হিন্দুধর্ম |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
ক্ষত্রিয় (সংস্কৃত: क्षत्रिय) (সংস্কৃত “ক্ষত্র” থেকে, "শাসন, কর্তৃত্ব") হল হিন্দু সম্প্রদায়ের চতুর্বর্ণের দ্বিতীয় বর্ণ। বৈদিক সমাজে মানুষদের চারটি শ্রেণীতে সংগঠিত করা হয়েছিল: ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র ।[১] রাজ্যশাসন, রাজ্যরক্ষা এবং জনগণের নিরাপত্তা বিধান করা ক্ষত্রিয়ের দায়িত্ব।[২] ঋগ্বেদের পুরুষসূক্ত অনুসারে ক্ষত্রিয়ের উৎপত্তি স্রষ্টার বাহু থেকে। গীতায় শ্রীকৃষ্ণের উক্তি অনুসারে যারা এরূপ গুণ ও কর্মের অধিকারী তারাই ক্ষত্রিয়। স্মৃতি শাস্ত্রে, কিছু যুদ্ধপ্রিয় জাতি ক্ষত্রিয় শ্রেণীর অধীনে নির্ধারিত ছিল।[৩]
প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে ক্ষত্রিয়দের সামাজিক মেলামেশা ও বিবাহাদি প্রচলিত ছিল। ক্ষত্রিয়রা রাজ্যশাসনের পাশাপাশি বিদ্যাচর্চাও করত। এদের মধ্যে মুনি, ঋষি, ধ্যানী, জ্ঞানী, ব্রহ্মবিদ, শাস্ত্রবিদ, পুরোহিত অনেকেই ছিলেন। দৈহিক গঠনে তারা ব্রাহ্মণদের সন্নিকটস্থ। জৈনধর্মে ব্রাহ্মণদের চেয়ে ক্ষত্রিয়দের প্রাধান্য বেশি। বৌদ্ধ জাতকের মতে ক্ষত্রিয় শ্রেষ্ঠ বর্ণ। জৈনধর্মে বহু শূদ্র ও বৈশ্য উন্নত হয়ে ক্ষত্রিয় শ্রেণীভুক্ত হয়েছে।
ভগবদ্গীতায় ক্ষত্রিয়দের কর্ম সম্পর্কে বলা আছে:[৪]
শৌর্যং তেজো ধৃতির্দাক্ষ্যং যুদ্ধে চাপ্যপলায়নম্।
দানমীশ্বরভাবশ্চ ক্ষাত্রং কর্ম স্বভাবজম্।।
অনুবাদ: শৌর্য, তেজ, ধৃতি, দক্ষতা, যুদ্ধে অপলায়ন, দান ও শাসন ক্ষমতা-এগুলি ক্ষত্রিয়ের স্বভাবজাত কর্ম।
— ভগবদ্গীতা (অধ্যায়:১৮, শ্লোক:৪৩)
ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে অনেক জাতি ও উপজাতির ক্ষত্রিয় রয়েছে। এক হিসাবমতে ক্ষত্রিয়দের শাখা ৫৯০-এর অধিক। বাংলার স্মৃতি-পুরাণ-ঐতিহ্যে ক্ষত্রিয় বর্ণের উল্লেখ আছে। তবে মহাভারত , মনুসংহিতা ও অন্যান্য গ্রন্থে বঙ্গ, পৌন্ড্রক্ষত্রিয়, কিরাত, শবর ও পুলিন্দদের ক্ষত্রিয় বলা হয়েছে। বাংলায় ক্ষত্রিয়রা বৈশ্যা ও শূদ্রা নারী বিবাহ করায় যথাক্রমে মাহিষ্য ও উগ্রক্ষত্রিয় বর্ণের বা গোত্রের সৃষ্টি হয়।[৫] বর্তমান আসামে , পশ্চিমবঙ্গে, বাংলাদেশেররংপুর, রাজশাহী, বগুড়া ও দিনাজপুর জেলায় পূর্ব বিহারে, পূর্ব নেপালে, রাজবংশীরা বাস করেন, যারা পৌন্ড্রক্ষত্রিয়।
|তারিখ=
(সাহায্য)