মোহিনীঅট্টম নৃত্যশিল্পী এবং নৃত্য পরিকল্পক। তিনি কেরালার প্রখ্যাত আবাসিক নৃত্য-সঙ্গীত বিদ্যালয় কলামন্ডলমের প্রাক্তনী। তিনি দশ বছর বয়সে কলামন্ডলমে যোগদান করেছিলেন এবং সেখান থেকে স্নাতক হওয়ার পরে তিনি মুথুস্বামী পিল্লাই এবং চিত্রা বিশ্বেশ্বরনের অধীনে ভরতনাট্যম এবং ভেম্পতি চিন্না সত্যমের অধীনে কুচিপুড়িতে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। তবে তিনি নিজে মোহিনীঅট্টমেই সবথেকে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন, এবং মোহিনীঅট্টমের নৃত্যশিল্পী রূপেই তাঁর সর্বাধিক পরিচিতি[১]। ভারতীয় নৃত্যশিল্পে তাঁর অবদানের জন্যে ২০১১ সালে তিনি ভারতের চতুর্থ সর্ব্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী লাভ করেন[২]।
ক্ষেমবতী হলেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক প্রয়াত ভি.কে.পবিত্রণের স্ত্রী। তাঁর দুই কন্যা, ইভা পবিত্রণ এবং লক্ষ্মী পবিত্রণ [৩]।
কলামন্ডলমে থাকাকালীন তিনি গুরু থোত্তাস্বামী চিন্নাম্মু আম্মা এবং কলামন্ডলম সত্যভামার অধীনে প্রশিক্ষিত হয়েছিলেন। কলামন্ডলম থেকে স্নাতক হওয়ার পরে তিনি স্বাধীনভাবে অনুষ্ঠান করতেন এবং নৃত্য প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। তিনি ভারতনাট্যম এবং কুচিপুড়ির প্রশিক্ষণ নেন এবং এই তিন ধরনের নৃত্যই পরিবেশন করতে থাকেন।
১৯৭৯ সালে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভাল্লাথল শতবর্ষ উদযাপনের জন্য তিনি মোহিনীঅট্টম নৃত্য পরিবেশন করার জন্য একটি আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠানে তাঁর নিবেদিত স্বাতী তিরুনালের বর্ণনায় 'দানি সমজেন্দ্রগামিনী’ নৃত্যটি শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল। মোহিনীঅট্টমের অপেক্ষাকৃত ধীর গতি, হাতের ইশারার সূক্ষ্ম সম্পাদন এবং আলতো পদক্ষেপের মাধ্যমে রসের প্রাণবন্ত ভাব দর্শকদের মোহিত করেছিল এবং দর্শকদের এই প্রতিক্রিয়ায় ক্ষেমবতী মোহিনীঅট্টমেই পুনরায় মনোনিবেশ করার চিন্তা করেন। সঙ্গীতের তালে তালে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের (মুখ, দেহ এবং অঙ্গ) সুষম সঞ্চালনের পারদর্শিতাই ক্ষেমবতীকে অন্যান্য মোহিনীঅট্টম নৃত্যশিল্পীদের থেকে আলাদা করে। ক্ষেমবতীর নিজের কথায়- নায়িকা বা সখীর বিস্তৃত বিভিন্ন অনুভূতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি অভিব্যক্তিপূর্ণ মুখ দর্শকদের উপর তাৎক্ষণিক ছাপ তৈরি করতে সক্ষম। [৪]।
ক্ষেমবতী প্রচুর উদ্ভাবনী নৃত্য পরিকল্পনা করেছেন। তাঁর নিজের পরিকল্পনা করা প্রথম নৃত্যটি হল চেরুসারির পদের উপর ভিত্তি করে বেণুগনম[৫]।তিনি চেরুসারী ও সুগাথাকুমারীর বহু পদ, কুছেলাবৃত্তম, চিন্তবৈশত্যা সীতা, লীলা প্রভৃতি ক্লাসিক সহ শতাধিক পদের নৃত্য পরিকল্পনা করেছেন।তাঁর নিজের পরিকল্পনা করা কিছু বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠানগুলি হল- গীতগোবিন্দের উপর ভিত্তি করে সপ্তনায়িকা, শ্রীচক্রভাষা, কেরালা সোপানসঙ্গীতের উপর ভিত্তি করে আনন্দগণপতি ইত্যাদি। ঐতিহ্যশালী স্বাতী তিরুনালের সাঙ্গীতিক পদ এবং কর্ণাটকী সঙ্গীতের উপর ভিত্তি করা নৃত্য পরিকল্পনা ছাড়াও তিনি কিছু কিছু ফিউশন নৃত্য পরিকল্পনাও করেছেন। যেমন প্রভা বর্মার কবিতা শ্যামমাধবম-এর উপর ভিত্তি করে নৃত্য পরিকল্পনা অথবা গজল সঙ্গীতের সাথে মোহিনীঅট্টমের মেলবন্ধন[৬]।
ক্ষেমবতী কেরালার ত্রিশূরে নৃত্য প্রশিক্ষনশালা 'কেরালা কলামন্দির' প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার প্রশিক্ষণশালায় দেশ বিদেশের বহু ছাত্রছাত্রী প্রশিক্ষিত হয়েছেন।