ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! | |
---|---|
![]() ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! চলচ্চিত্রের পোস্টার | |
পরিচালক | দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় |
প্রযোজক | আদিত্য চোপড়া দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় |
রচয়িতা | শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় |
চিত্রনাট্যকার | দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় ঊর্মি জুবেকর |
উৎস | শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সত্যান্বেষী ও অর্থমনর্থম |
শ্রেষ্ঠাংশে | সুশান্ত সিং রাজপুত আনন্দ তিওয়ারি স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় |
সুরকার | বিভিন্ন শিল্পী |
চিত্রগ্রাহক | নিকোস অ্যান্ড্রিৎসাকিস |
সম্পাদক | মানস মিত্তল নম্রতা রাও |
প্রযোজনা কোম্পানি | যশ রাজ ফিল্মস দিবাকর ব্যানার্জি প্রোডাকশনস |
পরিবেশক | যশ রাজ ফিল্মস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩৯ মিনিট[২] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ৩৫ কোটি টাকা[৩] |
আয় | ৩৬ কোটি টাকা[৩][৪][৫] |
ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! হলো ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এবং হিন্দি ভাষায় নির্মিত একটি ভারতীয় রহস্য অ্যাকশন-থ্রিলার চলচ্চিত্র।[৬] দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রযোজিত ও পরিচালিত এই ছবিটির সহ-প্রযোজক ছিলেন আদিত্য চোপড়া।[৭] বাঙালি সাহিত্যিক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সৃষ্ট কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর কাহিনি অবলম্বনে ছবিটি নির্মিত।[৮] এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন সুশান্ত সিং রাজপুত, আনন্দ তিওয়ারি ও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ২০১৫ সালের ৩ এপ্রিল মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়। ছবিটির একটি সিক্যোয়েল নির্মাণেরও পরিকল্পনা ছিল, যেখানে সুশান্ত সিং রাজপুত ব্যোমকেশ বক্সী চরিত্রে পুনরায় অভিনয় করবেন এমন কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটা হয়ত আর হয়ে উঠবে না। তবে একজন তরুণ গোয়েন্দা চরিত্রে সুশান্তকে বেশ ভাল উপস্থাপন করা হয়েছে দর্শকদের কাছে। সুশান্ত সিং রাজপুত ব্যোমকেশ চরিত্রটি যেন একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে গোয়েন্দাপ্রেমী দের কাছে।
১৯৪২ সালের যুদ্ধবিধ্বস্ত কলকাতার প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবিটির উপজীব্য এক দুর্ধর্ষ অপরাধীর বিরুদ্ধে সদ্য কলেজ পাস করা ব্যোমকেশ বক্সীর (সুশান্ত সিং রাজপুত) প্রথম অভিযান।
অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের (আনন্দ তিওয়ারি) বাবা একজন বিশিষ্ট রসায়নবিদ। তিনি হঠাৎ নিখোঁজ হলে অজিত ব্যোমকেশকে নিয়োগ করে তার অনুসন্ধানে। কয়েকটি সূত্র আবিষ্কার করার পর ব্যোমকেশের অজিতের বাবা প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা গজানন শিকদারকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন। তার মৃতদেহ গজাননের কারখানার ভিতর আবিষ্কৃত হলে আপাতদৃষ্টিতে মামলাটির নিষ্পত্তি ঘটেছে বলে মনে হয়। কিন্তু এরপর গজাননকেও বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়। শেষ পর্যন্ত ব্যোমকেশ অপ্রত্যাশিতভাবে একটি হেরোইন চোরাচালানকারী চক্রের সন্ধান পায়। সেই চক্রটি চালাত এক দুর্ধর্ষ অপরাধী, যে একাধিক নামে ও ছদ্মপরিচয়ে পরিচিত। সম্ভবত সে একটি বিপজ্জনক খেলা শুরু করেছিল, যা শুধুমাত্র অপরাধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সমগ্র কলকাতা শহরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিল।
দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে একটি ছবি তৈরি করতে চান, যাতে ভারত নিজস্ব এক গোয়েন্দা চরিত্র লাভ করে। ২০১৩ সালের ২৮ জুন যশ রাজ ফিল্মস ও দিবাকর ব্যানার্জি প্রোডাকশনসের যৌথ-প্রযোজনা উদ্যোগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! নামে দিবাকরের সঙ্গে প্রথম ডাইরেকশনাল আউটিং-এর কথা ঘোষণা করা হয়।[১৫] ২০১৩ সালের জুলাই মাসে দিবাকর জানান যে যশ রাজ ফিল্মস "বাংলা ছাড়া সমস্ত ভাষায় ৩১টি ব্যোমকেশ উপন্যাসের" স্বত্ব কিনে নিয়েছে।[১৬]
শ্যুটিং শুরু হওয়ার আগে অভিনেতা নির্বাচনের জন্য কর্মশালার আয়োজন করা হয়।[১৭] একটি সাক্ষাৎকারে সুশান্ত সিং রাজপুত বলেছিলেন, "শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স ছবিটির মুক্তির পর ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! ছবিটির জন্য আমি দু-তিন মাস ছুটি নিয়েছিলাম। ১৯৪০-এর দশকের কেশবিন্যাস, শরীর, বাচনভঙ্গি প্রকাশের জন্য ছবিটিতে অনেক কিছু করার ছিল।"[১৮] মনীষ মালহোত্রা ছবির পোশাক পরিকল্পনা করেন।[১৯]
সেটের নকশা প্রস্তুত করেন বন্দনা কাটারিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের টালমাটাল পরিস্থিতিতে থাকা মানুষজনের জীবনযাত্রাকে প্রতিফলিত করার কথা মাথায় রেখেই এই সেটটি তৈরি হয়েছিল।[২০] ঐতিহ্যবাহী বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ অঞ্চলটিকে ১৯৪৩ সালের প্রাক্-স্বাধীনতা যুগের চেহারায় ফিরিয়ে আনার জন্য পথে সেকেলে গাড়ি ও পুরনো ট্রাম নামানো হয়েছিল।[২১] প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, পুরনো জগতের চেহারা ফিরিয়ে আনতে প্রচুর পরিমানে ভিএফএক্স-এর ব্যবহার করা হয়েছিল।[২০]
খোসলা কা ঘোসলা ছবিটির পর দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় এই ছবিটি নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব তিনি আমির খানের কাছে গিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে সে চুক্তিটি বাতিল হয়ে যায়। কারণ, আমির খান এই ছবিটির বদলে ধুম ৩ ছবিতে অভিনয় করবেন বলে মনস্থির করেন।[২২] ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সুশান্ত সিং রাজপুত ব্যোমকেশ বক্সীর চরিত্রে রূপদান করতে রাজি হন।[২৩] প্রথম দিকের প্রতিবেদন থেকে বোঝা গিয়েছিল যে, ফ্যাশান ডিজাইনার সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের সহকারী দিব্যা মেনন এই ছবিতে সুশান্ত সিং রাজপুত অভিনীত চরিত্রটির স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে পদার্পণ করতে চলেছেন।[১১]
