ছুলি | |
---|---|
প্রতিশব্দ | Urticaria |
বাহুতে ছুলি | |
বিশেষত্ব | চর্মবিজ্ঞান, রোগশয্যা রোগ-প্রতিরোধ বিদ্যা, এলার্জোলজি |
লক্ষণ | লাল, উত্থাপিত, চুলকানি দাগ[১] |
স্থিতিকাল | কয়েক দিন[১] |
কারণ | সংক্রমণের পর, এলার্জি প্রতিক্রিয়া এর ফলাফল[২] |
ঝুঁকির কারণ | হে ফেভার, হাঁপানি[৩] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | লক্ষণগুলির উপর ভিত্তি করে, প্যাচ পরীক্ষা[২] |
চিকিৎসা | অ্যান্টিহিস্টামিন, কর্টিকোস্টেরয়েড, এন্টি লিউকোটিন[২] |
সংঘটনের হার | ~২০%[২] |
ছুলি বা আমবাত(ইংরেজিতে “আর্টিকারিয়া” একটি ল্যাটিন শব্দ “আর্টিকা” হতে এসেছে যা অর্থ করলে দাঁড়ায় “পুড়ে যাওয়া”),[৪] সাধারণত যা বুঝায় একধরনের চর্মরোগ যা ফ্যাকাসে লাল রংয়ের, উত্থিত, চামড়ার উপর ছোট ছোট লাল ফুঁসকুড়ির মত দেখায় । ছুলি বা আমবাত চামড়ার উপর একটি জ্বলন্ত বা যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে ।[৫]
এগুলো সাধারণত অ্যালার্জিক কারণে হয়ে থাকে, তবে অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জিক কারণ ব্যতিরেকে অন্য কারণেও রক্তস্ফোট হয়ে থাকে ।
অধিকাংশ দীর্ঘস্থায়ী রক্তস্ফোট অজানা ইডিওপ্যাথিক কারণে হয়ে থাকে । প্রায় ৫০% রোগীর ক্ষেত্রে যাদের দীর্ঘস্থায়ী ছুলি হয়, এর কারণ একটি স্বয়ংক্রিয় ইমিউন প্রতিক্রিয়া ।[৬]
ছুলি বা আমবাতের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে ত্বকের কোনও অংশে লাল রংয়ের ফুঁসকুড়ির মত দেখতে কোনো কিছুর আবির্ভাব হওয়া । এগুলি আকারে পিন এর সমান অথবা কয়েক ইঞ্চি ব্যাসের হতে পারে ।
আক্রান্ত স্থানে কখনও কখনও জ্বালা-পোড়ার মত অনুভূতি হতে পারে ।
ছুলি বা আমবাত হওয়র কারণকে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে । পরিবেশে অবস্থিত বিভিন্ন উপাদান ছুলি বা আমবাত হওয়ার কারণ ঘটাতে পারে, এর মধ্যে গ্রহণকৃত ঔষধ[৭], খাবার কিংবা পরিবেশের অন্যান্য উপাদান[৮]অন্তর্ভুক্ত। গ্রীষ্মের গরম আবহাওয়া ও বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় এ রোগের সংক্রমণ বেশি হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ট্যাবলেট খেলে সমস্যাটি হতে পারে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলেও এটি হয়। একই কক্ষে অনেক মানুষ থাকলে, একই জিনিসপত্র ব্যবহার করলে ও অপরিচ্ছন্ন থাকলে এ ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে।
দীর্ঘস্থায়ী ছুলি বা আমবাতের কারণ খুব কম ক্ষেত্রেই শনাক্ত করা যেতে পারে ।[৯] কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগ সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়ার জন্য একটি দীর্ঘ সময়ের নিয়মিত এলার্জি টেস্টিং করার জন্য অনুরোধ করা হয়ে থাকে ।[১০][১১] দীর্ঘস্থায়ী ছুলিতে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে সাধারণ এলার্জি টেস্টিং এর মাধ্যমে কোনও ফল পাওয়া গেছে বলে এখনও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি ।[১০][১১] তাই দীর্ঘমেয়াদী ছুলিতে আক্রান্ত রোগীর জন্য সাধারণ এলার্জি টেস্টিং সুপারিশযোগ্য নয় ।[৯][১২]
তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী ছুলি উভয়ের ক্ষেত্রে থেরাপির প্রধান অবলম্বন হল রোগ সম্পর্কে রোগীর শিক্ষা, ছুলি বা আমবাত বৃদ্ধি পাওয়ার কারণসমূহ এড়িয়ে চলা এবং এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা ।
দীর্ঘমেয়াদী ছুলি বা আমবাতের চিকিৎসা কঠিন হতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে রোগের ফলাফল হিসাবে রোগীর বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য অক্ষমতা দেখা দিতে পারে ।
চিকিৎসার প্রথম ধাপ হচ্ছে হিস্টামিন এইচ ওয়ান রিসেপ্টর এর প্রতিবন্ধক হিসাবে যে সকল এন্টিহিস্টামিন কাজ করে তা ব্যবহার করা । প্রথম জেনারেশনের এন্টিহিস্টামিন যেমন ডাইফেনহাইড্রামিন(বেনাড্রিল), হাইড্রোঅক্সিজিন(আটারাক্স), কেন্দ্রীয় ও পেরিফেরাল উভয় এইচ ওয়ান রিসেপ্টরকে ব্লক করে এবং খুবই উপশমকারী হতে পারে । দ্বিতীয় জেনারেশনের এন্টিহিস্টামিনগুলো যেমন লোরাটাডিন(ক্লারিটিন), সেটিরিজিন(জাইরটেক) অথবা ডেসলোরাটাডিন(ক্লারিনেক্স) ইত্যাদির ব্যবহারও এক্ষেত্রে যথেষ্ট উপকারিতা দিতে পারে । সর্বাধিক উপকারিতা লাভের জন্য শুধুমাত্র রোগের তীব্রতার সময় ঔষধ সেবন না করে প্রতিদিন এন্টিহিস্টামিন ব্যবহার করা উচিত ।[১৩]
ক্রনিক ছুলি উপশমে অনেক ক্ষেত্রে গ্লুকোকর্ডিকয়েড ব্যবহার যথেষ্ট কার্যকর, তবে এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন অ্যাড্রিনাল প্রতিরোধ, ওজন বৃদ্ধি, অস্টিওপরোসিস সমস্যা, হাইপারগ্লাইসেমিয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে । সেইহেতু এসকল ওষুধ দীর্ঘসময় ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়ে থাকে ।[১৪]
মাস্ট সেল হতে হিস্টামিন এর সাথে লিউকোট্রিন নির্গত হয় । মন্টেলিউকাস্ট এবং জাফিরলিউকাস্ট এর মতো ওষুধগুলো লিউকোট্রিন রিসেপ্টর ব্লক করে এবং ছুলি রোগের উপশমে ব্যবহৃত হয়ে থাকে । তবে এ ওষুধগুলো এনএসএআইডি(NSAID) সংশ্লিষ্ট ক্রনিক ছুলিতে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর হয়ে থাকে ।
দুরারোগ্য ছুলি উপসর্গ উপশমে ব্যবহৃত অন্যান্য ওষুধ হতে পারে প্রদাহবিরোধী ওষুধ । ওমালিজুমাব এবং ইমিউনোসাপ্রেসানট সম্ভাব্য প্রদাহরোধী ওষুধ হতে পারে যে ওষুধগুলোতে ডেপসন, সালফাসেলাজিন, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ইত্যাদি উপাদান রয়েছে । ডেপসন হচ্ছে একটি সালফোন এন্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট যা প্রোস্টাগ্লানডিন ও লিউকোট্রিন এর কার্যকলাপকে দমন করে থাকে । এ সকল ওষুধ দুরারোগ্য ছুলির চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।[১৫]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; NIH2016
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; Jaf2015
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; Zub2010
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি