টিউলিপ সিদ্দিক | |
---|---|
ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি সিটি মিনিস্টার | |
কাজের মেয়াদ ৯ জুলাই ২০২৪ – ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ | |
প্রধানমন্ত্রী | কিয়ার স্টারমার |
চ্যান্সেলর | র্যাচেল রিভস |
পূর্বসূরী | বিম আফোলানি |
উত্তরসূরী | এমা এলিজাবেথ |
সদস্য, ক্যামডেন লন্ডন বরো কাউন্সিলের (রিজেন্টস পার্ক) | |
কাজের মেয়াদ ৬ মে ২০১০ – ২২ মে ২০১৪ | |
পূর্বসূরী | থিওডর ব্ল্যাকওয়েল |
উত্তরসূরী | নাদিয়া শাহ |
সংসদ সদস্য (হ্যামস্টিড ও কিলবারন) | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ৭ মে ২০১৫ | |
পূর্বসূরী | গ্লেন্ডা জ্যাকসন |
সংখ্যাগরিষ্ঠ | ১,১৩৮ (২.১%) |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮২ মিশাম, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
নাগরিকত্ব | যুক্তরাজ্য |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
রাজনৈতিক দল | লেবার পার্টি (যুক্তরাজ্য) |
উচ্চতা | ১৫১ সেন্টিমিটার (৪ ফুট ১১+১⁄২ ইঞ্চি)[১] |
দাম্পত্য সঙ্গী | ক্রিশ্চিয়ান পার্সি (২০১৩–বর্তমান) |
সম্পর্ক | শেখ-ওয়াজেদ পরিবার |
পিতামাতা | শফিক আহমেদ সিদ্দিক (পিতা) শেখ রেহানা (মাতা) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন কিংস কলেজ লন্ডন |
ধর্ম | ইসলাম |
ওয়েবসাইট | Official website |
টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক (জন্ম: ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮২) একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেবার পার্টি এবং কো-অপারেটিভ পার্টির রাজনীতিবিদ। তিনি ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে লন্ডনের হ্যামস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।[২] এর পূর্বে তিনি রিজেন্ট পার্কের কাউন্সিলর এবং ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলের কালচার অ্যান্ড কমিউনিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ট্রেজারির অর্থনৈতিক সেক্রেটারি এবং সিটি মন্ত্রী হিসেবে ৯ জুলাই ২০২৪[৩][৪] থেকে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।[৫][৬]
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ১৯৮২ সালে লন্ডনের মিচামে সেন্ট হেলিয়ার হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন।[৭]
তার শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুরে। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনি হ্যাম্পস্টিড ও কিলবার্নে বসবাস করছেন। এই এলাকায় স্কুলে পড়েছেন ও কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টির সদস্য হওয়া টিউলিপ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্রেটার লন্ডন অথরিটি এবং সেইভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি।[৮]
ব্রিটেনের ৫৬ তম সাধারণ নির্বাচনে হ্যাম্পস্টিড ও কিলবার্ন আসন থেকে এমপি পদে বিজয়ী হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি, শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর জ্যেষ্ঠ কন্যা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ। ২০১৫ সালের নির্বাচনে টিউলিপের জয়ের ব্যবধান ছিল এক হাজার ১৩৮ ভোট। ৭ মে ১ হাজার ১৩৮ ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছিলেন টিউলিপ। টিউলিপ সিদ্দিকী পেয়েছিলেন ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট। আর কনজারভেটিভ পার্টির সায়মন মার্কাস পেয়েছেন ২২ হাজার ৮৩৯ ভোট।[৮] দুইবছর পর ২০১৭ সালে টিউলিপ সিদ্দিক আবারও জিতলেন যুক্তরাজ্যে। এবার ভোটের ব্যবধান বেড়েছে দশগুণেরও বেশি। লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে শ্রমিক দলের প্রার্থী টিউলিপ পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৪৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী ক্লেয়ার লুইচ লিল্যান্ড পেয়েছেন টিউলিপের অর্ধেক ভোট। তার পক্ষে রায় দিয়েছেন মাত্র ১৮ হাজার ৯০৪ জন।[৯]
২০১৫ সালে টিউলিপ ব্রিটিশ লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিপরিষদে সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হয়।
২০১৭ সালে ব্রিটেনের লেবার পার্টির ছায়া শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক এমপি।[৮]
স্বামী ক্রিস পার্সির সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে বসবাস করেন। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে আজালিয়া জয় পার্সি ও ছেলে রাফায়েল মুজিব সেন্ট জন পার্সি।[১০]