প্রধান নারী চরিত্রে প্রথমে রানি মুখোপাধ্যায়ের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু নায়িকার চরিত্রে কয়েকটি ঘনিষ্ঠ শয্যাদৃশ্য থাকায় তিনি প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন।[২৪] পরে চরিত্রটিতে রূপদান করার প্রস্তাব দেওয়া হয় বাঙালি অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে। ২০১৪ সালের ৬ নভেম্বর দিবাকর বলেন যে, স্বস্তিকার অভিনীত চরিত্রটি অঙ্কন করা হয়েছে মাতা হারির ছায়া অবলম্বনে।[৯] ২০১৪ সালের মার্চে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায় যে, মেইয়াং চ্যাং এই ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন।[১৩] ওই বছরই মেয়ে মাসে জানা যায় যে, নীরজ কবিও এই ছবিতে অভিনয় করছেন।[২৫]
২০১৪ সালের গোড়ার দিকে এই ছবির শ্যুটিং শুরু হয়।[২৬] শেষ হয় ২০১৪ সালের ১২ মে।[২৭] ছবির একটি অংশের শ্যুটিং হয় কলকাতা ও মুম্বই শহরে। কয়েকটি দৃশ্যের শ্যুটিং হয় মুম্বইয়ের বাইকুল্লা অঞ্চলের একটি পরিত্যক্ত মিলে।[২৫] ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই কলকাতায় শ্যুটিং-এর স্থানগুলির নাম চূড়ান্ত হয়ে যায়।[২৮] এছাড়া শ্যুটিং হয় কলকাতার লালবাজার, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কফি হাউস ও বো ব্যারাকসে।[২৯] ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে ছবির কলাকুশলীদের আগরপাড়াতেও শ্যুটিং করতে দেখা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।[২১]
ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! | |||||
---|---|---|---|---|---|
বিভিন্ন শিল্পী কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম | |||||
মুক্তির তারিখ | ১৪ মার্চ ২০১৫[৩০] | ||||
ঘরানা | কাহিনিচিত্রের সাউন্ডট্র্যাক | ||||
দৈর্ঘ্য | ২৬:৫৭ | ||||
সঙ্গীত প্রকাশনী | যশ রাজ মিউজিক | ||||
|
অ্যালবামের শিল্পীদের মধ্যে স্নেহা খানওয়ালকরই একমাত্র সংগীতশিল্পী যিনি ইতিপূর্বে সাউন্ডট্র্যাক সৃজন করেছিলেন।[৩১] "লাইফ’জ আ বিচ" শিরোনামে যে ট্র্যাকটি টিজারে ব্যবহৃত হয়, সেটি রচনা করে নতুন দিল্লির ব্যান্ড জয়েন্ট ফ্যামিলি। ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ পূর্ণাঙ্গ "বচ কে বক্সী" গানটি ওয়াইআরএফ-এর প্রাতিষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে একটি মিউজিক ভিডিওর আকারে প্রকাশিত হয়। এই ভিডিওটিতে সুশান্তকে একটি পার্কিং লটে নাচতে দেখা যায়।[৩২] পরের দিনই ওয়াইআরএফ এই ছবির সব ক-টি গান একটি অডিও জ্যুকবক্স ফরম্যাটে ইউটিউবে আপলোড করে।[৩৩]
ট্র্যাক তালিকা | |||||
---|---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | গীতিকার | সুরকার | শিল্পী(বৃন্দ) | দৈর্ঘ্য |
১. | "ক্যালকাটা কিস" | ম্যাডবয়/মিংক | ম্যাডবয়/মিংক | ইমাদ শাহ, সাবা আজাদ | ৩:০৯ |
