ঘটনাবলী | মহাবিষুব | উত্তর অয়নান্ত | জলবিষুব | দক্ষিণ অয়নান্ত | ||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | মার্চ | জুন | সেপ্টেম্বর | ডিসেম্বর | ||||
বছর | ||||||||
দিন | সময় | দিন | সময় | দিন | সময় | দিন | সময় | |
২০১৪ | ২০ | ১৬:৫৭ | ২১ | ১০:৫১ | ২৩ | ০২:২৯ | ২১ | ২৩:০৩ |
২০১৫ | ২০ | ২২:৪৫ | ২১ | ১৬:৩৮ | ২৩ | ০৮:২১ | ২২ | ০৪:৪৮ |
২০১৬ | ২০ | ০৪:৩০ | ২০ | ২২:৩৪ | ২২ | ১৪:২১ | ২১ | ১০:৪৪ |
২০১৭ | ২০ | ১০:২৮ | ২১ | ০৪:২৪ | ২২ | ২০:০২ | ২১ | ১৬:২৮ |
২০১৮ | ২০ | ১৬:১৫ | ২১ | ১০:০৭ | ২৩ | ০১:৫৪ | ২১ | ২২:২৩ |
২০১৯ | ২০ | ২১:৫৮ | ২১ | ১৫:৫৪ | ২৩ | ০৭:৫০ | ২২ | ০৪:১৯ |
২০২০ | ২০ | ০৩:৫০ | ২০ | ২১:৪৪ | ২২ | ১৩:৩১ | ২১ | ১০:০২ |
২০২১ | ২০ | ০৯:৩৭ | ২১ | ০৩:৩২ | ২২ | ১৯:২১ | ২১ | ১৫:৫৯ |
২০২২ | ২০ | ১৫:৩৩ | ২১ | ০৯:১৪ | ২৩ | ০১:০৪ | ২১ | ২১:৪৮ |
২০২৩ | ২০ | ২১:২৪ | ২১ | ১৪:৫৮ | ২৩ | ০৬:৫০ | ২২ | ০৩:২৭ |
২০২৪ | ২০ | ০৩:০৭ | ২০ | ২০:৫১ | ২২ | ১২:৪৪ | ২১ | ০৯:২০ |
বার্ষিক গতির ফলে নিরক্ষরেখায় বা বিষুব রেখায় সূর্যের গমনকে বিষুব বলে।[৩] সূর্য বছরে দুবার বিষুব রেখার উপর দিয়ে গমন করার ফলে প্রতিবছর দুটি বিষুব ঘটে, যথা: জলবিষুব বা সেপ্টেম্বর বিষুব এবং মহাবিষুব বা মার্চ বিষুব।
সূর্যের দক্ষিণায়নকালে সৌরপাদ বিন্দুটি উত্তর গোলার্ধ ছেড়ে দক্ষিণ গোলার্ধে প্রবেশ করার সময় যখন এটি নিরক্ষ রেখা অতিক্রম করে তখন এ বিষুবকে জলবিষুব বলা হয়। পঞ্জিকা বছর ও সৌর বছরের মধ্যে পার্থক্যের ফলে জলবিষুব সেপ্টেম্বর মাসের ২১ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে যেকোন দিন ঘটতে পারে। সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় এই বিষুব ঘটে বলে একে দক্ষিণাভিমুখী বিষুবও বলা হয়।
যেকোন বিষুবের দিনে, কোন ব্যক্তি নিরক্ষ রেখায় অবস্থান করলে তিনি একেবারে পূর্বদিক বরাবর সূর্যোদয় ও পশ্চিমদিক বরাবর সূর্যাস্ত দেখবেন। কিন্তু সূর্যের দক্ষিণাভিমুখী বিষুব ঘটার আগের দিনগুলোতে তিনি কিছুটা উত্তরদিকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখবেন এবং দক্ষিণাভিমুখী বিষুব ঘটার পরবর্তী দিনগুলোতে তিনি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখবেন কিছুটা দক্ষিণ দিকে।
উত্তর গোলার্ধে জলবিষুবকে গ্রীষ্মের শেষ ও শরতের শুরু তথা শারদীয় বিষুব হিসেবে, অন্যদিকে দক্ষিণ গোলার্ধে একে শীতের শেষ ও বসন্তের শুরু তথা বসন্ত বিষুব হিসেবে গণ্য করা হয়।[৪]
সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় যে দিন সূর্য নিরক্ষ রেখায় আগমণ করে সে দিনই জলবিষুব ঘটে। জলবিষুব হল সময়ের সেই বিন্দু যা সাধারণত সৌর বছরের দৈর্ঘ্য নিরুপণে ব্যবহার করা হয়।
আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী নিকট অতীত ও ভবিষ্যতের কয়েকটি ভৌগোলিক ঘটনার তারিখ ও সময়ের তালিকা নিচে দেওয়া হল। উক্ত ঘটনাবলীর জন্য বাংলাদেশের প্রমাণ সময় এবং ভরতের প্রমাণ সময় নির্ণয় করতে হলে উপরের তালিকায় প্রদত্ত সময়ের সাথে যথাক্রমে ৬ ঘণ্টা এবং ৫:৩০ ঘণ্টা যোগ করতে হবে। যেমন— ২০১৯ খ্রীস্টাব্দের জলবিষুব বাংলাদেশের প্রমাণ সময় অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখের ১৩:৫০ ঘটিকায় এবং ভারতের প্রমাণ সময় অনুযায়ী ১৩:২০ ঘটিকায় সংঘটিত হয়েছে।
দক্ষিণে সূর্য ভৌগোলিক নিরক্ষরেখার যে বিন্দুর মধ্য দিয়ে যায় বা যে বিন্দুকে অতিক্রম করে তাকে তুলার প্রথম বিন্দু বলা হয়। যাই হোক, বিষুবের অয়নচলের ফলে ঐ বিন্দুটি সর্বদা তুলর তারা মণ্ডলে থেকে বরং কন্যা তারামণ্ডলে গমন করে।
জলবিষুব ৭২৯ খ্রীস্টপূর্বাব্দে তুলা থেকে কণ্যাতে গমন করে। আগামী ২৪৩৯ খ্রীস্টাব্দে এটি সিংহ তারামণ্ডলের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে।
মহাবিষুব ও জলবিষুব উভয় বিষুবীয় দিনেই, সূর্য একেবারে পূর্বদিকে উদিত হয়ে পশ্চিমদিকে অস্ত যায়। অর্থাৎ এই দিন নিরক্ষ রেখায় অবস্থানকারী ব্যক্তি একেবারে পূর্ব দিগন্তে সূর্যোদয় ও পশ্চিম দিগন্তে সূর্যাস্ত দেখবেন। কিন্তু বিষুবীয় দিন ব্যতীত অন্যান্য সময়ে নিরক্ষ রেখা থেকে সূর্যের উদয় ও অস্ত কিছুটা উত্তরে অথবা দক্ষিণে পরিলক্ষিত হবে। বিষুবীয় দিনে পৃথিবীর অধিকাংশ অক্ষাংশে অর্থাৎ পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র ঊষা ও গোধুলির ব্যবধান প্রায় ১২ ঘণ্টা হয় অর্থাৎ দিন ও রাত প্রায় সমান হয়।
জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞানুসারে যে মুহূর্তে সূর্যের উপরের অংশ পৃথিবীর দিগন্ত রেখাকে স্পর্শ করে সেই মুহূর্তে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত ঘটে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সূর্যালোকের প্রতিসরণের দরুন সৌর চাকতিটি পৃথিবীর অভিক্ষেপের (দিগন্তের) নিচে থাকা সত্ত্বেও সূর্য দিগন্তের উপরে দৃশ্যমান হয়। বিশদভাবে বলা যায়, সৌর চাকতির জ্যামিতিক কেন্দ্র পৃথিবীর পূর্ব দিগন্ত অতিক্রম করার কয়েক মিনিট আগেই পূর্ব দিকে উজ্জ্বল সৌর চাকতির আবির্ভাব তথা সূর্যোদয় ঘটে এবং অনুরূপভাবে সৌর চাকতির কেন্দ্র পৃথিবীর পশ্চিম দিগন্ত রেখা অতিক্রম করে নিচে গমন করলেও সূর্যাস্ত হয় কয়েক মিনিট পরে। এসব কারণে বিষুবীয় সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য একেবারে সমান না হয়ে এদের মধ্যে সামান্য পার্থক্য ঘটে। নিরক্ষ রেখা থেকে দূরবর্তী অক্ষাংশগুলোতে যেখানে সূর্য খাড়াভাবে অবস্থান না করে হেলে থাকে সেখানে এ পার্থক্য আরও বেশি হয়।