চার বুঁদি Common Four-ring | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Lepidoptera |
পরিবার: | Nymphalidae |
গণ: | Ypthima |
প্রজাতি: | Y. huebneri |
দ্বিপদী নাম | |
Ypthima huebneri Kirby, 1871 |
চার বুঁদি[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Ypthima huebneri (Kirby)) প্রজাতি নিমফ্যালিডি (Nymphalidae) গোত্র ও 'স্যাটিরিনি' (Satyrinae) উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত প্রজাপতি।[২][৩][৩][৪]
চার বুঁদি প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৩০-৪০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৫][৬]
ভারতের প্রায় সর্বত্র, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ,থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[১]
প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
ডানার উপরিতল বাদামি বর্ণের ও নিম্নতল ধূসর সাদা এবং উজ্জ্বল ও চকচকে সরু সুতোর মতো কাঁপাকাঁপা খয়েরি বা বাদামি দাগযুক্ত (fine striations)।
ডানার উপরিতল ধূসর বাদামি ও কালচে বাদামির মিশ্রণ। উপরিতলে সামনের ডানার শীর্ষভাগের (apical) সামান্য নিচে হলুদ বলয়ে ঘেরা দুই তারাবিন্দু (doubled puipled) যুক্ত একটি বড় কালো চক্ষুবিন্দু (ocillus) বর্তমান। পিছনের গোলাকৃতি ডানায় পোস্ট-ডিসকাল অংশে নিচের দিকে টরনাসের সামান্য উপরে পাশাপাশি অবস্থিত দুটি বা তিনটি এক তারাবিন্দু (uni-puipled) যুক্ত অনুরূপ চক্ষুবিন্দু দেখা যায়। কিছু নমুনাতে কখনো সখনো উক্ত পোস্ট-ডিসকাল চক্ষুবিন্দুগুলি অনুপস্থিত থাকে। সিলিয়া (cillia) উভয় ডানাতেই সাদা।
ডানার নিম্নতল ধূসর সাদা। সামনের ডানায় শীর্ষভাগের সামান্য নিচে উপরিতলের অনুরূপ দুই তারাবিন্দু যুক্ত একটি বড় কালো চক্ষুবিন্দু বিদ্যমান। উক্ত চক্ষুবিন্দুটি ও তার চারিদিকের হলুদ বলয়কে পরিবেষ্টন করে আরও একটি সরু হালকা বাদামি বলয় বর্তমান যা নিচের দিকে সামান্য চওড়া ও বাইরের দিকে সামান্য বিস্তৃত। ডিসকাল ও সাবটার্মিনাল অংশে বেশ কিছু অস্পষ্ট ফ্যাকাশে বাদামি তির্যক ও আঁকাবাঁকা দাগ-ছোপ চোখে পড়ে। পিছনের ডানার শীর্ষভাগে একটি ও পোস্ট-ডিসকাল অংশে ৩ টি অনুরূপ চক্ষুবিন্দুর বাঁকানো সারি লক্ষ্য করা যায়। অধিকাংশ নমুনাতেই পিছনের ডানায় সামনের ডানার অনুরূপ ডিসকাল ও সাবটার্মিনাল দাগ-ছোপ দেখা যায়।
শুঙ্গ সাদায়-কালোয় ডোরাকাটা ও শীর্ষভাগ কালো। মাথা, বক্ষদেশ (thorax) ও উদর উপরিতলে ধূসর বাদামি ও নিম্নতলে ফ্যাকাশে সাদা।[৭]
শুষ্ক ঋতুরূপ আর্দ্র ঋতুরূপেরই মতন প্রায় একইরকম; তবে চক্ষুবিন্দুগুলি ডানার উভয়তলেই ফ্যাকাশে ও কম স্পষ্ট। নিম্নতলে পিছনের ডানার চক্ষুবিন্দুগুলি অস্পষ্ট ফোঁটার মত বা অনেকক্ষেত্রে অনুপস্থিত।[১][৭][৮]
সুলভ-দর্শন এই প্রজাতির উড়ান দুর্বল ও এরা ভূমির কাছাকাছি নিচু দিয়ে ওড়ে; একটানা বেশিক্ষন ওড়ে না এবং ওড়ার ভঙ্গিতে কিছুটা ঝাকি দেওয়ার লক্ষণ স্পষ্ট (jerking flight)। পাঁচ বুঁদি প্রজাতির ন্যায় এই প্রজাতিদেরও ভালো সংখ্যায় দেখা যায়; তবে প্রথমটির প্রাচুর্য বেশি। এরা প্রায়শই ডানা বন্ধ, আধ-মেলা বা পুরো মেলে ঘাসে, পাতায়, ডালে ও মাটিতে বসে স্বল্প সময় ধরে রোদ পোহায় ও মাঝেমধ্যেই ছোট ছোট গুল্মের ফুলে বসে অনেকক্ষন ধরে মধুপান করে। গ্রীষ্মের গোড়ায় এবং বিশেষত বর্ষার ঠিক পরেই এদের প্রাচুর্য নজরে পড়ে। এরা মাটির ভিজে ছোপে বসে খ্যাদ্যরস আহরণ করে।জঙ্গলের পথে, জঙ্গলের কিনারে বা ঝোপঝাড় পূর্ণ জায়গায় এদের রোজই দর্শন মেলে। উন্মুক্ত পাহাড়ী অঞ্চলে, পাহাড়ী ঘন-জঙ্গলে, সমতলের গাছ-গাছালি পূর্ণ স্থান, ঝোপঝাড় ও অরণ্যভূমি সর্বত্রই এরা বিরাজমান। পাহাড়ী জঙ্গলে পাদদেশ থেকে ১৬০০ মি, উচ্চতা পর্যন্ত মার্চ থেকে নভেম্বর মাসে এদের বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। সমতলেও এই প্রজাতির দেখা পাওয়া যায় ভালো সংখ্যায়।[৯]
শুককীট হালকা সবুজ বর্ণের ও দৈর্ঘ্যে প্রায় ১ ইঞ্চি (২৫ মিমি)। পিঠের মাঝখান দিয়ে একটি গাঢ় সবুজ রেখা অবস্থিত যেটি চতুর্থ দেহখন্ডে পৌঁছে সাদা বর্ণ ধারণ করে এবং মাথার চূড়া (crown) পর্যন্ত বিস্তৃত। একটি ফ্যাকাশে সবুজ প্বার্শরেখা দেখা যায়। শেষ দেহখন্ড (anal segment) দুভাগে বিভক্ত হয়ে সরু ছোট লেজ এর আকার ধারণ করেছে।[১০]