২. | "বচ কে বক্সী" | স্নেহা খানওয়ালকর, দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় | স্নেহা খানওয়ালকর, দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় | গৌরী জয়কুমার, বিগ ডিল, টমসন অ্যান্ড্রিউজ, ট্রেভর ফার্টাডো, র্যাপ: স্মোকি দ্য ঘোস্ট, ক্র্যাজ প্রোফেসা | ৫:৪৯ |
৩. | "ব্যোমকেশ ইন লাভ" | ঋষি ব্র্যাডো | ব্লেক | ঋষি ব্র্যাডো, অনিল ব্র্যাডো, উশ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় | ৩:১৮ |
৪. | "জানম" | সূর্যকান্ত সহনি | পিটার ক্যাট রেকর্ডিং কোং (পিসিআরসি) | সূর্যকান্ত সহনি | ৩:২৭ |
৫. | "চেজ ইন চায়নাটাউন" | সন্দীপ মাধবন | মোড একেএ | বৈষ্ণব বালসুব্রহ্মণ্যম, সন্দীপ মাধবন, মানস উল্লাস | ৩:৫৫ |
৬. | "লাইফ’স আ বিচ" | অক্ষয় দে | জয়েন্ট ফ্যামিলি | অক্ষয় দে | ৩:৩৫ |
৭. | "ইয়াং গুয়াং লাইভস" | আইজেএ | আইজেএ | আইজেএ | ৪:২৯ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ২৬:৫৭ |
নামচরিত্রটির পদবির ইংরেজি বানানে (Bakshi) ‘i’-এর বদলে ‘y’ অক্ষরটির ব্যবহার প্রসঙ্গে দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এটি করা হয়েছে "টাইপোগ্রাফিক্যাল সামঞ্জস্য" আনার জন্য। তার মনে হয়েছিল, ‘i’ অক্ষরটি "অত্যন্ত হালকা" এবং ‘y’ একটি "অধিকতর শক্তিশালী অক্ষর"।[৩৪]
২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর হ্যাপি নিউ ইয়ার ছবিটির সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় এই ছবিটির টিজার মুক্তি পায়।[৩৫] ছবির ট্যাগলাইন "এক্সপেক্ট দি আনএক্সপেক্টেড" (ইংরেজি: "Expect the Unexpected") এই টিজারের সঙ্গেই যুক্ত ছিল।[৩৬] ছবির টিজার মুক্তি পেয়েছিল ভাইনে। এটিই প্রথম ছবি যেটির টিজার ভাইনে মুক্তি পায়।[৩৭]
২০ ডিসেম্বর কলকাতায় ছবিটির প্রথম মোশন পোস্টার মুক্তি পায়।[৩৮] ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি অনলাইনে ডিটেকটিভ ব্যোকমেশ বক্সী! ছবির অফিসিয়াল ট্রেলরু মুক্তি পায়। হাওড়া ব্রিজের জন্মদিন উদযাপন করতে প্রযোজনা দল একটি বিশেষ তথ্যচিত্র প্রস্তুত করে এবং সেই দিন "ক্যালকাটা কিস" গানটিতে একটি ব্রিজটিকে নিয়ে একটি ফ্ল্যাশ মব করে।[৩৯]
মুম্বই কলেজে ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! ছবির দল একটি প্রচারমূলক অনুষ্ঠান করে। সেখানে এই ছবি থেকে অনুপ্রাণিত একটি ফ্যাশাস শো-এর আয়োজন করা হয়েছিল।[৪০] দ্বিতীয় ট্রেলারটি মুক্তি পায় ২০১৫ সালের ১০ মার্চ।[৪১][৪২]
সুশান্ত সিং রাজপুত ইন্ডিয়া পুছেগা সাবসে শানা কৌন? ও কমেডি নাইটস উইথ কপিল অনুষ্ঠানে এই ছবির প্রচার করেন।[৪৩][৪৪] ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ সি.আই.ডি. নামে একটি টেলিভিশন ধারাবাহিকেও সুশান্ত ছবিটির প্রচার করেন। সেখানে তিনি ব্যোমকেশের ভূমিকায় ও আনন্দ তিওয়ারি অজিতের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।[৪৫]
