কুলজিৎ রনধাওয়া | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ | (বয়স ৩০)
কুলজিৎ রনধাওয়া (২৯শে জানুয়ারি ১৯৭৬ – ৮ই ফেব্রুয়ারি ২০০৬) ছিলেন একজন ভারতীয় মডেল এবং অভিনেত্রী। তিনি টিভি সিরিজ সি এ টি এস, স্পেশাল স্কোয়াড এবং কোহিনূর -এ তাঁর কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।[১]
কুলজিৎ রনধাওয়া পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের রাণীগঞ্জে ১৯৭৬ সালের ২৯শে জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ভারতীয় পুলিশে চাকরি করতেন। এই কারণে কুলজিৎ সারা ভারত জুড়ে ভ্রমণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কুলজিৎ রনধাওয়া যখন মুম্বাইতে আত্মহত্যা করেন, তাঁর বাবা সেই সময় পাঞ্জাবের পাটিয়ালায় চাকরি করছিলেন।
কুলজিৎ রনধাওয়া দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে সাম্মানিক স্নাতক করেছেন। তিনি একজন ছাত্র থাকাকালীন মডেলিং শুরু করেছিলেন এবং তাঁর কাজের মধ্যে প্রধান ডিজাইনারদের জন্য বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপন এবং রানওয়ে শো (লম্বা, সংকীর্ণ মঞ্চ যেখানে মডেলরা একটি ফ্যাশন শোতে হাঁটেন) অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কুলজিৎ রনধাওয়া হিপ হিপ হুরেতে 'প্রিশিতা' চরিত্রে অভিনয় ক'রে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন, তিনি শ্বেতা সালভের পরিবর্তে এসেছিলেন। তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রচারের আলোয় আসেন আরও পরে, যখন তিনি ইউটিভি শো সি এ টি এস-এ প্রধান একটি চরিত্রের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। সেখানেও তিনি একজন অভিনেত্রী কারমিন্দর কৌরের পরিবর্তে এসেছিলেন। নাফিসা জোসেফ এবং মালিনী শর্মা অভিনীত এই টিভি সিরিজটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল কিন্তু টিআরপি যুদ্ধে পিছিয়ে ছিল। গোয়েন্দা 'অ্যাশ' চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কুলজিৎ রনধাওয়া অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিলেন। এই ধারাবাহিকটি শেষের পরে, কুলজিৎ রনধাওয়া অনেক টিভি অনুষ্ঠানে ক্যামিও চরিত্রে (ছোট চরিত্র) উপস্থিত হতে থাকেন এবং মডেলিংয়ের কাজও চালিয়ে যেতে থাকেন।
কুলজিৎ রনধাওয়া একজন মডেল হিসাবে বেশ বড় সাফল্য পেয়েছিলেন কিন্তু অভিনয়ের তিনি ক্ষেত্রে যথেষ্ট নির্বাচনী ছিলেন। সি এ টি এস-এর পর তাঁকে বহুদিন প্রধান ভূমিকায় দেখা যায়নি এবং দীর্ঘ ব্যবধানের পর তিনি স্টার ওয়ান চ্যানেলের স্পেশাল স্কোয়াড স্টার ওয়ান-এ প্রধান ভূমিকায় ফিরে আসেন। ভারতীয় টেলিভিশনে দেখানো বিষয়বস্তু নিয়ে কুলজিৎ রনধাওয়া খুশি ছিলেন না, বিশেষ করে যখন দেখানো হয় অভিনেত্রীরা বেশিরভাগ সময়েই কাঁদতে থাকেন। তিনি সবসময় সাহসী এবং শক্তিশালী নারী কেন্দ্রিক ভূমিকা পছন্দ করতেন এবং সেই কারণে তিনি রোমাঞ্চকর ভূমিকাগুলিতেই বেশি অভিনয় করতেন। কুলজিৎ রনধাওয়া পাঁচটিরও বেশি টিভি শোতে একজন পুলিশ / গোয়েন্দা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটি ভারতীয় টেলিভিশন অভিনেত্রীদের জন্য একটি রেকর্ড এবং এই অনন্য রেকর্ডটি আর কোনো অভিনেত্রী সফলভাবে অনুসরণ করতে পারেননি।
স্পেশাল স্কোয়াডে তাঁর পরিবেশনা খুব ভালভাবে সমাদৃত হয়েছিল কিন্তু টিআরপি বাড়ানোর জন্য, গৌরী প্রধান তেজওয়ানিকে শোতে অন্য এক প্রধান মহিলা চরিত্র হিসাবে চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল। ছয়টি পর্বের পর, কুলজিৎ রনধাওয়া পেশাদার সিদ্ধান্তের কারণ দেখিয়ে শো ছেড়ে চলে যান। তবে মনে করা হয়েছিল যে তিনি গৌরীর কারণে শো ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু কুলজিৎ নিজে কিখনো এটি স্বীকার করেন নি।
স্পেশাল স্কোয়াড ছাড়ার পরপরই, কুলজিৎ রনধাওয়া সিনেভিস্তাস এবং সাহারা ওয়ান প্রোডাকশন 'কোহিনূর'-এ 'ইরাবতী কোহলি' চরিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। একটি বিশেষ স্বতন্ত্র আলাপচারিতা প্রতিলিপিতে, কুলজিৎ রনধাওয়া স্পেশাল স্কোয়াড শো, নাফিসা জোসেফ এবং নিজের সম্পর্কে আরও বিশদ প্রকাশ করেছেন।[২] কোহিনূরের প্রথম মরশুমটি দর্শকেরা ভালোভাবে গ্রহণ করেছিলেন এবং নির্মাতারা আরেকটি মরশুমের পরিকল্পনা করেছিলেন কিন্তু ২০০৬ সালে কুলজিৎ রনধাওয়া আত্মহত্যা করার পর তা বাস্তবায়িত হয়নি।[৩]
অভিনয়ের পাশাপাশি, কুলজিৎ রনধাওয়া রিড এবং টেলর, রেকোভা, ম্যাগি এবং অ্যাঙ্কর সুইচের মতো ব্র্যাণ্ডের জন্য বেশ কয়েকটি মডেলিং নিয়োগে কাজ করেছেন।
২০০৬ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি, কুলজিৎ রনধাওয়া পশ্চিম মহারাষ্ট্রের একটি শহর জুহুতে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে আত্মহত্যা করেন। একটি সুইসাইড নোটে, কুলজিৎ বলেছিলেন যে জীবনের চাপ সামলাতে না পেরে তিনি নিজের জীবন শেষ করছেন। তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন আগে, তিনি বাই চান্স সিনেমার শুটিং শেষ করেছিলেন। তিনি ৩০ বছর বয়সে মারা যান।[৪][৫][৬]