চিচেক হাতুন | |
---|---|
জন্ম | আনু. ১৪৮২ |
মৃত্যু | ৩ মে ১৪৯৮ কায়রো, মামলুক সালতানাত (বর্তমান মিশর) | (বয়স ৫৫–৫৬)
সমাধি | |
দাম্পত্য সঙ্গী | দ্বিতীয় মেহমেদ |
বংশধর | শাহজাদা জেম |
ধর্ম | সুন্নী ইসলাম |
চিচেক হাতুন (উসমানীয় তুর্কি: چیچک خاتون; মৃত্যু ৩রা মে ১৪৯৮) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদের একজন স্ত্রী এবং তাদের ছেলে উসমানীয় সিংহাসনের দাবিদার সুলতান জেমের মা।
তুর্কি পরিবারে জন্মগ্রহণ করা[১] চিচেক হাতুন ছিলেন আলী বে'র বোন।[২][৩][৪][৫][৬][৭][৮] তিনি কনস্টান্টিনোপলে মেহমেদকে বিয়ে করেন এবং ১৪৫৯ সালের ২২শে ডিসেম্বর তার একমাত্র ছেলে শাহজাদা জেমের জন্ম দেন।[১] তুর্কী ঐতিহ্য অনুসারে, সকল শাহজাদাদের প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সানজাক-বে (প্রাদেশিক গভর্নর) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৪৭৪ সালের ডিসেম্বর মাসে, জেমের ভাই শাহজাদা মুস্তাফা মৃত্যুবরণ করলে তিনি কোনিয়ার কারামান প্রদেশের শাসক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং চিচেক হাতুন তার ছেলের সঙ্গী হন।[৯]
১৪৮১ সালে সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদের মৃত্যুর পরে সিংহাসন দখলের লড়াইয়ে শাহজাদা জেম এর প্রথম হারের পর তিনি তার মা চিচেক হাতুন এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে কায়রোতে মামলুক সুলতানের নিকট নির্বাসনে চলে যান।[১০][১১] জেমের পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে, চিচেক হাতুনই তার সবচেয়ে নিবেদিত মিত্র ছিলেন। জেমের শিক্ষক গেদিক আহমেদ পাশা সিংহাসন আরোহণের ক্ষেত্রে জেমের বড় ভাই বায়েজিদের পক্ষাবলম্বন করেন।[১২] যদিও জেমের শিক্ষক তাকে পরিত্যাগ করে, সেক্ষেত্রে তিনি তার মা চিচেক হাতুনের কাছ থেকে ভালো রকমের সহযোগিতা লাভ করেন।[১৩]
১৪৮২ সালে বায়েজীদের কাছে দ্বিতীয় বার পরাজিত হবার পর জেম রোডসে পালিয়ে যান, যেখানে তিনি উসমানীয়দের এক তৎপর প্রতিপক্ষ এবং জেরুজালেমের সেন্ট জনের নাইটস হস্পিটালারের সর্বপ্রধান গুরু পিয়েরে ডি'আউবুসসান কর্তৃক গৃহীত হন। [১৪] পরবর্তীতে দি'আউবুসান বায়েজীদের সাথে একটি শান্তিচুক্তি করেন এবং জেমের জিম্মিলাভের এক পৃথক ঐকমত্যে পৌঁছান। দি'আউবুসান বায়েজীদকে জেমের ভরণপোষণের জন্য বার্ষিক ৩৫,০০০ দুকাত এর বিনিময়ে জেমকে বন্দি রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। কাজেই, নাইটরা অর্থের বিনিময়ে জেমকে ধোঁকা দেয় যদিও পরবর্তীকালে জেম রোডসে বন্দি হিসেবে ভালো সমাদর পান।[১৫] মিশরে, চিচেক হাতুন তার ছেলেকে মুক্ত করতে এবং মিশরে ফিরিয়ে আনতে মামলুক সুলতানকে তার স্ত্রীর মাধ্যমে তাগাদা দিচ্ছিলেন।[১৬][১৭] জনৈক নিকোলাস ডে এর বহনকৃত চিঠি দ্বারা প্রকাশিত হয় যে জেম তার মায়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন।[১৮] চিচেক হাতুন, নিজের ছেলেকে মিশরে নিয়ে আসতে এবং মামলুক দরবারে নিজের প্রভাব ব্যবহার করে কায়িতবে-কে এই প্রচেষ্টায় তাকে সাহায্য করার জন্য তাগাদা দেয়ার কথা কায়রো হতে গোয়েন্দাদের দ্বারা বায়েজীদের কানে পৌঁছে যায়।[১৯] দি'আউবুসান জেমকে ব্যবহার করে চিচেক হাতুন এবং কায়িতবে কে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার স্বর্ণখন্ড আদায় করেন জেমকে মিশরে নিয়ে আসার অভিনয় দ্বারা।[২০]
জেমের পক্ষ হতে চিচেক হাতুন বহুবছর ধরে লড়াই করেছেন এবং তার ভাইয়ের নিকট পরাজিত হওয়ার পর ইউরোপীয় জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে তার প্রচেষ্টায় সর্বপ্রধান মিত্র ছিলেন।[১৩]
১৪৯৮ সালের ৩রা মে প্লেগে ভুগে চিচেক হাতুন মৃত্যুবরণ করেন[২১] এবং কায়রোতে তাকে দাফন করা হয়। [২] যাইহোক, জেমের মৃত্যুস্থান নেপলস থেকে তার মরদেহ ফিরিয়ে আনা হয়েছিলো এবং তার বড় ভাই মুস্তাফার সমাধিস্তম্ভে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।[২২]
২০১৩ সালের তুর্কি ধারাবাহিক ফাতিহ-এ চিচেক হাতুন চরিত্রে অভিনয় করেন গেমজে ওযছেলিক।[২৩]
|
|