গেমসটুউইন (জি২ডব্লিউ) ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী!: দ্য গেম নামে একটি মোবাইল সংস্করণ গেম বাজারে ছাড়ে। এটি বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায়। এটি একটি হিডেন অবজেক্টস গেম।[৪৬] যশ রাজ ফিল্মসের লাইসেন্সিং বিভাগ যশ রাজ ফিল্মস লাইসেন্সিং-এর (ওয়াইআরএফএল) সঙ্গে উপস্থাপিত এই গেমটি ছবির কাহিনির ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়। এখানেও প্রধান ভূমিকায় দেখা যায় সুশান্ত সিং রাজপুতকে। সব কটি লেভেল সম্পূর্ণ করার পর খেলোয়াড়দের ‘ডিটেকটিভ সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়, যেটি তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে পারেন।
২৬ মার্চ নতুন দিল্লিতে অ্যামাজন ইন্ডিয়া ফ্যাশন উইকে (এআইএফডব্লিউ) নয়্যার ৪৩ নামে একটি অ্যাপারেল লাইন উপস্থাপিত হয়।[৪৭]
ছবিটির মুক্তির আগে দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, প্রথম ছবিটি সফল হলে তিনি ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজ করতে আগ্রহী।[৪১][৪৮][৪৯][৫০] ছবির মুক্তির পরে দিবাকর বলেন যে, এটির সিক্যোয়েলের পরিকল্পনা করা হয়ে গিয়েছে এবং তিনি আশা করছেন যে খুব শীঘ্রই সেটির কাজ শুরু করতে পারবেন।[৫১][৫২] তিনি বলেন, পরবর্তী ছবিগুলিতে ব্যোমকেশের অভিযানগুলির সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে তার সহকর্মী অজিত, প্রেমিকা সত্যবতী ও শত্রুর সম্পর্ক নতুন করে প্রকাশিত হবে।[৫৩][৫৪]
ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! সমালোচকদের প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়েছিল।[৫৫][৫৬]
হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকার রোহিত বৎস ছবিটিকে পাঁচের মধ্যে চার রেটিং দিয়ে বলেন, "ছবির ঘটনাক্রমের সূত্রপাত দূরে এবং পরিচালক ধীরে ধীরে দর্শককে তার মধ্যে টেনে আনেন। প্রাক-স্বাধীনতা যুগের কলকাতা প্রথম দৃশ্যগুলিতে ছবির প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করলেও অনতিকাল পরেই সেটিই একটি চরিত্রে পরিণত হয়। প্রায় প্রতিটি ফ্রেমেই নিশ্চিতভাবে সেটির প্রতি বিস্তারিত মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।"[৫৭]
কোইমোই-এর সুরভি রেডকরও ছবিটিকে পাঁচের মধ্যে চার রেটিং দেন এবং বলেন: "ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! একটি সুস্বাদু থ্রিলার। এই ছবিতে এমন সব উপাদান রয়েছে যা আপনার মস্তিষ্ককেও হতবাক করে দেবে। এ এমন এক রহস্য যা আপনিও সমাধান করতে চাইবেন। এক বিস্ময়কর গল্প এবং তার চেয়েও ভালো সেই গল্পটি বলার ভঙ্গি। তাই ছবিটি দেখুন। বলিউডে অপরাধমূলক রহস্যকাহিনি উন্নত হল! আমি ছবিটিকে ৪/৫ দিচ্ছি!"[৫৮] মিড-ডে পত্রিকায় সুরভি রেডকর ছবিটি সম্পর্কে বলেন: "যদি [দিবাকর] বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিনেম্যাটোগ্রাফার নিকোস অ্যান্দ্রিৎসাকিসের ঐকান্তিক নিষ্ঠায় সৃষ্ট স্মৃতিমেদুরতার এমন সুন্দর জাদু পৃথিবীতে ফিরে যেতে চান, তবে এটি দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।"[৫৯]
