ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কলিন মিলবার্ন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বার্নপফিল্ড, কাউন্টি ডারহাম, ইংল্যান্ড | ২৩ অক্টোবর ১৯৪১||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ আয়ক্লিফ ভিলেজ, কাউন্টি ডারহাম, ইংল্যান্ড | (বয়স ৪৮)||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | অলি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম পেস | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৩১) | ২ জুন ১৯৬৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৬ মার্চ ১৯৬৯ বনাম পাকিস্তান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬০–১৯৭৪ | নর্দাম্পটনশায়ার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৩–১৯৬৯ | মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৬–১৯৬৯ | পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ নভেম্বর ২০১৮ |
কলিন মিলবার্ন (ইংরেজি: Colin Milburn; (২৩ অক্টোবর, ১৯৪১ - ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০)) কাউন্টি ডারহামের বার্নপফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডারহামের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে দক্ষতা দেখিয়েছেন ‘অলি’ ডাকনামে পরিচিত কলিন মিলবার্ন।
কাউন্টি ডারহামের বার্নপফিল্ড এলাকায় কলিন মিলবার্নের জন্ম।[১] তার বাবা স্থানীয় ব্যবসায়ী ছিলেন ও টাইনসাইড লীগ ক্রিকেটে পেশাদার খেলোয়াড় ছিলেন। কিশোর কলিন মিলবার্ন এ খেলায় ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিভাধর হিসেবে নিজেকে উপস্থাপনায় সচেষ্ট হন। তেরো বছর বয়সে প্রথম একাদশে অভিষেক ঘটে তার।
সতেরো বছর বয়সী ছাত্র কলিন মিলবার্ন ১৯৫৯ সালে মাইনর কাউন্টিজের তৎকালীন দল ডারহামের সদস্যরূপে সফরকারী ভারতীয় একাদশের বিপক্ষে খেলার মাধ্যমে অভিষেক ঘটান নিজেকে। সান্ডারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় কলিন মিলবার্ন দূর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন। ফলে প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি দলগুলোর দৃষ্টি তার দিকে আকৃষ্ট হয়। তিনি এ সেঞ্চুরিটি বিদ্যালয়ের বন্ধু স্টুয়ার্ট টার্নারকে উৎসর্গ করেন ‘স্টু এ সেঞ্চুরিটি তোমাকে দিলাম’ বলে।
১৯৫৮ সালে বিদ্যালয় থেকে সাতটি ও-লেভেল লাভ করেন ও এ-লেভেল অধ্যয়নকালে মাঝামাঝি সময়ে ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। মিলবার্নের মাতা ক্রিকেটে খেলায় অংশগ্রহণের পূর্বে শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চেয়েছিলেন।[২]
ওয়ারউইকশায়ারের তুলনায় বেশি অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দেয়ার প্রেক্ষিতে সপ্তাহের ১০ শিলিংয়ের বিনিময়ে ১৯৬০ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ হন কলিন মিলবার্ন।[৩] শীঘ্রই তিনি তার নামের প্রতি সুবিচারে সচেষ্ট হন। শক্তিশালী স্ট্রোকপ্লে ও কার্যকরী মিডিয়াম পেস বোলিং করতে থাকেন। ১৯৬৩ সালের মধ্যেই ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভূক্তির ব্যাপারে তার নাম আলোচিত হতে থাকে। কিন্তু, ফ্রাঙ্ক ওরেলের নেতৃত্বাধীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশের বিপক্ষে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের খেলায় তাকে রাখা হয়নি।
নর্দাম্পটনশায়ারের সদস্যরূপে এসেক্সের বিপক্ষে ২০৩ রানের ইনিংস খেলেন। ঐ মৌসুমে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৭ সালের উইজডেনের সংস্করণে অন্যতম উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে নয় টেস্টে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। ২ জুন, ১৯৬৬ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে কলিন মিলবার্নের।