২০১৯ সালে, টিউলিপ বাংলাদেশের রাজনীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছিলেন কিন্তু তার নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ব্যবহার করার অভিযোগের মুখে পড়েছিলেন। ২০১৭ সালের একটি সভার ফুটেজে তাকে এসব সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে দেখা যায়, যেখানে তিনি বলেন, "আপনাদের সমর্থন ছাড়া, আমি আমার আসনে জিততে পারতাম না।"[১১] এর আগে, তিনি আওয়ামী লীগের ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য শাখা ও নির্বাচনী কৌশল দলের জন্য কাজ করার কথা স্বীকার করেছিলেন। দু'জন লেবার কর্মকর্তা আরও দাবি করেছিলেন যে আওয়ামী লীগ তার ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণাকে সমর্থন করেছে।[১২]
২০১৫ সালে, টিউলিপ সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, যেটি শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষে মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে অভিযুক্ত। টিউলিপ ঐ অনুষ্ঠানে তার খালার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছিলেন, যদিও পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশি রাজনীতি থেকে নিজেকে আলাদা করার চেষ্টা করেছিলেন।[১৩]
২০২৪ সালের আগস্টে, দ্য টাইমস এর একটি প্রতিবেদনে এটি প্রকাশিত হয় যে টিউলিপ যে বাড়িতে বসবাস করছিলেন তা একজন ব্যবসায়ীর মালিকানাধীন, যার আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।[১৪] দুই বছর আগে, তিনি সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বাড়িতে বসবাস করার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। ওই সম্পত্তিটি সালমানের ছেলের নামে একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে আইল অব ম্যান-এ নিবন্ধিত ছিল।[১৪][১৫]
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এ প্রকাশিত হয় যে টিউলিপ ২০০৪ সালে আবদুল মোতালিফ নামের একজন ডেভেলপারের (যিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত) থেকে লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছিলেন।[১৬][১৭][১৮] এই অভিযোগের পর, তিনি একটি স্বাধীন তদন্তের জন্য মন্ত্রিপরিষদ মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাছে আহবান জানান।[১৭][১৯] ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে টিউলিপকে নিয়ে তদন্তের বিষয়ে মন্ত্রিত্বের মানদণ্ডবিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস বলেন,তৎকালীন উপহার সম্পর্কিত একটি ভূমি রেজিস্ট্রি হস্তান্তর ফর্মে স্বাক্ষর করা সত্ত্বেও টিউলিপ সিদ্দিকি কিংস ক্রসে তাঁর ফ্ল্যাটের মালিকানার উৎস সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। [২০]
২০২৪ সালে হাসিনা সরকারের পতনের পর জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক টিউলিপের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সাথে ২০১৩ সালে ঘটিত একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতার মাধ্যমে ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত শুরু করে যদিও তার সমর্থিত সূত্র বলেছে এগুলো মিথ্যা অভিযোগ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।[২১][২২] মন্ত্রিত্বের মানদণ্ডবিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস এ বিষয়ে বলেন, যে ছবিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টিউলিপের খালা এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ছবি রয়েছে তাতে এমপি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে কোনও আন্তঃসরকারি আলোচনায় বা কোনও ধরণের সরকারি ভূমিকায় তাঁর কোনও সম্পৃক্ততা ছিল না।[২৩]
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, দ্য টেলিগ্রাফ একটি প্রতিবেদনে অভিযোগ করে যে টিউলিপ এবং আওয়ামী লীগের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচ বিনামূল্যে উপভোগ করেছিলেন। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ছিল £৩৫৮.৮০ (প্রায় ১ লক্ষ টাকা), যার মধ্যে লাঞ্চ অন্তর্ভুক্ত ছিল।[২৪][২৫]
যুক্তরাজ্যের সংসদ (১৮০১–বর্তমান) | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী গ্লেন্ডা জ্যাকসন |
সংসদ সদস্য হ্যামস্টিড ও কিলবার্ন এর সংসদ সদস্য ২০১৫–বর্তমান |
নির্ধারিত হয়নি |