কুঁচি কংকা (Redbreast Jezebel) | |
---|---|
![]() | |
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
![]() | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | সন্ধিপদী |
শ্রেণী: | পতঙ্গ |
বর্গ: | লেপিডোপ্টেরা |
পরিবার: | Pieridae |
গণ: | Delias |
প্রজাতি: | D. acalis |
দ্বিপদী নাম | |
Delias acalis | |
প্রতিশব্দ | |
Delias thysbe |
কুঁচি কংকা[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Delias acalis (Godart)) ‘পিয়েরিডি’ (Pieridae) গোত্র ও 'পাইরিনি' (Pierinae) উপ-গোত্র এবং ডেলিয়াস (Delias) বর্গের অন্তর্ভুক্ত প্রজাপতি।
কুঁচি কংকা এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৮০-১০০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১][২]
ভারতে প্রাপ্ত কুঁচি কংকা এর উপপ্রজাতি হল-
ভারত (পূর্বঘাট পর্বত, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তরপূর্ব ভারত)[৩], নেপাল, ভুটান মায়ানমার, বাংলাদেশ এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[৪]
প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিশদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
এই প্রজাতির স্ত্রী পুরুষ উভয় প্রকারই লোপামুদ্রা (Delias pasithoe)সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তবে ডানার উপরিতলের বেসাল অংশ দেখে চট্ করে শনাক্ত করা যায়। কুঁচি কংকা এর পিছনের ডানার উপরিতলে গোড়ার দিকে অর্থাৎ বেসাল অংশে লাল রঙের ছোপ লোপামুদ্রায় থাকে না।[৪]
ডানার উপরিতল : ডানার উপরিতলের মূল রঙ কালো এবং সাদা, হলুদ বিভিন্ন আকৃতির ছোপযুক্ত। সামনের ডানায় সেল এর শীর্ষভাগে লোপামুদ্রা এর সাদা ছোপের পরিবর্তে, কুঁচি কংকা দের ধূসর আঁশযুক্ত সাদাটে বড় ছোপ বর্তমান যা সেল অতিক্রম করে ডিসকোসেলুলার অংশে বিস্তৃত। উক্ত বড় ছোপটির মধ্যভাগ সেল এর শীর্ষরেখা দ্বারা স্পষ্ট ভাবে খন্ডিত।[৪] সেল এর নিম্নপ্রান্তে ধূসর আঁশযুক্ত সাদাটে চওড়া পটি দেখা যায়। পোস্ট ডিসকাল ছোপ সারির ছোপগুলি ধূসর এবং অস্পষ্ট, কম বেশি লম্বাটে গড়নের যাদের ভিতরের প্রান্তভাগ তীক্ষ্ণ এবং অপেক্ষাকৃত সাদা এবং উজ্জ্বল। উক্ত পোস্টডিসকাল চওড়া ছোপগুলি বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের এবং ৩ নং শিরামধ্যের ছোপটি অন্যদের তুলনায় অধিকতর অন্তর্মুখী; সেল্প্রান্তের অনেকটা নিকট অবধি বিস্তৃত। সাববেসাল অংশে ১b এবং ২ নং শিরামধ্যে দুটি বড় ধূসর ছোপ লক্ষ্য করা যায়। উক্ত ছোপদুটি পুরুষ প্রকারে স্ত্রী অপেক্ষা বৃহত্তর; ১b এর সাববেসাল ছোপটি পুরুষ প্রকারে লম্বা এবং চওড়া এবং স্ত্রী প্রকারে খানিক উপবৃত্তকার (elliptical)।[৫]