ডেকান ক্রনিকল পত্রিকার কুসুমিতা দাস ছবিটিকে পাঁচের মধ্যে ৩.৫ দিয়ে বলেন, "ছবিটি হুডানিটের মূল কাঠামোটিকে অনুসরণ করেছে --- ধাওয়া করা, রেড হেরিং, ধীরে ধীরে রহস্যের জাল বুনন থেকে রাজকীয় আকারে রহস্যোদ্ঘাটন। প্রচুর পরিমাণে রক্তপাতও দেখানো হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় সেই সময়টি কতটা উত্তেজনাময় ছিল।"[৬০]
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া পত্রিকার সৃজনা মিত্র দাস ছবিটিকে পাঁচে ৩.৫ দিয়ে লেখেন, "ব্যোমকেশ বক্সী এক প্রবাদপ্রতিম বাঙালি চরিত্র, যেটিতে সুশান্ত সিং রাজপুত সোৎসাহে প্রাণ দিয়েছেন – সুশান্ত সফলভাবে একটি হতাশাগ্রস্থ প্রাণোচ্ছল চরিত্রে রূপ দিয়েছে (এক সর্দারজি ট্যাক্সিচালক স্নায়ুদৌর্বল্যের সঙ্গে বলেছে, “ইয়ে বাবু কা নাট ঢিলা হ্যায়,’), চরিত্রটিতে তিনি মানিয়ে গিয়েছে, ফুলকাটা ধুতির খাঁজ থেকে লোমশ ভুরুর ভ্রুকুঞ্চন অবধি, সুন্দরভাবেই। নাটকীয় নীরজ কবি ও শান্ত আনন্দ তিওয়ারি সুন্দর সঙ্গত দিয়েছেন। একটি চীনা দল মৃতদেহে ভরা উঠোন ছেড়ে যাওয়ার পর আনন্দ কেয়ারটেকার পুঁটিরামকে (কম্পমান অথচ যথাযথ প্রদীপ্ত কুমার চক্রবর্তী) বলেন, ‘খুন রেহনে দে... ব্যস চায় বানা দে।"[৬১]
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার শুভ্রা গুপ্ত ছবিটিকে পাঁচের মধ্যে তিন দিয়ে উল্লেখ করেন, "বিশ্লেষণাত্মক ধরনে পৌঁছে এটি দেওয়ালে সেঁটে গিয়েছে। ধীরে ধীরে চড়তে থাকা উত্তেজনা গলে পড়েছে। ছবিটি যেখানে শেষ হওয়া উচিত ছিল, তার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এবং এটিই হতাশ করেছে। কিন্তু ততক্ষণে আপনি ছবিটি দেখে ফেলেছেন। একটি সত্যিকারের আন্তরিক চলচ্চিত্র। গোপন করার মতো কিছুই নেই এতে।"[৬২]
আইবিএন লাইভ ছবিটিকে পাঁচের মধ্যে তিন দিয়ে উল্লেখ করে, "ছবির প্লট শম্বুক-গতির, অত্যাবশ্যক ও আসন্ন বিপদের বিস্ময়কর অভাব ছবিটিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। গল্পটি গতিশীল এবং চরিত্রগুলি আযৌক্তিকভাবে ক্ষান্ত। যা পরে সংশোধিত হয়েছে। শেষে যে বড়ো ব্যাপারটি প্রকাশিত হল, তা আন্দাজ করা কঠিন ছিল না – সাহস করে বসুন, রেড হেরিং দেখে মনোযোগ হারাবেন না। দেখবেন, আপনিও সমাধান করে ফেলেছেন। ক্লাইম্যাক্সটি অপটু অভিনয়ে নষ্ট হয়েছে।"[৬৩] ফার্স্টপোস্ট পত্রিকার দীপাঞ্জনা পাল ছবিটিকে দশে আট দিয়েছেন।[৬৪]
বক্স অফিসে এই ছবির আয় বাজেটের তুলনায় সামান্যই বেশি ছিল। প্রথম দিনে ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সী! ভারতে আয় করে নিট ৪.২ কোটি টাকা।[৪] দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে ছবির আয় ছিল যথাক্রমে ৪.৫ কোটি ও ৫.৩৬ কোটি টাকা। সামগ্রিকভাবে সপ্তাহান্তে ছবিটি ভারতে আয় করে ১৪.১ কোটি টাকা।[৫] ৩ মে পর্যন্ত ছবিটি ভারতে আয় করেছিল ২৭.০৫ কোটি টাকা।[৪] ২৩ এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে ছবিটির আয় ছিল ৮.১২ কোটি টাকা।[৩][৪]
বছর | অনুষ্ঠান | পুরস্কার | প্রাপক | ফলাফল |
---|---|---|---|---|
২০১৬ | স্টারডাস্ট পুরস্কার | খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | নীরজ কবি [৬৫] | মনোনীত |