মোটামুটিভাবে খাদ্যজনিত অসুস্থতা বা খাদ্যবাহিত রোগকে বলা যায় খাদ্যে বিষক্রিয়া।[১] এটি মুলত বিভিন্ন রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া যেমন E. Coli, Clostridium Botulinum, Bacillus Cereus দ্বারা আক্রান্ত খাদ্য গ্রহণে দেখা যায়।[২] সঠিক তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, সময়, অম্লতা, লবনাক্ততায় ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, অনুকূল অবস্থায় ই. কোলির মতো ব্যাকটিরিয়া প্রতি 20 মিনিটের মধ্যে দ্বিগুণ হয়।[৩] গড় হিসাবে একটি ব্যাকটিরিয়া সংখ্যায় ৫ ঘন্টার মধ্যে 30,000 এবং মাত্র ৮ ঘন্টার মধ্যে ১৬ মিলিয়ন এরও বেশি গতিতে বেড়ে ওঠে।[৪]
সাধারণভাবে বমি বমি ভাব বা বমি করা, জ্বর, পেট খারাপ হওয়া প্রভৃতি এর প্রাথমিক লক্ষণ। বমি অনিয়মিত বিরতিতে বারংবার হতে পারে এবং এর পাশাপাশি ডায়েরিয়া বা পানিশূন্যতাও হয়। তবে ঠিক কখন এই লক্ষণ দেখা দেবে, বা কতটা ভয়াবহ আকারে দেখা দেবে - সেটা নির্ভর করে খাদ্যে বিষক্রিয়ার মাত্রা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যের উপরে। এইসময় কিছু সংখ্যাক জীবাণু অন্ত্রে প্রবেশ করে বংশ বৃদ্ধি করতে থাকে, আবার অন্য কিছু সংখ্যক বিষ উৎপাদন করে যা রক্তে মধ্যে সঞ্চারিত হয়। আর বাকি অধিকাংশ জীবাণু সরাসরি শরীরের অভ্যন্তরের কলাকে আক্রমণ করে।
সাধারণত খাদ্যজনিত অসুস্থতাগুলো ঘটে খাদ্যের সঠিকভাবে সরবরাহ, তৈরি ও সংরক্ষণ করা না হলে। এছাড়াও যেকোনো খাবার রান্নার পর তা ৪ºC. থেকে ৬০ºC তাপমাত্রার ভেতর রাখলে খাবারে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা মারাত্মক আকারে বৃদ্ধি পায়।[৫][৬][৭] খাদ্য প্রস্ততকরণের পূর্বে, তৈরিকালীন ও পরে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধিমালা অনুসরণই খাদ্যজনিত এই অসুস্থতা হ্রাস করতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে, ব্যাক্টেরিয়া পরিবেশের বায়ু, জল, মাটি যেকোনো জায়গায় রয়েছে। তাই সতেজ খাবারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ভালো অভ্যাসগুলি ব্যাকটিরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে। ব্যাক্টেরিয়ার কতগুলি সাধারণ উৎস [৮] -
খাবার প্রস্তুত করা সময় হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধোয়া, রান্নার জায়গা পরিষ্কার রাখা, ভালো করে উত্তমরূপে ভেজে বা সিদ্ধ করে রান্না করা - যাতে ব্যাক্টেরিয়াগুলো ধবংস হয়। খাবারের ধরন হিসাবে শীতল খাবার রেফ্রিজারেটরে বা ফ্রিজে ৪º সেলসিয়াস বা তার কমে ও উষ্ণ খাবার মাইক্রোওভেনে ৬০º সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ খাদ্যদূষণের মাত্রা অনেকটা কমিয়ে দেয়।