রানের ধারাবাহিকতা না থাকলেও মাঝে-মধ্যেই সেঞ্চুরি স্ফূলিঙ্গ করতেন। তবে, ১৯৬৬ সালের মধ্যে নিজেকে টেস্ট উপযোগী করতে তুলতে সচেষ্ট হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেয়ার জন্য তাকে দলে নেয়া হয়। কিন্তু উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে লজ্জ্বাস্করভাবে প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে রান আউটের শিকার হন কলিন মিলবার্ন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯৪ রানের মূল্যবান ইনিংস খেললেও ইংল্যান্ড বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়। দ্বিতীয় টেস্টে আক্রমণাত্মক মেজাজে অপরাজিত ১২৬ রান তুলে ইংল্যান্ডকে ড্র করান। পরের খেলাগুলোয় ক্যারিবীয়দের অবিস্মরণীয় পেস আক্রমণের তোপে দৃঢ়চেতা মনোভাব দেখালেও চূড়ান্ত টেস্টে তাকে বাদ দেয়া হয়। সম্ভবতঃ মাঠে স্থির অবস্থানই এর প্রধান কারণ ছিল।
ঐ শীতে কলিন মিলবার্ন অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। সেখানে শেফিল্ড শিল্ডের প্রতিযোগিতায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সদস্য হিসেবে খেলেন। ১৯৬৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে অংশ নেন। এছাড়াও, শীতকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনের জন্য মনোনীত হন। সেখানে তিনি বেশ সফলতার মুখ দেখেন। ১৯৬৮ সালে লর্ডসে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন। প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ার পর ৮৩ রান করেন। দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই অধিকাংশ রান করেছিলেন। ছয় নম্বরে তার মাঠে নামার কথা থাকলেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের কারণে প্রথম উইকেট পতনের পর তাকে নামানো হয়।
পার্থে ফিরে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বেশ সফল হন।[১] তন্মধ্যে, ব্রিসবেনে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৩ রানের ইনিংস খেলেন। মধ্যাহ্নভোজন ও চা বিরতির মাঝেই করেন ১৮১ রান।[৪] পাকিস্তান গমনের জন্য এমসিসি দলে জরুরীভিত্তিতে কলিন মিলবার্নকে তলব করা হয়। মার্চ, ১৯৬৯ সালে করাচীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৯ রানের দর্শনীয় ইনিংস উপহার দেন তিনি। কিন্তু, দাঙ্গার কারণে ঐ টেস্টটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।[১] এটিই তার সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস ছিল ও সর্বশেষ টেস্ট ইনিংস হিসেবে রয়ে যায়।[১]
খেলার এক পর্যায়ে আকস্মিক দূর্ঘটনার শিকার হন ও চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে অবসর নিতে বাধ্য হন তিনি। ১৯৬৯ সালে নর্দাম্পটনে ফিরে যান। লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১৫৮ রান তুলে যাত্রা শুরু করেন। ২৩ মে বাড়ী ফেরার পথে মারাত্মক সড়ক দূর্ঘটনায় নিপতিত হন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান কলিন মিলবার্ন তার বাম চোখ হারান। এছাড়াও ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পতৌদির নবাবকে অনুসরণ করে ক্ষতিগ্রস্ত চোখ নিয়েই খেলার জগতে ফিরে আসেন। ৮ জানুয়ারি, ১৯৭১ তারিখে দ্য টাইমসে তার অবসরের কথা উল্লেখ করা হয়। তাসত্ত্বেও, ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে খেলায় অংশ নেন। তবে, ব্যাটিং গড় কমতে থাকে তার।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর লীগ ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। বিভিন্ন নৈশভোজের বক্তা, জনসভায় অংশগ্রহণ ও বেতার ধারাভাষ্যকার হিসেবে অংশ নিতে থাকেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে নিউটন আয়ক্লিফ এলাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর অ্যাম্বুলেন্স সহযোগে হাসপাতালে প্রেরণকালে তার দেহাবসান ঘটে।[১] শতশত লোক তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।
মাইকেল সিমকিন্সের সম্পাদনায় ‘ফ্যাটি ব্যাটার’ শিরোনামীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে কলিন মিলবার্নকে ক্রিকেটের প্রতি মোহাবিষ্টতার কথা তুলে ধরা হয়।