জ্যোতি কুমার সিনহা হচ্ছেন ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী প্রাপ্ত একজন ভারতীয় পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বিহার পুলিশে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ছিলেন। তিনি ১৯৬৭ ব্যাচের বিহার ক্যাডারের ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে ভারতের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের মহাপরিচালক এবং পরে ভারতের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ভারতীয় গোয়ান্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং তথা র' এর প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জে কে সিনহা ভারতের বিহারের পাটনায় জন্মগ্রহণ করেন। পাটনার সেন্ট জেভিয়ার্স হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করে পাটনা কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স সহ স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি তার পিতা ও দাদার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসে যোগদান করেন। তাঁর পিতামহ প্রয়াত শ্রী এ কে সিনহা ১৯৩৯ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে বিহারের পুলিশের আইজি হয়েছিলেন। জে কে সিনহার বাবাও ভারতীয় পুলিশের একজন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনিও তার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিহার পুলিশের আইজি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। অর্থাৎ, পুরোদস্তুর পুলিশি পরিবারেই জ্যোতি কুমার সিনহার বেড়ে উঠা। পুলিশি কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এবং পুলিশের চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি শিক্ষা বিস্তার ও সমাজসেবাতেও বিস্তর অবদান রেখেছেন। তার কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় স্তরেও এর স্বীকৃতি মিলেছে।
জ্যোতি কুমার সিনহা বিহারে সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক শ্রেণীর একটি দলিত সম্প্রদায় মুশহর উপজাতির জীবন উন্নীত করার জন্য অবদান রাখেন। মুশহর সম্প্রদায় বংশপরম্পরায় ইঁদুর ধরার পেশার সাথে যুক্ত। ভারতের ২৭ লক্ষ মুশহর জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে মাত্র তিন শতাংশ শিক্ষিত। জে কে সিনহা এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতে কাজ করেন। ২০০৫ সালে তিনি মুসাহার শিশুদের বিনামূল্যে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে একটি অলাভজনক সংস্থা শোষিত সেবা সংঘ (এসএসএস) প্রতিষ্ঠা করেন । বর্তমানে তিনি পাটনার শিবালয় রোডে ৫০০ জনেরও বেশি ছেলে-মেয়েদের পাঠদানের জন্য একটি সিবিএসই-অধিভুক্ত আবাসিক স্কুল সফলভাবে চালাচ্ছেন।[১]
২০১৯ সালে, তিনি সামাজিক কাজ তথা সমাজসেবার ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য ভারত সরকার কর্তৃক ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।[২][৩]