কাবুল কান্দাহার মহাসড়ক (এনএইচ০১০১) হল একটি ৪৮৩-কিলোমিটার (৩০০ মা) লম্বা রাস্তা, যেটি ময়দান শার, সায়দাবাদ, গাজনি এবং কালাতি ঘিলজি পার হয়ে, আফগানিস্তানের দুটি বৃহত্তম শহর, কাবুল এবং কান্দাহারকে যুক্ত করেছে।[১] এই মহাসড়কটি আফগানিস্তানের জাতীয় সড়ক ব্যবস্থা বা "জাতীয় মহাসড়ক ১"এর একটি মূল অংশ। কান্দাহার থেকে কাবুলের পুরো সড়ক সমতল, এর মধ্যে কোন গিরিপথ নেই। আফগানিস্তানের জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশই কাবুল থেকে কান্দাহার চক্রাকার রাস্তার অংশের ৫০ কিমি (৩১ মা)র মধ্যে বাস করে।
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ ও অবহেলার কারণে কাবুল-কান্দাহার মহাসড়কটি খুবই জীর্ণ অবস্থায় পড়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাস্তাটির ৩৮৯ কিমি (২৪২ মা) মেরামত ও পুনর্নির্মাণের জন্য অর্থ সাহায্য করেছে এবং জাপান করেছে ৫০ কিমি (৩১ মা) রাস্তার জন্য। প্রায় ৪৩ কিমি (২৭ মা) মহাসড়ক মেরামত করার আগেই ব্যবহারযোগ্য ছিল। পুনর্নির্মাণ প্রকল্পটি লুই বার্গার গ্রুপের তত্ত্বাবধানে হয়েছে, এই কাজে তুরস্ক এবং ভারতের প্রকৌশলীরা পরিকল্পনা ও নকশা বিভাগে সহায়তা করেছে। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে বাঁধান রাস্তা করার প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছিল এবং মহাসড়কটি গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।[২] কান্দাহার থেকে কাবুলের যাত্রায় সাধারণত ১৮ ঘণ্টা সময় লাগত তবে, পুনর্নির্মাণের পরে, সময় কমে গিয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা লাগছে।
কাবুল–কান্দাহার মহাসড়কটি আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ, যেমন: কাবুল, ময়দান ওয়ার্ডাক, গজনি, জাবুল, এবং কান্দাহার পার হয়ে গেছে।
২০০৪ সালের প্রথমদিকের হিসাব অনুযায়ী, তালিবান যোদ্ধারা এই পথের যাত্রীদের হয়রানি করতে থাকে। আফগান প্রহরী, সেনা, ভাড়াটে সৈনিক এবং শ্রমিকদের এই পথে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৩ সালের অক্টোবরে তারা এক তুর্কি ঠিকাদারকে অপহরণ করে এবং সেই ডিসেম্বরে তারা দুজন ভারতীয় শ্রমিককে অপহরণ করে। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তালিবান বিদ্রোহীরা লুই বার্গার গ্রুপের একটি হেলিকপ্টারকে গুলি করে এবং তিনজন নিহত হয়।
২০০৪ সালের মার্চে বিদ্রোহীরা তুরস্কের প্রকৌশলী এবং একজন আফগান প্রহরীকে হত্যা করেছিল। অপর এক তুর্কি প্রকৌশলী এবং একজন অনুবাদককে অপহরণ করা হয়েছিল। এই ঘটনাগুলোর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই পথ ধরে তিনটি স্থানে ছোট ছোট বেসামরিক-সামরিক দল স্থাপন করেছিল। এই দলগুলোর এখন আর অস্তিত্ব নেই।
৮ ই মে, ২০১৬তে গজনি প্রদেশের মুকুর জেলার কাবুল-কান্দাহার মহাসড়কে একটি বড় গাড়ি দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছিল এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়। কাবুল থেকে কান্দাহার যাওয়ার পথে দুটি বাসের সঙ্গে জ্বালানি ট্যাংকারের সংঘর্ষে আগুনে জ্বলে যায়। তালিবান হামলা থেকে বাঁচার জন্য গাড়িগুলো দ্রুত গতিতে চলছিল বলে জানা গেছে।[৩] ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে একটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে জ্বালানি ট্যাংকারের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৫ ব্যক্তি মারা গিয়েছিল।