ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জন চার্লস ক্লে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বনভিলস্টন, কাউব্রিজ, গ্ল্যামারগন, ওয়ালস | ১৮ মার্চ ১৮৯৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১১ আগস্ট ১৯৭৩ সেন্ট হিলারি, গ্ল্যামারগন, ওয়ালস | (বয়স ৭৫)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক, লেগ ব্রেক, গুগলি ও ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার, প্রশাসক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র টেস্ট (ক্যাপ ২৮৮) | ১৭ আগস্ট ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২১ - ১৯৪৯ | গ্ল্যামারগন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ |
জন চার্লস ক্লে (ইংরেজি: Johnnie Clay; জন্ম: ১৮ মার্চ, ১৮৯৮ - মৃত্যু: ১১ আগস্ট, ১৯৭৩) গ্ল্যামারগনের বনভিলস্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েলসীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও প্রশাসক ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগন দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি অফ ব্রেক, লেগ ব্রেক, গুগলি ও ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন জনি ক্লে।
গ্ল্যামারগনের বনভিলস্টন এলাকায় চার্লস ও মার্গারেট ক্লে দম্পতির সন্তান ছিলেন। কার্ডিফে তার পিতার জাহাজীকরণ ব্যবসা ছিল।[১] ১৯১১ থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত উইনচেস্টার কলেজে অধ্যয়ন করেন।
উইনচেস্টারের থাকাকালীন ১৯১৫ ও ১৯১৬ সালে একাদশের পক্ষে খেলেন। ক্রিকেট বিশ্বে তিনি ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিচিত পান। তবে, অফ ব্রেক বোলিংয়েও দক্ষ ছিলেন। এমনকি দুটোই সমানে চালিয়ে যান। বলে স্পিন আনয়ণের পাশাপাশি উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে বিস্ময়করভাবে নিশানা বরাবর বোলিং করতেন ও তেমন আলতো বল ছুঁড়তেন না।
উইনচেস্টার কলেজে থাকাকালীন জনি ক্লে মূলতঃ ফাস্ট বোলিং করতেন। তবে, মাঝেমধ্যে লেগ স্পিন বোলিংয়েও অগ্রসর হতেন। ১৯২০ সালে প্রথমবারের মতো গ্ল্যামারগনের পক্ষে ফাস্ট বোলার হিসেবে অবতীর্ণ হন। ঐ বছরের পরের বছর দলটি সবেমাত্র প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিল। তবে, পিঠে কিছু সমস্যা অনুভূত হওয়ায় অফ স্পিন বোলিংয়ের দিকে ধাবিত হন তিনি।[২]
১৯২১ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত জনি ক্লে’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। পুরোটা সময়ই গ্ল্যামারগনের পক্ষে খেলেছিলেন তিনি। গ্ল্যামারগনের অন্যতম আন্তরিক ক্রিকেটারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন জনি ক্লে। ১৯২১ সালে কাউন্টি দলটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদা লাভের পর থেকে খেলতে শুরু করেন। এ দলের পক্ষে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত খেলেন। তন্মধ্যে, ছয় মৌসুম দলের নেতৃত্ব ভার গ্রহণ করেন ও কিছু সময় সম্মানীয় সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
১৯৪৯ সাল পর্যন্ত ক্লাবের পক্ষে খেলেন তিনি। তন্মধ্যে, ১৯২৪ থেকে ১৯২৭ এবং ১৯২৯ ও ১৯৪৬ সালে দলনেতার ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। শেষের বছরটিতে তার দল ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে যা ঐ পর্যায়ের ক্লাবের ইতিহাসের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল। ৪৮ বছর বয়স নিয়েও ১২.৭২ গড়ে ১২০ উইকেট পান।[২] ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত ক্লাবের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন এবং নিয়মিত অধিনায়ক মরিস টার্নবুলের সাথে ক্লাবের কার্যক্রম গতিশীলতা রাখার স্বার্থে অর্থ সংগ্রহের বিভিন্ন কার্যক্রম ও চুক্তিতে সহায়তা করেন।
১৯৩৭ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সর্বাধিক সফলতম বোলারের মর্যাদা লাভ করেন। ১৭৬ উইকেটের সংগ্রহটি গ্ল্যামারগনের রেকর্ড হিসেবে চিত্রিত হয়ে আছে। তন্মধ্যে, সোয়ানসীর সেন্ট হেলেন্স ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে খেলায় ১৭ উইকেট পান তিনি।[৩] দীর্ঘদিনের খেলোয়াড়ী জীবনে ১৯.১৭ গড়ে ১,৩১৫ উইকেট পেয়েছেন। মৌসুমে তিনবার শত উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন।