পিছনের ডানায় বেসাল অথবা গোড়ার অংশ এবং সেল এর মধ্যভাগ পর্যন্ত সিঁদুর রঙা লাল এবং কালো শিরা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে খন্ডিত। ১a, ১b শিরামধ্য এবং ১c শিরামধ্যের সামান্য অংশ ধূসর সাদা আঁশে ঘনভাবে ছাওয়া। ১c শিরামধ্যের বাকী অংশ উজ্জ্বল হলুদ। ২ থেকে ৭ নং শিরামধ্যে কালো আঁশে হাল্কা ভাবে ছাওয়া লম্বাটে এবং চওড়া পটি বর্তমান যেগুলি টার্মেন অথবা প্বার্শপ্রান্তরেখা স্পর্শ করে না। পুরুষ প্রকারে উক্ত পটিগুলি সাদাটে এবং স্ত্রী প্রকারে ২ থেকে ৫ ইষদ হলুদ অথবা হলুদ। ৪ নং শিরামধ্যের পটিটি উভয় প্রকারেই সেলের শীর্ষভাগ অতিক্রম করে।[৫]
ডানার নিম্নতল : ডানার নিম্নতল উপরিতলেরই অনুরূপ। স্ত্রী-পুরুষ উভয় প্রকারে পিছনের ডানায় গোড়ার দিকে অথবা বেসাল অঞ্চলে বড় এবং চওড়া সিঁদুর রঙা লাল পটি বর্তমান যা কোস্টাল শিরার নিচ থেকে ডরসাম এর গোড়া অবধি বিস্তৃত এবং ডানার একদম গোড়ায় অথবা বেসের উপর দিকে ছোট একটি কমলা হলুদ ছোপ লক্ষ্য করা যায়। উভয় প্রকারেই সেল এর শীর্ষভাগ হলুদ এবং ১b থেকে ৭ নং শিরামধ্যের লম্বা পটিগুলি ক্রমশ হলুদ থেকে ফ্যাকাশে হয়ে সাদা হয়। উক্ত পটিগুলির মধ্যে ১b এবং ১c শিরামধ্যের হলুদ পটি দুটি টার্মেন অবধি বিস্তৃত। শিরাগুলি সরু এবং কালো। টার্মিনাল রেখা সরু কালো।[৫]
শুঙ্গ সাদায়-কালোয় ডোরাকাটা এবং শীর্ষভাগ কালো। মাথা, বক্ষদেশ এবং উদর এর উপরিতল কালো এবং প্বার্শ এবং নিম্নতল ধূসর বর্ণের।
এই প্রজাতি পূর্বঘাট পর্বতমালা অঞ্চলে অতি দুর্লভ, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দুর্লভ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে মোটামুটি ভাবে প্রাপ্তব্য। এদের উড়ান দুর্বল[২], তবে ভয় অথবা বাধা পেলে অথবা বিরক্ত হলে হঠাৎ গতি বাড়িয়ে দ্রুত ঝোপ ঝাড় অথবা জঙ্গলে ধুকে পড়ে। সাধারনত এদের একা বিচরণ এবং মাড পাডল করতে দেখা যায়। পুরুষ প্রকারই ভিজে মাটি, ভিজে বালি, ভিজে পাথর অথবা ভিজে ছোপ এ অবস্থান করে, মাড্ পাডল করে।[২] Delias বর্গের অন্যান্য সদস্যদের মতন এই প্রজাতিকেও উঁচু গাছ অথবা ঝোপঝাড় এর চারপাশে উড়তে দেখা যায়, সাধারনত আহার্য উদ্ভিদের আশেপাশে। স্ত্রী পুরুষ উভয়েরই ফুলের মধুর প্রতি আসক্তি রয়েছে। দক্ষিণ ভারতে একমাত্র পূর্বঘাট পার্বত্য অঞ্চলে (বিশাখাপত্তনম এর নিকটে) এদের দেখা মেলে ৩০০০-৫০০০ ফুট উচ্চতায়।[৬] নাগা পাহাড়ে এই প্রজাতি খুবই সহজ প্রাপ্য আগস্ট থেকে নভেম্বরে এবং সিকিমএ নিচু উচ্চতায় বেশ সহজপ্রাপ্য।[৭]