সংক্ষেপে | জিসিপি |
---|---|
গঠিত | ২০০১ |
আলোকপাত | গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন পরিমাপ ও হ্রাস করা |
সভাপতি | রব জ্যাকসন, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় |
ওয়েবসাইট | globalcarbonproject.org |
গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্ট (জিসিপি) এমন একটি সংস্থা যা গ্লোবাল গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং এর কারণগুলির পরিমাণ নির্ধারণ করার চেষ্টা করে।[১] এটি 2001 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে তিনটি প্রভাবশালী গ্রিনহাউস গ্যাস - কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2), মিথেন (CH₄), এবং নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O) এর জন্য গ্লোবাল বাজেট এবং শহুরে, আঞ্চলিক, ক্রমবর্ধিত এবং নেতিবাচক নির্গমনগুলির পরিপূরক প্রচেষ্টা।
এই সংস্থাটির মূল উদ্দেশ্য হল কার্বন চক্র কে পুরোপুরি বোঝা। গ্রিনহাউস গ্যাস এর ক্রমবর্ধমান ঘনত্বের সমস্যা মোকাবেলায় প্রকল্পটি নির্গমন বিশেষজ্ঞ, পৃথিবী বিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদদের একত্রিত করেছে। 2020 সালে, প্রকল্পটি তার নতুন গ্লোবাল মিথেন বাজেট[২][৩] এবং প্রথম গ্লোবাল নাইট্রাস অক্সাইড বাজেট প্রকাশ করেছে।[৪] এই দুটো গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইডের পরে উষ্ণায়নের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী অ্যানথ্রোপোজেনিক চিহ্নসম্পন্ন গ্যাস।
গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্ট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন সম্পর্কিত তথ্য একটি উন্মুক্ত এবং নির্মল পদ্ধতিতে সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন দলের সাথে একত্রে কাজ করে। প্রকল্পটি এর ডেটাসেটগুলি ওয়েবসাইট এবং প্রকাশনার মাধ্যমে সহজলভ্য করে। এটি আর্থ সিস্টেম সাইন্স পার্টনারশিপ এর ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।এতে ইন্টারন্যাশনাল জিওস্ফিয়ার-বায়োস্ফিয়ার প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ক্লাইমেট প্রোগ্রাম, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান ডাইম্যানশন্স প্রোগ্রাম এন্ড ডাইভারসিটাস এর অংশীদারত্ব ছিলো । পরবর্তীতে ২০১৪ সালে, এই অংশীদারত্বের অনেকগুলি মূল প্রকল্প ফিউচার আর্থের অংশে পরিণত হয়েছিল।
গ্লোবাল কার্বন প্রকল্পের বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের Rob Jackson। পূর্ববর্তী সহ-সভাপতিদের মধ্যে রয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এপ্লায়েড সিস্টেম এনালাইসিস (আইআইএএসএ) এর নকি নাকিসেনোভিচ,ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট অ্যাঙ্গলিয়া এর করিন লে ক্যুরি এবং ইনস্টিটিউট পিয়েরে সাইমন ল্যাপ্লেসের (এলএসসিই) ফিলিপ সায়িস। প্রকল্পটির নির্বাহী পরিচালক হলেন অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অরগানাইজেশান (সিএসআইআরও) এর জোসেপ কানাডেল।জিসিপির জাপানের সুকুবা, সিওল ও কোরিয়ায় অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক অফিস এবং পাঁচটি মহাদেশের এক ডজন বিজ্ঞানীর সমন্বয়ে একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক স্টিয়ারিং কমিটি রয়েছে।
সম্প্রতি ডিসেম্বর ২০১৮ এ প্রকাশিত গ্লোবাল কার্বন বাজেট অনুযায়ী, জিসিপি কল্পনা করে যে ২০১৮ সালে জীবাশ্ম CO2 নির্গমন ২.৭% (১.৮% থেকে ৩.৭%) বৃদ্ধি পেয়ে ৩৭.১ বিলিয়ন টন (গিগাটন) রেকর্ড করবে।[৫][৬] এর কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের প্রবৃদ্ধিকে পরাস্ত করতে বর্তমানে নীতিমালা এবং বাজার প্রভাব অপর্যাপ্ত। ২০১৮ সালে গড় CO2 এর পরিমাণ ৪০৭ পিপিএম এ পৌঁছে দিতে বায়ুমণ্ডলীয় CO2 এর ঘনত্ব ২.৩ পিপিএম [ ২.০ থেকে ২.৬ পিপিএম] বৃদ্ধি পেতে চলেছে, যা প্রাক-শিল্প স্তরের ৪৫% উপরে। বর্তমানে বায়ুমণ্ডলীয় CO2 ঘনত্বের বাড়ার প্রাথমিক কারণ প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেলের বিশ্বব্যাপী ব্যবহার বৃদ্ধি।বিশ্বব্যাপী কয়লার ব্যবহার সম্ভবত ২০১৮ সালে বৃদ্ধি পাবে,তবু্ও এটি ২০১৩ সালের ঐতিহাসিক শীর্ষ ব্যবহারের চেয়ে কম থাকবে। গত এক দশকে, কিছু দেশে কয়লার ব্যবহার প্রাকৃতিক-গ্যাস, বায়ু এবং সৌরশক্তি দ্বারা স্থানান্তরিত হয়েছে।
জিসিপির পূর্ববর্তী বার্তানুযায়ী, ২০০৬ সালের শেষ দিকে, প্রজেক্টের গবেষকরা নির্ধারণ করেছিলেন যে ২০০০ সাল থেকে নাটকীয়ভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন বার্ষিক ৩.২% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়, দলের সভাপতি ডাঃ মাইক রৌপাচ বলেছিলেন যে "এটি একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক লক্ষণ। এটি ইঙ্গিত করে যে নির্গমন হ্রাস করার সাম্প্রতিক প্রয়াসগুলি কার্যত কোনও প্রভাব ফেলেনি এবং কার্যকর ক্যাপগুলি জরুরিভাবে প্রয়োজন"।[৭] নেচার জিওসায়েন্স এ প্রকাশিত প্রজেক্ট এর দ্বারা পরিচালিত ২০১০ সালের একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে বিশ্বের মহাসাগরগুলি ২.৩ বিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে।[৮] ৫ ডিসেম্বর, ২০১১ এ, একটি প্রকল্প থেকে প্রকাশিত বিশ্লেষণে দাবি করা হয়েছে যে, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন কার্বন ডাই অক্সাইড ২০১০ সালে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ১৯৯০-এ বৃদ্ধি হার বার্ষিক ১ শতাংশ ছিলো যা পরবর্তীতে বেড়ে ৫.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে,অর্ধেকেরও বেশি কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধির কারণ কয়লার দহন।[৯] আইপিসিসি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হওয়ার পূর্বাভাস দেয় এবং তাদের ধারণা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি অনুসারে, একবিংশ শতাব্দীতে বায়ুমণ্ডলে CO2 ঘনত্ব ৫০০ পিপিএম এ পৌঁছাবে।
২০০৫ সালে জিসিপি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত গ্লোবাল কার্বন বাজেট বিশ্বব্যাপী কার্বন চক্র উৎসের একটি বার্ষিক প্রকাশনা। ২০১৩ সালে গ্লোবাল কার্বন বাজেটের বার্ষিক প্রকাশনাটি আর্থ সিস্টেম সায়েন্স ডেটা জার্নালে একটি জীবন্ত ডেটা প্রকাশনায় পরিণত হয়েছিল। বিশ্লেষণ, ফলাফল এবং বৈশ্বিক কার্বন চক্রের আচরণের সর্বশেষতম ব্যাখ্যার পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতি বছর ডেটা সংশোধন ও হালনাগাদ করা হয়।