১৯৩৭ সালে নিজস্ব সেরা গ্রীষ্মকাল অতিবাহিত করেন। ওয়েস্টক্লিফে এসেক্সের বিপক্ষে ৯/৫৯ ও সোয়ানসীতে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৯/৬৬ বোলিং পরিসংখ্যানসহ ২১২ রান খরচায় খেলায় ১৭ উইকেট পান তিনি। ১৭.৩৪ গড়ে ১৭৬ উইকেট পান। এছাড়াও, ১৯৩৫ সালে লেনলিতে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে ৯/৫৪ পেয়েছিলেন। তবে, তিনি কোন হ্যাট্রিকের সন্ধান পাননি। ১৯৩৮ সালে নর্দাম্পটেন উপর্যুপরী চার বলে তিনজন ব্যাটসম্যানকে আউট করেন।
১৯৪৮ সালে জনি ক্লে প্রায় একাকী বোর্নমাউথে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ইনিংস ও ১১৫ রানে জয়লাভে ভূমিকা রাখেন। এরফলে, গ্ল্যামারগন দল প্রথমবারের মতো কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা লাভে সক্ষমতা দেখায়। ৯/৭৯ বোলিংয়ের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৪৮ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জনি ক্লে। ১৭ আগস্ট, ১৯৩৫ তারিখে ওভালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
১৯৩৫ সালে ওভালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে সদস্যরূপে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। খেলায় তিনি সমীহ জাগানো বোলিং করলেও কোন উইকেট লাভ করতে পারেননি ও ব্যাট হাতে তাকে মাঠে নামতে হয়নি।
৫০ বছর বয়সেও গ্ল্যামারগন দলের প্রধান খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেছিলেন। এ পর্যায়ে ১৯৪৮ সালে গ্ল্যামারগনের প্রথম কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। আগস্টে উপর্যুপরী দুই খেলায় ১৪৫ রান খরচায় ১৯ উইকেট দখল করেন। উভয়টিতেই তার দল ইনিংস ব্যবধানে জয়ী হয় ও শিরোপা লাভে এগিয়ে যায়।[৪]
তিনবার তিনি ইনিংসে নয় উইকেট লাভ করেছেন। ১৯৩৫ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে খেলার প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা ৯/৫৪ রানের বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। এছাড়াও, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৩২ পান।[৫] এছাড়াও, তিনি নিচেরসারির কার্যকরী ব্যাটসম্যান ছিলেন। দুইটি শতরানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ১৯২৭ সালে নিউজিল্যান্ডীয় একাদশের বিপক্ষে গ্ল্যামারগনের সদস্যরূপে অপরাজিত ১১৫ রানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন।[৬] ১৯২৯ সালে সোয়ানসীতে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি তার একমাত্র শতরান করেন। দশ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে জো হিলসের সাথে নবম উইকেট জুটিতে ২০৩ রান তুলেন। এ সংগ্রহটি অদ্যাবধি ক্লাব রেকর্ড হিসেবে টিকে রয়েছে।[১]
জন আরলটের দৃষ্টিতে তিনি ইংল্যান্ডের সেরা অফ-স্পিন বোলার ছিলেন।[৭]
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪৭ ও ১৯৪৮ সালে টেস্ট দল নির্বাচকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯৩৩ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত গ্ল্যামারগন কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব ইয়ারবুকে সাংবার্ষিক প্রবন্ধ লিখতেন। এ সকল প্রবন্ধের উপর ভিত্তি করে জন আরলট তাকে তার প্রিয় ক্রিকেট লেখক হিসেবে ঘোষণা করেন।[৮] ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৭৩ সালে মৃত্যুর পূর্ব-পর্যন্ত গ্ল্যামারগনের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।
ক্রিকেটের বাইরে তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিলেন। ফলশ্রুতিতে, তিনি নিয়মিতভাবে ক্রিকেট খেলতে পারেননি ও শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে খেলতেন। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় একনিষ্ঠতা লক্ষ্য করা যায়। গ্ল্যামারগন হান্টের সম্পাদক ছিলেন এবং ১৯২০-এর দশকে পিয়ার্সফিল্ড পার্কে পারিবারিক গৃহের মাঠে চেপস্টো রেসকোর্সের স্টুয়ার্ড ও পরিচালক ছিলেন। তার স্মৃতির সম্মানার্থে সেখানে বার্ষিকাকারে দীর্ঘপাল্লার স্টিপলচেচ অনুষ্ঠিত হয়।[১]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রয়্যাল আর্টিলারিতে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে ফ্রান্সে নিযুক্ত ছিলেন।[৯] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মেজর পদবী নিয়ে টেরিটোরিয়াল আর্মির দায়িত্বে ছিলেন।[৯]
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ১৯২৮ সালে কাউব্রিজে জেনলিয়ান ম্যারি হমফ্রে নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির তিন সন্তান ছিল। ১১ আগস্ট, ১৯৭৩ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে ওয়ালসের সেন্ট হিলারি এলাকায় জনি ক্লে’র দেহাবসান ঘটে।