গারায়েবুল কুরআন ওয়া রাগায়েবুল ফুরকান হল পবিত্র কুরআনের তাফসির গ্রন্থগুলির মধ্যে একটি গ্রন্থ। এটি নিজাম আল-দীন আল-নিসাবুরি রচনা করেন।
গ্রন্থটিতে পবিত্র কোরআনের তাফসির ও তাফসির নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাফসির করার প্রথমে আয়াত উল্লেখ করেছেন। এরপর বিভিন্ন কিরাতের পদ্ধতি এবং মতবিরোধ তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন আহকাম বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তারপর সববে নুযুল বা অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট আলোচনা করেছেন। এরপর একক শব্দ সমূহের ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন। এর একক অর্থ, ইজমালি অর্থ, ইরাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। এরপর আয়াতের তাবিল করেছেন। তিনি তাবিল দ্বারা তাফসিরে সুফি বা সুফিবাদের তাফসির করতেন।
আল-নিসাবুরি তার গ্রন্থে বলেছেন: «এই গ্রন্থটিতে বিশাল তাফসিরের ফলাফল অন্তর্ভুক্ত ছিল (এ বিশাল তাফসির দ্বারা তিনি আল-ফখর আল-রাজির বইকে বোঝায়েছেন), যা অনেক তাফসিরের ব্যাখ্যাকে সংকলন করে। এটিতে আল-কাশশাফ গ্রন্থের অনেক বিষয়ের সমাধান রয়েছে। এটিতে ভাষা এবং শব্দভান্ডারের অর্থেরও যত্ন সহকারে বর্ণনা রয়েছে। সূরা এবং আয়াতগুলির মধ্যে ঘটনাগুলির সম্পর্ক রয়েছে। আয়াতের পুনরাবৃত্তির প্রজ্ঞার বিবৃতি রয়েছে। সেইসাথে মুতাশাবেহাতের উল্লেখ করা হয়েছে। এটি আমাদের জ্ঞান ও অগ্রভাগের অধিকারের দৃঢ়তাকে দালালত করে।
অনেকে ধারণা করেন, তিনি মুতাযালি আকিদার বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজে তা অস্বীকার করে বলেছেন আমি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিশ্বাসী। “আমি এই গ্রন্থে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদা ছাড়া অন্যকিছু আলোচনা করিনি। আমি িএখানে তাদের উসুল ও দলিলসমূহ আলোচনা করেছি।” তিনি এ গ্রন্থে বিভিন্ন সমস্যার ছোটো খাটো বিষয়গুলো সুন্দরভাবে আলোকপাত করেছেন কোনো পক্ষপাত ও বিতর্ক ছাড়াই। তিনি ইজতেহাদ ও মতামতকে প্রাধন্য দিয়েছেন।[১]
তিনি হাদীসসমূহকে সনদসহকারে উল্লেখ করেছেন। এ ক্ষেত্রে সেকাহ রাবীর রেওয়ায়েত গ্রহণ করেছেন। তিনি হাদীসের সমালোচনা করেছেন। তিনি সুরার ফজিলত বর্ণনায় তাফসিরে কাশ্শাফের হাদীসগুলো গ্রহণ করেননি। কেননা এখানে অনেক সাজ হাদীস আছে। তিনি পাঠকদের সুবিধার জন্য বিভিন্ন অধ্যায় অধ্যায় করে তাফসির করেছেন। তিনি প্রত্যেক সুরায় ইসলামি আইন বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।[২]