জেনগি রাজবংশ | |||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১১২৭–১২৫০ | |||||||||||
জেনগি রাজবংশের সর্বোচ্চ এলাকা | |||||||||||
রাজধানী | আলেপ্পো | ||||||||||
প্রচলিত ভাষা | অঘুজ তুর্কি আরবি | ||||||||||
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম | ||||||||||
সরকার | আমিরাত | ||||||||||
আমির | |||||||||||
• ১১২৭–১১৪৬ | ইমাদউদ্দিন জেনগি (প্রথম) | ||||||||||
• ১২৪১–১২৫০ | মাহমুদ আল মালিক আল জহির (শেষ) | ||||||||||
ইতিহাস | |||||||||||
• প্রতিষ্ঠা | ১১২৭ | ||||||||||
• বিলুপ্ত | ১২৫০ | ||||||||||
মুদ্রা | দিনার | ||||||||||
|
জেনগি রাজবংশ ছিল অঘুজ তুর্কি বংশোদ্ভূত একটি মুসলিম রাজবংশ।[১] সেলজুক সাম্রাজ্যের পক্ষ হয়ে তারা সিরিয়ার অংশবিশেষ ও উত্তর ইরাকের শাসন পরিচালনা করে।[২]
ইমাদউদ্দিন জেনগি এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। ১১২৭ সালে তিনি মসুলের সেলজুক আতাবেগ (গভর্নর) হন।[৩] দ্রুত তিনি উত্তর সিরিয়া ও ইরাকে প্রধান ক্ষমতাশালী তুর্কি ব্যক্তি হয়ে উঠেন। ১১২৮ সালে তিনি অরতুকি আমিরদের কাছ থেকে আলেপ্পো জয় করেন। ১১৪৪ সালে ক্রুসেডারদের কাছ থেকে এডেসা জয় করেন। এ ঘটনা তাকে মুসলিম বিশ্বে একজন বীরের মর্যাদা দেয়। দুই বছর পর ১১৪৬ সালে একজন দাস কর্তৃক তিনি নিহত হন।[৪]
ইমাদউদ্দিনের মৃত্যুর পর তার অঞ্চল বিভক্ত হয়ে যায়। মসুল ও ইরাকের অংশ তার বড় ছেলে প্রথম সাইফউদ্দিন গাজি এবং আলেপ্পো ও এডেসা তার দ্বিতীয় পুত্র নুরউদ্দিন জেনগির হাতে যায়। নুরউদ্দিন তার পিতার মত দক্ষ প্রমাণিত হন। ১১৪৯ সালে তিনি এন্টিওকের যুকরাজ রেইমন্ডকে ইনাবের যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং পরের বছর ফোরাত নদীর পশ্চিমে এডেসা কাউন্টির অবশিষ্টাংশ জয় করেন।[৫] ১১৫৪ সালে বুরি আমিরদের কাছ থেকে দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এরপর তিনি দামেস্ক থেকে শাসন করতে থাকেন। নুরউদ্দিনের সাফল্য বৃদ্ধি পেতে থাকেন। এন্টিওকের আরেকজন যুবরাজ রেইনল্ড অব শাটিলন গ্রেপ্তার হন এবং তার এলাকা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ১১৬০ এর দশকে নুরউদ্দিন জেরুজালেমের রাজা প্রথম আমালরিকের সাথে ফাতেমীয় খিলাফতের নিয়ন্ত্রণলাভের জন্য প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হন। শেষপর্যন্ত নুরউদ্দিনের কুর্দি সেনাপতি শিরকুহ ১১৬৯ সালে মিশর জয়ে সমর্থ হন। কিন্তু মিশরের গভর্নর হিসেবে শিরকুহর ভাতিজা ও উত্তরাধিকারী সালাউদ্দিন নুরউদ্দিনের নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।[৬]
সালাউদ্দিনকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নুরউদ্দিন মিশর অভিযানের পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু ১১৭৪ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার পুত্র ও উত্তরাধিকারী আস সালিহ ইসমাইল আল মালিক এসময় শিশু ছিলেন এবং আলেপ্পো পালাতে বাধ্য হন। সেখানে তিনি ১১৮১ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। এসময় তাকে হত্যা করা হয়। মসুলের আতাবেগ তার স্থলাভিষিক্ত হন। সালাউদ্দিন দুই বছর পর আলেপ্পো জয় করেন। ফলে সিরিয়ায় জেনগি শাসনের অবসান হয়।
১৩ শতক পর্যন্ত জেনগি রাজবংশ উত্তর ইরাকে শাসন করতে সক্ষম হয়। ১২৫০ সালের আগ পর্যন্ত তাদের শাসন চূড়ান্তভাবে সমাপ্ত হয়নি।