চীনের পরিবহন ব্যবস্থা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রধান বৃদ্ধি এবং সম্প্রসারিত হয়েছে। যদিও চীনের পরিবহন ব্যবস্থায় বিশাল অঞ্চল জুড়ে পরিবহন কেন্দ্রের (ট্রান্সপোর্ট নোডের) একটি বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে, তবে কেন্দ্রগুলি (নোডগুলি) আরও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত উপকূলীয় অঞ্চল এবং প্রধান নদীগুলির অন্তর্গত অন্তর্দেশীয় শহরগুলিতে অবস্থান করে।[১] চীনের পরিবহন অবকাঠামো অবস্থান এবং সামগ্রিকতা ভূগোলিক এলাকা দ্বারা ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। যদিও দূরবর্তী, গ্রামীণ এলাকাগুলি এখনও পরিবহন অ-যান্ত্রিক মাধ্যমের উপর নির্ভর করে, সাংহাই শহরের সাংহাই পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য চীনে একটি আধুনিক ম্যাগলেভ সিস্টেম তৈরি করা হয়েচছে। বিমানবন্দর, সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ আগামী দশকে চীনে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ দেবে।
রেলপথ চীনের প্রধান পরিবহন ব্যবস্থা। বিংশ শতকের মধ্যভাগের তুলনায় বর্তমান চীনের রেলপথের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছে। একটি বিস্তৃত রেলব্যবস্থা বর্তমানে সমগ্র চীন জুড়ে প্রসারিত। বড় বড় শহরগুলিতে পাতাল রেল হয় ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়েছে কিংবা নির্মাণাধীন বা পরিকল্পনাধীন অবস্থায় আছে। চীনের সড়ক ও মহাসড়ক ব্যবস্থাতেও দ্রুত পরিবর্ধন সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে চীনে মোটরযান ব্যবহারের পরিমাণ আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। বিশালাকার চীনের পরিবহন ব্যবস্থাটিও বহু পরিবহন নোড বা কেন্দ্রের সমন্বয়ে গঠিত বিশাল একটি নেটওয়ার্ক। তবে এই পরিবহন নোডগুলি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ সমুদ্র-উপকূলীয় এলাকা এবং দেশের অভ্যন্তরে বড় বড় নদীগুলির তীরে অবস্থিত। ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে চীনের পরিবহন অবকাঠামোতে বৈচিত্র্য ও বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে এখনও অযান্ত্রিক উপায়ে মালামাল পরিবহন ঘটতে দেখা যায়। অন্যদিকে আধুনিক সাংহাই শহর ও তার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির মাঝে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে অত্যাধুনিক ম্যাগ্লেভ (চৌম্বকীয় উত্তোলন) রেল ব্যবস্থা। চীনের পরিবহন ব্যবস্থার বেশির ভাগই ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পরে নির্মিত হয়েছে। তার আগে চীনের রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ২১,৮০০ কিমি। বর্তমানে চীনের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৮৬,০০০ কিমি। ১৯৯০-এর দশকে সরকারী উদ্যোগে চীনের সর্বত্র যোগাযোগ রক্ষাকারী মহাসড়কব্যবস্থা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যার ফলে ২০০৯ সালে এসে বর্তমানে মহাসড়ক ব্যবস্থার দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ৬৫,০০০ কিমি। বর্তানে হয়েছে ৭৪ হাজার কিলোমিটার।[২] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে এটি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মহাসড়ক ব্যবস্থা।
রেল পরিবহন
চীনের প্রধান শহর গুলিতে মেট্রো রেল ব্যবস্থা গড়া হয়েছে।চীনের সবচেয়ে বড় মেট্রো রেল ব্যবস্থা রয়েছে বেইজিং এ।এটি বেইজিং মেট্রো নামে পরিচিত।এই বেইজিং মেট্রো রেলের মোট ৫০০ কিমি রেলপথ রয়েছে।এছাড়া সাংহাই মেট্রো রয়েছে সাংহাই শহরে।থিয়েনচিন শহরে থিয়েনচিন মেট্রো ও গুয়াংজু শহরের গুয়াংজু মেট্রো ব্যবস্থা চালু রয়েছে।কুনমিং ও সিনঝিন শহরোরও মোট্রো রেল রয়েছে।
চীনে বর্তমানে পৃথিবীর মধ্যে বসচেয়ে বেশি উচ্চগতির রেলপথ রয়েছে।এই দেশে প্রায় ২০ হাঝার কিলোমিটার উ্চগতির রেলপথ রয়েছে। ১৮ হাজার কিলোমিটার উচ্চগতির রেলপথ নির্মীয়মাণ রয়েছে।এই দেশের প্রধান উচ্চগতির রেলপথ বা রেল রুট গুলি হল-
বেইজিং থিয়েনচিন ইন্টিরসিটি রেলওয়ে বা বেইজিং থিয়েনচিন উচ্চগতির রেলপথ নির্মাণের কথা প্রথম বলা হয় ২০০৫ সালে।এর পর ২০০৬ সালে চীন সরকার এর অনুমোদন দেয়।রেলপথটির নির্মাণ শুরু হয় ২০০৭ সালে ।এই নির্মাণ শঘষ হয় ২০০৮ সালে।ওই বছর বেইজিং ও থিয়েনচিন এর মাঝে উচ্চ গতির রেল চাালু হয়।এর ফলে বেইজিং ও থিয়েনচিন-এর মানুষ ৩০ মিনিটের মধ্যে শহর দুটিতে চলাচল করতে পাড়ছে।রেলপথটি উড়াল পথে নির্মাণ করা হয়েছে।এই রেলপথ বেইজিং এর বেইজিং দক্ষিণ রেলওয়ে স্টেশন এর সঙ্গে থিয়েনচিন রেলওয়ে স্টেশন কে যুক্ত করেছে।এই রেলপথ এর ১০০ শতাংশ ধারণ ক্ষমতা ২০১৫ সালে পূর্ন হয়েছে।এর জন্য দ্বিতীয় বেইজিং থিয়েনচিন ইন্টারসিটি রেলওয়ে নির্মাণের কথা চলছে। এই রেলপথ বেইজিং পূর্ব রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিনহাই রেল স্টেশন পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।
দেশটির পর্ধান তিনটি বিমান বন্দর রয়েছে বেইজিং, সাংহাই ও গুয়াংজু শহরে।