শব্দার্থ | কার্তিক মাসে প্রদর্শিত নাচ |
---|---|
ধরন | নেপালি লোকনৃত্য |
বছর | ১৬৪১ |
উৎস | ললিতপুর |
কার্তিক নাচ (নেপালী: कात्तिक नाच; কাছালা প্যাখাঁন নামেও পরিচিত ( নেপাল ভাষা : कछला प्याखं)), একটি নাচের অনুষ্ঠান যা নেপালে প্রতি বছর কার্তিক মাসে (অক্টোবর বা নভেম্বর) পরিবেশিত হয়। [১] এটি ১৬৪১ খ্রিস্টাব্দে নেপালের মল্ল রাজা সিদ্ধি নরসিংহ মল্ল শুরু করেছিলেন। [২] [৩] [৪] এই নৃত্যনাট্য প্রতি বছর পাটন দরবার চত্বরে কার্তিক দবালিতে পরিবেশিত হয়। [৩] [৫]
এটি সাধারণত ২ থেকে ২৭ দিন ধরে হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর ১৭টি কাহিনি নিয়ে উপস্থাপনা করা হয়। [৩] [৪] এই নৃত্য মূলত দুই দিনের জন্য প্রদর্শিত হতো, কিন্তু নরসিংহ মল্লের পুত্র শ্রী নিবাস মল্ল সাত দিন এবং নরসিংহ মল্লের পৌত্র যোগ নরেন্দ্র মল্ল নৃত্য পরিবেশনায় আরও ১৫ দিন যোগ করেন। এটি নেপালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং স্থানীয় লোকদের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও এটি আকর্ষণীয়।[৪]
২০১৮ সালে প্রথমে কার্তিক নাচ প্রবন্ধন সমিতি নাটকটি সংরক্ষণ করত, তবে তার আগে ২০১৩ সাল থেকে কার্তিক নাচ সংরক্ষণ কমিটি (কেএনপিসি) এটি সংরক্ষণ করে আসছে। [৩] নাটকটি সাধারণত নৃত্যশিল্পীদের রঙিন পোশাকে বারাহী, গণেশ, শিব এবং কৃষ্ণ সহ হিন্দু দেবতাদের চিত্রিত করার মাধ্যমে শুরু হয়। [৪] নৃত্যশিল্পীরা তাদের গলায় মালাও পরে থাকেন। [৪] এই নৃত্যনাট্য নেওয়ার সম্প্রদায়ের মানুষদের দ্বারা পরিবেশিত হয় এবং ২০১৫ সালে "৪৫ জন সঙ্গীতশিল্পী ও ১০ জন সহকারী" এই নৃত্যে অংশগ্রহণ করেছিলেন। [৪]
এই নৃত্য পাটনের স্বর্ণ জানালার কাছেও পরিবেশিত হয় এবং সেই জানালাটি শুধুমাত্র এই নাটকের সময় খোলা হয়। কিংবদন্তি মতে, এটি রাজা সিদ্ধি নারসিংহ মল্লকে সম্মান জানাতে নির্মাণ করা হয়েছিল। [৬] [৭] অধিকাংশ নৃত্য ও সঙ্গীত নরসিংহ মল্ল রচনা করেছিলেন বলে মনে করা হয়, তবে বর্তমানে এই নৃত্যনাট্যে ছোটখাটো পরিবর্তন হয়েছে। [৮] কার্তিক নাচ সংরক্ষণ কমিটি (কেএনপিসি)-র প্রাক্তন পরিচালক হরি মান শ্রেষ্ঠ এই নাটক নিয়ে একটি বই লিখেছেন। [৮]
২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে নেপালের ভূমিকম্পে পাটন দরবার চত্ত্বর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাত মাস পরে,ওইরকম ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থাতেই কার্তিক নাচ ১০ রাত ধরে পরিবেশিত হয়। সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা তাদের সংবাদপত্রে লিখেছে, "দুর্যোগ সত্ত্বেও হাজার হাজার নেপালি, তরুণ ও প্রবীণ, লোকসঙ্গীতের সুরে ঐতিহাসিক এই নৃত্যনাট্যের মুক্তমঞ্চ উপস্থাপনা দেখতে মন্দিরে জড় হয়েছিলেন।" ২০১৮ সালে, ললিতপুর কর্তৃপক্ষ নাটকটির জন্য ২,০০,০০০ নেপালি রুপি বিতরণ করেছিল। [২]