কার্বন পদচিহ্ন বা কার্বন পদাংক (ইংরেজি: Carbon footprint) বলতে কোনও একক ব্যক্তি, কোনও ঘটনা, সংস্থা, সেবা, স্থান বা পণ্য উৎপাদনের কারণে সৃষ্ট মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকে বোঝায় এবং এটিকে সমতুল্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড এককে প্রকাশ করা হয়।[১] জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, বৃক্ষাবৃত ভূমি পরিস্কারকরণ, এবং খাদ্য, শিল্পজাত পণ্য, উপাদান, কাঠ, সড়ক ও ভবন নির্মাণ, পরিবহন ও অন্যান্য সেবার সময়ে কার্বন-ডাই-অক্সাউড ও মিথেনের মতো কার্বনবাহী গ্যাসসহ অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরিত হয়।[২]
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোট কার্বন পদচিহ্ন সঠিক করে গণনা করা সম্ভব হয় না, কেননা এইসব গ্যাস উৎপাদনকারী প্রক্রিয়াসমূহের মধ্যকার জটিল আন্তঃক্রিয়াগুলি সম্পর্কে জ্ঞান ও উপাত্ত অপর্যাপ্ত। যেসব প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াতে কার্বন ডাই-অক্সাইড মজুদ বা নিঃসরিত হয়, সেগুলির প্রভাবও ঠিকমত গণনা করা দুরূহ। এই কারণে রাইট, কেম্প ও উইলিয়ামস কার্বন পদচিহ্নের নিম্নোক্ত সংজ্ঞাটি প্রস্তাব করেন:
কোনও সুসংজ্ঞায়িত জনসমষ্টি, ব্যবস্থা বা কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2) ও মিথেন (CH4) নিঃসরণের মোট পরিমাণ, যেখানে যে জনসমষ্টি, ব্যবস্থা বা কর্মকাণ্ডটি আগ্রহের বিষয়বস্তু, সেটির স্থানকালিক সীমানার ভেতরে অবস্থিত সমস্ত প্রাসঙ্গিক উৎস, কুণ্ড (সিংক) ও মজুদ গণনায় ধরা হয়েছে। এটিকে প্রাসঙ্গিক ১০০-বছরের বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিভব ব্যবহার করে সমতুল্য কার্বন ডাই-অক্সাইড হিসেবে গণনা করতে হবে।[৩]
২০১৪ সালে বৈশ্বিক পর্যায়ে জনপ্রতি বাৎসরিক কার্বন পদচিহ্ন ছিল প্রায় ৫ টন সমতুল্য কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2eq)।[৪]
খনিজ তেল ও গ্যাস কোম্পানি ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম প্রায় ২৫ কোটি মার্কিন ডলার অর্থব্যয়ে একটি বিপণন অভিযানের দ্বারা কার্বন পদচিহ্ন পরিভাষাটি জনপ্রিয় করে। এর উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মনোযোগ জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানির কর্মকাণ্ডের উপর থেকে সরিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা সমাধানে ব্যক্তিগত দায়িত্বের উপর ফেলা।[৫]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; :4
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি