কর্মীবৃন্দ | |
---|---|
অধিনায়ক | রমিথ রাম্বুকেল্লা |
দলের তথ্য | |
শহর | কলম্বো |
রং | বেগুনী [১] |
প্রতিষ্ঠা | ২ ডিসেম্বর ১৮৯৯ |
স্বাগতিক মাঠ | পাইকিয়াসোথি সারাভানামুত্তু স্টেডিয়াম |
ধারণক্ষমতা | ১৫,০০০ |
ইতিহাস | |
শিরোপার সংখ্যা | ৩ |
প্রিমিয়ার ট্রফি জয় | ২ |
প্রিমিয়ার লিমিটেড ওভার্স টুর্নামেন্ট জয় | ১ |
টুয়েন্টি২০ টুর্নামেন্ট জয় | ০ |
উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড় | মুত্তিয়া মুরালিধরন তিলকরত্নে দিলশান রঙ্গনা হেরাথ |
দাপ্তরিক ওয়েবসাইট | tamilunioncricket |
তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাব শ্রীলঙ্কার কলম্বোভিত্তিক প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ক্লাব। অতিথি দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের খেলাগুলো আয়োজনে পি. সারাভানামুত্তু স্টেডিয়াম ব্যবহার করে। ক্লাবের বর্তমান অধিনায়কের দায়িত্বে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার পক্ষে ২১ টেস্টে অংশগ্রহণকারী চনকা ওয়েলেগেদারা।
ঊনবিশ শতাব্দীর শেষের বছরগুলোয় ক্লাব গঠন প্রক্রিয়া চলে। এ সময়ে দুইটি বিলুপ্ত প্রতিপক্ষীয় ক্লাব একীভূত হয়ে তামিল ইউনিয়ন ও অ্যাথলেটিক ক্লাব গঠন করে। দেশের সুপরিচিত তামিল আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও সরকারী চাকুরীজীবিদের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়। এ সকল ক্লাবের মধ্যে অন্যতম ছিল লঙ্কা স্পোর্টস ক্লাব নামে পরিচিত এ ক্লাবটি। প্রাইস পার্কভিত্তিক ক্লাবটি ১৮৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]
১৮৯৮ সালে ক্লাব পরিচালনায় ডি. মুথুস্বামী (সভাপতি), জি. এন. সি. পন্নাবালাম (সম্পাদক), শ্রীলঙ্কা সংসদের ভবিষ্যতের স্পিকার ও ক্লাব অধিনায়ক স্যার ওয়েথিলিঙ্গাম দুরাইস্বামী ছিলেন। দুরাইস্বামী পরবর্তীতে ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৮ মেয়াদে সভাপতি হন। অন্যদিকে, জি. এন. সি. পন্নাবালাম ১৯০৫ সালে একীভূত তামিল ইউনিয়ন ও অ্যাথলেটিক ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৩]
মার্চ, ১৮৯৯ সালে তামিল স্পোর্টস ক্লাব দ্বিতীয় দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কলম্বোয় ক্লাবের উদ্দেশ্য নিয়ে সভার আয়োজন করা হয়। সিটি কলেজ হলে অনুষ্ঠিত ঐ সভায় সিলন আইনসভার সাবেক সদস্য সম্মানীয় পি. কুমারাস্বামী সভাপতিত্ব করেছিলেন। এ সভায় পরিচালনা পরিষদ গঠিত হয়। এতে সিলন আইনসভার সদস্য স্যার পুনামবালাম অরুণাচলম, টি মুত্তু কুমারাস্বামী, এ. ই. স্ট্রং ও ই. সেলায়া উপস্থিত ছিলেন।[৪]
স্যার পুনামবালামের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা স্যার পুনামবালাম রামনাথন শ্রীলঙ্কার সলিসিটর জেনারেল ও পরবর্তীতে একীভূত তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাবের সভাপতি হন। এরপর, ই. ভি. রত্নম ১৯৩১ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে, ই. সেলায়া’র জ্যেষ্ঠ সন্তান ডব্লিউ.এম. শ্রীলঙ্কার প্রথম পূর্ণাঙ্গকালীন কোম্পানি রেজিস্ট্রার ছিলেন ও পরে সম্মানীয় সাধারণ সম্পাদক হন। তার আরেক সন্তান এল. ডব্লিউ. তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাবসহ অল-সিলন হকি দলের অধিনায়ক হন এবং পরবর্তীকালে জাতীয় দলের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৩][৫][৬]