বিশ্বজুড়ে একাধিক সংস্থা এবং গবেষণা গ্রুপ,বিশ্বব্যাপী কার্বন বাজেট সম্পূর্ণ করতে ব্যবহৃত মূল পরিমাপ এবং ডেটা তৈরি করছে।
জিসিপি দ্বারা উপস্থাপিত প্রচেষ্টাটি মূলত একটি সমন্বয়, যেখানে বিভিন্ন দল থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলি সামঞ্জস্যতার জন্য মিলানো, বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করা হয়। প্রাথমিক ডেটাসেটগুলি ভবিষ্যতের কাজের ক্ষেত্রে উল্লেখ করার জন্য(এই টেবিলটি দেখুন) জিসিপি মূল ডেটা উপলব্ধি করার সুবিধা দেয়। বিস্তারিতভাবে প্রতিটি উপাদানের বিবরণ সেই ডেটাসেটগুলির সাথে যুক্ত মূল প্রকাশনা দ্বারা সরবরাহ করা হয়।
উপাদান | প্রাথমিক রেফারেন্স |
---|---|
দেশ এবং জ্বালানির ধরনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী টেরিটোরিয়াল জীবাশ্ব জ্বালানী এবং সিমেন্টের নির্গমন | Boden et al. (2013; CDIAC: cdiac.ornl.gov/trends/emis/meth_reg.html)[১০] |
ক্ষয় ভিত্তিক জীবাশ্ব জ্বালানী এবং দেশভিত্তিক সিমেন্টের নির্গমন | Peters et al. (2011) [১১] বর্ণনানুসারে হালনাগাদ হয়েছে Le Quéré et al. (2013) [১২] |
ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন | Houghton and Hackler (পর্যালোচনায় রয়েছে) |
বায়ুমন্ডলীয় CO2 বৃদ্ধির হার | Dlugokencky and Tans (2013; NOAA/ESRL: www.esrl.noaa.gov/gmd/ccgg/trends/)[১৩] |
সাগর এবং ভূমি CO2 উৎস | Le Quéré et al. (2013) [১২] স্বতন্ত্র মডেলগুলির জন্য কাগজে উল্লেখিত তথ্যসূত্র দেখুন |
গ্লোবাল কার্বন অ্যাটলাস হলো ২০১৩ সালে জিসিপি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বৈশ্বিক কার্বন চক্র সম্পর্কিত ডেটা পর্যবেক্ষণ করার একটি সরঞ্জাম।
গ্লোবাল কার্বন অ্যাটলাস হল মানব ক্রিয়াকলাপ এবং প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলির ফলে সৃষ্ট কার্বন ফ্লাক্সের সর্বাধুনিক তথ্য অন্বেষণ এবং পর্যবেক্ষণ করার প্ল্যাটফর্ম। কার্বন চক্রের উপর মানুষের প্রভাব জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
এই ওয়েবভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনটি বিদ্যালয়ের শিশু থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারক এবং বিজ্ঞানীদের কাছে গ্লোবাল কার্বন চক্র সম্পর্কে সর্বাধুনিক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ দেয়।এটি তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিত: ১) প্রচার, ২) নির্গমন এবং ৩) গবেষণা। প্রচারের উপাদানটির লক্ষ্য সাধারণ জনগণ এবং শিক্ষায় কর্মরত মানুষ। নির্গমন হল বৈশ্বিক কার্বন চক্রের অংশগুলি যা নির্গমনের সাথে সম্পর্কিত,তাদের জন্য একটি পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম।এটি মূলত নীতি নির্ধারকদের উদ্দেশ্যে নির্মিত। গবেষণার উপাদানটি মূলত গবেষকদের লক্ষ্য করে নির্মিত। এটি বৈশ্বিক কার্বন বাজেট তদন্ত করতে ব্যবহৃত বৈজ্ঞানিক তথ্যের জন্য ডেটা সংগ্রহস্থল এবং পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম হিসাবে কাজ করে।
গ্লোবাল কার্বন অ্যাটলাসের সমস্ত উপাদান, গ্লোবাল কার্বন বাজেটে প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে, সম্প্রতি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বার্ষিকভাবে হালনাগাদ করা হয়েছে।