অন্যান্য নাম | মা ডি ডাল |
---|---|
উৎপত্তিস্থল | ভারতীয় উপমহাদেশ |
অঞ্চল বা রাজ্য | পাঞ্জাব অঞ্চল, ভারতীয় উপমহাদেশ |
প্রধান উপকরণ | মাষকলাই |
৩৫০ কিলোক্যালরি (১৪৬৫ কিলোজুল) | |
ডাল মাখনি বা ডাল মাখানি (উচ্চারণ: daal makh-nee, "মাখনের মতো ডাল") এক প্রকার খাদ্যপদ, যা ভারতীয় উপমহাদেশের পাঞ্জাব অঞ্চল থেকে উদ্ভব হয়েছে। এর প্রধান উপাদানগুলি হলো মাষকলাই, শিম (রাজমা), মাখন এবং ক্রিম। খাবারটিতে ক্রিমের ব্যবহার এটিকে সমৃদ্ধ করে তুলে; তবে ক্রিমের পরিবর্তে দই, দুধ বা কোনও দুগ্ধজাত উপাদান দিয়েও খাবারটি প্রস্তুত করা যেতে পারে।
ডাল মাখানি ভারতীয় উপমহাদেশের একটি প্রধান খাবার। দেশভাগের পরে ভারতে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, যখন পাঞ্জাবের অনেক লোক ভারতের উত্তর অঞ্চলগুলিতে চলে যায়।[১] পাঞ্জাবি প্রবাসীরা ভারত এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পাড়ি জমানোর সাথে সাথে খাবারটি স্থানীয় জনগণের কাছে উদ্যোগী পাঞ্জাবি অভিবাসী কুন্দন লাল জাগ্গি, কুন্দন লাল গুজরাল এবং ঠাকুর দাসের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করে,[২][৩] যারা ভারতের দিল্লীর দরিয়াগঞ্জে মতি মহল রেস্তোঁরা চালু করেছিলেন।।[৪]
ডাল মাখনি প্রথমে পাঞ্জাবীরা তৈরি করেছিলেন এবং বর্তমানে এটি ভারতীয় রন্ধনশৈলীর অন্যতম প্রধান খাদ্যপদ হিসাবে স্বীকৃত, বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁয়'ও এ খাবারটি পরিবেশন করা হচ্ছে। ডাল মাখানির বহুমুখী জনপ্রিয়তার কারণ: এটি একটি সমৃদ্ধ নিরামিষ খাবার এবং এটি মূল খাবার হিসাবে পরিবেশন করা যেতে পারে, খাবারটি বুফেতে অন্যান্য খাবারের সহযোগী হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ভারতে লাল বা হলুদ মসুর ডাল ভিত্তিক স্যুপ এবং তরকারিগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান খাদ্যপদ।
ডাল মাখানির ঐতিহ্যবাহী প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি সময় সাপেক্ষ পদ্ধতি, যা সম্পূর্ণ হতে ২৪ ঘণ্টা সময় নিতে পারে। আধুনিক রান্নার সরঞ্জামগুলির প্রাপ্যতার সঙ্গে (যেমন: প্রেসার কুকার) খাবারটি প্রস্তুতের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়ে ২-৩ ঘণ্টা হয়ে যায়। ডালগুলি অবশ্য পুরো রাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হয় বা সেরা স্বাদের জন্য সর্বনিম্ন ৫-৬ ঘণ্টা পানিতে রাখতে হয়।
সারা রাত শিম (রাজমা) ভিজিয়ে রাখতে হবে। রান্নার আগে শিম আবার পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। মসুর ডালও ভিজিয়ে রাখতে হবে ঘণ্টা দু’য়েক। এবার মুসুর ডাল ও শিম একসঙ্গে সামান্য লবণ-হলুদ মাখিয়ে প্রেশার কুকারে সেদ্ধ হতে দিতে হবে। ডাল সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে নিতে হবে। একটি পাত্রে মাখন গরম করতে হবে। তাতে তেজপাতা, গোটা জিরা, লবঙ্গ, এলাচ ও দারচিনি ফোড়ন দিতে হবে। এরপর একে একে পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, রসুন বাটা ও টমেটো বাটা দিয়ে মশলা কষতে হবে। স্বাদমতো লবণ, হলুদ গুঁড়ো, চিনি ও মরিচ গুঁড়ো দিতে হবে। মশলা কষানো হয়ে গেলে সেদ্ধ ডাল তাতে দিয়ে দিতে হবে। ডাল ভাল করে ফুটে ঘন হয়ে এলে ফ্রেশ ক্রিম ও ধনিয়া পাতা দিয়ে দিতে হবে। মিনিট পাঁচেক নেড়েচেড়ে ধনিয়া পাতা কুঁচি ও কাঁচা মরিচের ফালি ছড়িয়ে নামিয়ে নিতে হবে। উপর থেকে আরও একটু ফ্রেশ ক্রিম ও মাখন ছড়িয়ে পরিবেশন করা যাবে ডাল মাখনি।[৫]