জর্জ জনস্টোন স্টোনি | |
---|---|
জন্ম | ওকলে পার্ক, বির, কাউন্টি ওফালি, আয়ারল্যান্ড | ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৮২৬
মৃত্যু | ৫ জুলাই ১৯১১ | (বয়স ৮৫)
জাতীয়তা | আইরিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ট্রিনিটি কলেজ, ডাবলিন |
পরিচিতির কারণ | স্টোনি স্কেল, ইলেক্ট্রন |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | কুইন'স কলেজ গালওয়ে, আয়ারল্যান্ডের কুইন'স বিশ্ববিদ্যালয় |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন | জে জে টমসন |
জর্জ জনস্টোন স্টোনি এফআরএস (১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৮২৬ – ৫ই জুলাই ১৯১১) একজন আইরিশ পদার্থবিদ ছিলেন। "বিদ্যুতের মৌলিক একক পরিমাণ" হিসাবে ইলেকট্রনের উপস্থাপক হিসেবে তিনি সবচেয়ে বিখ্যাত।[১]
১৮৭৪ সালের প্রথম দিকে তিনি ইলেকট্রনের ধারণাটি দিয়েছিলেন, যদিও ইলেকট্রন শব্দটি তিনি তখন বলেননি। প্রাথমিকভাবে এটির নাম ছিল "ইলেকট্রাইন"।[২] এবং ইলেকট্রন শব্দটি এসেছিল ১৮৯১ সালে।[৩][৪][৫] তিনি তাঁর জীবদ্দশায় প্রায় ৭৫টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন।
স্টোনির জন্ম আইরিশ মিডল্যান্ডসের কাউন্টি অফালির বিরের কাছে ওকলে পার্কে। তাঁর বাবার নাম ছিল জর্জ স্টোনি (১৭৯২–) এবং মায়ের নাম অ্যানি ব্লাড (১৮০১–১৮৮৩)। স্টোনি পরিবার বহুদিনকার একটি প্রতিষ্ঠিত অ্যাংলো-আইরিশ পরিবার।[৬] তিনি ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছিলেন এবং ১৮৪৮ সালে বি.এ. ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক হয়েছিলেন। ১৮৪৮ সাল থেকে ১৮৫২ সাল অবধি তিনি কাউন্টি ওফালির বির প্রাসাদে উইলিয়াম পার্সনস, রোজের তৃতীয় আর্লের জ্যোতির্বিজ্ঞানের সহায়ক হিসাবে কাজ করেছিলেন। সেখানে পার্সনস বিশ্বের বৃহত্তম দূরবীন তৈরি করেছিলেন, একটি ৭২ ইঞ্চি পারসনটাউনের লিভিয়াথান। একইসাথে স্টোনি পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিত নিয়ে অধ্যয়ন অব্যাহত রাখেন এবং ১৮৫২ সালে ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ থেকে এম.এ. ডিগ্রি প্রাপ্ত হন।
১৮৫২ সাল থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত স্টোনি কুইন'স কলেজ গালওয়েতে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ছিলেন। ১৮৫৭ সাল থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত তিনি আয়ারল্যান্ডের কুইন'স বিশ্ববিদ্যালয়ে সচিব হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন, ডাবলিনে এটি তাঁর প্রশাসনিক চাকরী ছিল। ১৮৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে, তিনি আয়ারল্যান্ডে জন কৃত্যক (সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষার সুপারিন্টেন্ডেন্টের পদে চলে এসেছিলেন, ১৮৯৩ সালে অবসর গ্রহণের আগে পর্যন্ত তিনি এই পদেই কাজ করে গিয়েছিলেন। সেই বছর তিনি ইংল্যান্ডের লন্ডনে বসবাস শুরু করেছিলেন। ১৯১১ সালে লন্ডনের নটিং হিলে নিজের বাড়িতে স্টোনি মারা যান।[১] ডাবলিনে বহু দশক ধরে বৈজ্ঞানিক কর্মের দায়িত্ব থেকে দূরে থাকার সময়, স্টোনি নিজে থেকেই বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি কয়েক দশক ধরে রয়েল ডাবলিন সোসাইটির প্রথমে অনারারি সেক্রেটারি এবং পরে সহ-সভাপতি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এটি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির অনুকরণে তৈরি একটি বৈজ্ঞানিক সংস্থা। লন্ডনে চলে যাওয়ার পরে স্টোনি সেখানে সংস্থার কাউন্সিলেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অধিকন্তু, তিনি মাঝেমধ্যে ১৮৬০ এর দশকের শুরু থেকে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্স এর বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা কমিটিগুলিতে অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
