বিকল্প নাম | চানহু-দাড়ো |
---|---|
অবস্থান | মুলান সান্ধ, সিন্ধু প্রদেশ, পাকিস্তান |
স্থানাঙ্ক | ২৬°১০′২৫″ উত্তর ৬৮°১৯′২৩″ পূর্ব / ২৬.১৭৩৬১° উত্তর ৬৮.৩২৩০৬° পূর্ব |
ধরন | Settlement |
এলাকা | ৫ হেক্টর (১২ একর) |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ |
পরিত্যক্ত | ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ |
সময়কাল | Regionalisation Era to Harappan 4 |
সংস্কৃতি | সিন্ধু সভ্যতা |
স্থান নোটসমূহ | |
খননের তারিখ | ১৯৩১, ১৯৩৫–১৯৩৬ |
প্রত্নতত্ত্ববিদ | ননীগোপাল মজুমদার আর্নেস্ট জন হেনরি ম্যাকে |
চানহু-দাড়ো সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতার অন্তর্গত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এটি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের মহেঞ্জোদাড়ো থেকে ১৩০ কিলোমিটার (৮১ মাইল ) দক্ষিণে অবস্থিত। অনুমান করা হয় যে, এখানে মোটামুটি ৪০০০ হতে ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে বসতির স্থাপনা হয়েছিল এবং স্থানটি কার্নেলিয়ান পুঁতি তৈরির কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত ছিল। খননের পর দেখা গেছে তিনটি নিচু ঢিবির মোটামুটি সাত হেক্টর আয়তনের এই স্থানে একটিই বসতি ছিল।
খ্যাতনামা ভারতীয় বাঙালি প্রত্নতত্ত্ববিদ ননীগোপাল মজুমদার ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে প্রথম খনন কার্য চালান। ১৯৩৫-৩৬ খ্রিস্টাব্দে শীতের সময় পুনরায় খননকার্য চলে আমেরিকান স্কুল অফ ইন্ডিক অ্যান্ড ইরানিয়ান স্টাডিজ এবং বোস্টনের মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস’-এর আর্নেস্ট জন হেনরি ম্যাকের নেতৃত্বে । পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডব্লিউ নরম্যান ব্রাউন এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। [১] পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর, মহম্মদ রফিক মুঘলও এই এলাকায় অনুসন্ধানের কাজ করেছিলেন।
২০১৫ খ্রিস্টাব্দ হতে সিন্ধু অববাহিকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননের কাজগুলি অরোর দিদিয়ের পরিচালনায় ফরাসি প্রত্নতিত্ত্বিক মিশন দ্বারা সংগঠিত হতে থাকে [২] [৩] [৪] খননগুলি পাকিস্তান সরকারের প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগ এবং সিন্ধু সরকারের সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়।
চানহুদাডো সিন্ধু সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সিন্ধু সভ্যতার অন্তর্গত যে ২৮০০টিরও বেশি স্থান এখনও পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে চানহু-দাড়ো অন্যতম।এখানে খনন কার্যের জন্য প্রচুর সুযোগ থাকলেও অগ্রগতি বিশেষ হয়নি। এখান দিয়ে সম্ভবত সরস্বতী নদী প্রবাহিত হত, কিন্তু ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শুকিয়ে যাওয়ার কারণে অঞ্চলটি মরুপ্রধান পরিণত হয়। [৫] খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে সরস্বতী নদী শুকিয়ে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়, [৬] ফলতঃ চানহুদারো এবং সরস্বতীর তীরে অবস্থিত কয়েক শতাধিক বাসস্থানে জীবন খুবই বিপন্ন হয়ে পড়ে এবং তারা সম্ভবত তাদের বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। সিন্ধু সভ্যতার পতনের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়। [৭]
চানহুদারো বর্তমান সিন্ধু নদীর তলদেশ থেকে প্রায় ১২ মাইল পূর্বে অবস্থিত। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক ননীগোপাল মজুমদার সিন্ধু প্রদেশে জরিপ করে ২০ টি ভগ্নাবশেষবহুল স্থান চানহু-দাড়ো আবিষ্কার করেন। এও লক্ষ্য করা গেছে যে, এই প্রাচীন শহরটিতে হরপ্পা এবং মহেঞ্জাদাড়োর মতো শহর পরিকল্পনা, বিল্ডিং লেআউট ইত্যাদিতে যথেষ্ট মিল ছিল। [৮]
১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকান স্কুল অফ ইন্ডিক এবং ইরানিয়ান স্টাডিজ এবং বোস্টন মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস দ্বারা অঞ্চলটি পুনরায় খনন করা হলে প্রাচীন শহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ অনুসন্ধান করা হয়েছিল। [৯]
বাড়িঘর নির্মাণের জন্য, চানহুদাড়ো এবং মহেঞ্জোদাড়োতে পোড়া ইটের ব্যবহার করা হয়েছিল [১০] চানহুদাড়োর বেশ কিছু নির্মাণ কর্মশালা, কর্মীদের বাসস্থান ওয়ার্কশপ বা শিল্প ও গুদামঘর হিসাবে চিহ্নিত করা গেছে। [১১]
চানহুদাড়োতে চুড়ি ও লাডল তথা মই ইত্যাদি তৈরি করা হত। [১২] হরপ্পা সীল সাধারণত হরপ্পা, মহেঞ্জাদারো এবং চানহুদারোর মতো বড় শহরগুলিতে তৈরি করা হত যা প্রশাসনিক কাজে সাথে জড়িত ছিল। [১৩]