স্টোনি বিভিন্ন পত্রিকায় পঁচাত্তরটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন, তবে প্রধানত রয়েল ডাবলিন সোসাইটির পত্রিকায় তিনি বেশি লিখেছিলেন। তিনি মহাজাগতিক পদার্থবিজ্ঞান এবং গ্যাস তত্ত্বের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। গ্যাসের গতিগত তত্ত্ব থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে তিনি ঘরের তাপমাত্রা এবং চাপে ঘন মিলিমিটার গ্যাসে অণুর সংখ্যা অনুমান করেছিলেন। স্টোনির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক কাজটি ছিল "বিদ্যুতের পরমাণুর" মাত্রার ধারণা এবং গণনা। ১৮৯১ সালে, বৈদ্যুতিক আধানের মৌলিক একক বর্ণনা করার জন্য তিনি 'ইলেক্ট্রন' শব্দটির প্রস্তাব করেছিলেন[৭], এবং এই অঞ্চলে গবেষণায় তাঁর অবদানগুলি, ১৮৯৭ সালে জে জে টমসন দ্বারা ইলেকট্রন কণার আবিষ্কারের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। His scientific work was carried out in his spare time.[৮]
১৮৬১ সালের জুনে স্টোনি রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হয়েছিলেন। "তরঙ্গের বিস্তার," – "ক্যালকা স্পার এর আঁশযুক্ত নমুনায় দেখা বলয়," সম্পর্কিত গবেষণা পত্রের লেখক এবং রয়্যাল আইরিশ একাডেমিতে প্রকাশিত আণবিক পদার্থবিজ্ঞান ইত্যাদি বইয়ের জন্য, এছাড়া জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং সাধারণ পদার্থবিজ্ঞানের সাথে তাঁর পরিচিতির জন্য তাঁর নির্বাচন হয়েছিল [৯]
সমসাময়িক পদার্থবিজ্ঞানে একটি সমন্বিত ক্ষেত্র তত্ত্বের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মাপনী হিসাবে প্ল্যাঙ্ক স্কেলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। প্ল্যাঙ্ক স্কেলের অবশ্য পূর্বানুমান করেছিলেন জর্জ স্টোনি।[৫] স্টোনি বুঝতে পেরেছিলেন যে বৃহত্তর প্রভাব যেমন মহাকর্ষ এবং ক্ষুদ্রতম প্রভাব যেমন তড়িৎ চুম্বকত্ব আভাস দিচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই একটি মধ্যবর্তী স্কেলের প্রয়োজন যেখানে বাস্তব পার্থক্য যৌক্তিক হতে পারে। এই মধ্যবর্তী স্কেলটি ভর, দৈর্ঘ্য, সময় ইত্যাদির একক (স্টোনি স্কেল একক) নিয়ে গঠিত, তবুও ভর হচ্ছে এর ভিত্তি-প্রস্তর।
স্টোনি ভর mS (সমসাময়িক পরিভাষায় প্রকাশ করা):[১০]
যেখানে ε0 হল খোলা জায়গার প্রবেশ্যতা, e হল মৌলিক আধান এবং G হল মহাকর্ষ ধ্রুবক, এবং যেখানে α হল সূক্ষ্ম-গঠন ধ্রুবক এবং mP হল প্ল্যাঙ্ক ভর।
প্ল্যাঙ্ক স্কেলের মতো স্টোনি স্কেল সাধারণভাবে ক্ষুদ্র মহাজাগতিক এবং বৃহৎ মহাজাগতিক প্রক্রিয়াগুলির মধ্যে একটি প্রতিসম যোগসূত্র হিসাবে কাজ করে এবং তবুও এটি তড়িৎ চুম্বকত্ব এবং মাধ্যাকর্ষণের একীকরণের দিকে অনন্যমুখী মনে হয়। সুতরাং উদাহরণস্বরূপ যেখানে প্ল্যাংকের দৈর্ঘ্য হল হ্রাসপ্রাপ্ত কম্পটন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের মধ্য বর্গমূল এবং যে কোনও ভরের শোয়ার্জশিল্ড ব্যাসার্ধের অর্ধেক, স্টোন দৈর্ঘ্য হ'ল 'তড়িৎ চৌম্বকীয় ব্যাসার্ধের মধ্য বর্গমূল (চিরায়ত ইলেকট্রন ব্যাসার্ধ দেখুন) এবং যে কোনও ভর m এর মাধ্যাকর্ষণ ব্যাসার্ধের অর্ধেক:
যেখানে হল হ্রাসপ্রাপ্ত প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক এবং c হল আলোর গতিবেগ। এগুলি কেবল গাণিতিক নির্মাণ কারণ দৈর্ঘ্য কত ছোট হতে পারে তার কিছু ব্যবহারিক সীমা থাকতে হবে। স্টোনির দৈর্ঘ্য যদি ন্যূনতম দৈর্ঘ্য হয় তবে বস্তুর তড়িৎ চৌম্বকীয় ব্যাসার্ধ বা তার অর্ধ মাধ্যাকর্ষণ ব্যাসার্ধ ব্যবহারিকভাবে অসম্ভব, যেহেতু এর মধ্যে একটিকে স্টোনি দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোট হতে হবে। যদি প্ল্যাঙ্ক দৈর্ঘ্য সর্বনিম্ন হয় তাহলে হয় কোনও দেহের হ্রাস্প্রাপ্ত কম্পটন তরঙ্গদৈর্ঘ্য বা তার অর্ধ মাধ্যাকর্ষণ ব্যাসার্ধ ব্যবহারিকভাবে অসম্ভব যেহেতু এর একটি অবশ্যই প্ল্যাঙ্ক দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোট। তদতিরিক্ত, স্টোনির দৈর্ঘ্য এবং প্ল্যাঙ্ক দৈর্ঘ্য উভয়ই ন্যূনতম দৈর্ঘ্য হতে পারে না।