১৮৯৯ সাল শেষে দুইটি প্রতিদ্বন্দ্বী তামিল ক্লাব একত্রিত হয়ে তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাব গঠন করে। টি. থিরুনাভাকারাসু ও খ্যাতনামা চিকিৎসক এবং সিলন আইনসভার সদস্য ডব্লিউ. জি. রকউডের সন্তান জন রকউড প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সম্মানীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন।[৩] বোরেলার ক্যাম্পবেল পার্কে ক্লাবটি তাদের অনুশীলন কর্ম সম্পাদন করে। এ মাঠে হকি, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিকসহ বিভিন্ন খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৩০ ও ১৯৬০-এর দশকে তামিল ইউনিয়ন ক্রিকেট ও অ্যাথলেটিক ক্লাব দেশের প্রধান হকি ক্লাবগুলোর অন্যতম ছিল। আন্দ্রিজ শীল্ড ও পাইওনিয়ার কাপের ন্যায় জাতীয় পর্যায়ের অনেকগুলো শিরোপা জয় করে দলটি।[৭] এ পর্যায়ে শ্রীলঙ্কা হক দল বিশ্বের সেরা হকি দলগুলোর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতো।[৮] এরপর থেকে ক্লাব ও জাতীয় পর্যায়ে হকির ভবিষ্যৎ উল্লেখযোগ্যভাবে থমকে যায়। এর প্রধান কারণ সম্ভবতঃ ক্রিকেটের জনপ্রিয়তায় আর্থিক বিনিয়োগঘটিত।
১৯৩৫ সালে ক্লাবটি তাদের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী মহাসমারোহে উদ্যাপন করে। ক্যাম্পবেল পার্কে অনুষ্ঠান হয়। এ মাঠ ছেড়ে স্থানান্তরিত হবার পূর্বে এটিই তাদের বড় ধরনের অনুষ্ঠান ছিল। এ অনুষ্ঠানটি ব্যাপকভাবে সফলতার স্বাক্ষর রাখে। উপদেষ্টামণ্ডলী, রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ ছিল।[৯] ১৯৩৭ সালে ক্লাবটি নতুন মাঠ নিজেদের করে নেয়। প্যাভিলিয়নের নামকরণ হয় কলম্বো ওভাল। পরবর্তীতে, সরকারী সহযোগিতায় মাঠ বরাদ্দে ক্লান্তিহীন চেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ ক্লাবের প্রধান ব্যক্তিত্বের নামানুসরণে পাইকিয়াসোথি সারাভানামুত্তু স্টেডিয়াম রাখা হয়।[৩] সিলনের গভর্নর মহামান্য স্যার রেজিনাল্ড এডওয়ার্ড স্টাবস ২৭ জানুয়ারি, ১৯৪০ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে কলম্বো ওভালের উদ্বোধন করেন।[১০] মাঝখানের বছরগুলোয় পাইকিয়াসোথি সারাভানামুত্তু’র তত্ত্বাবধানে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের উপযোগী করে মাঠ প্রস্তুত করা হয়। তৎকালীন কৃষি ও ভূমি মন্ত্রী এবং পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ডি. এস. সেনানায়েকে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন। তার প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ তামিল ইউনিয়নের সম্মানীয় সদস্য করা হয়।[১১]
১৯৬০-এর দশকের শুরুতে সোমাসুন্দরম স্কন্দকুমার ও সেলভা পারুমল ক্লাবের কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণে অগ্রসর হন। কলম্বোকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যান্য অঞ্চলে ক্রিকেট প্রতিভা অনুসন্ধান কর্ম চালান। এ কৌশলের ফলে ক্লাবে বেশ কয়েকজন উদীয়মান ক্রিকেটারের অন্তর্ভূক্তি ঘটে ও উপুল চন্দনা’র ন্যায় ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারে পরিণত হন।[৩] তবে, সর্বাপেক্ষা বর্ণাঢ্যময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে ক্লাব থেকে উঠে আসেন মুত্তিয়া মুরালিধরন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসের শীর্ষ উইকেট শিকারী হিসেবে শ্রীলঙ্কার পক্ষে ১৩৩ টেস্টে অংশ নিয়ে ৮০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করেন।[১২] অন্যান্য উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়ের মধ্যে রয়েছেন - শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ক্রিকেট তারকাদের অন্যতম ও সাবেক অধিনায়ক তিলকরত্নে দিলশান, সিঙ্গাপুর থেকে অভিবাসিত মহাদেবন সদাশিবম ১৯৪০-এর দশকে তামিল ইউনিয়নের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদাপ্রাপ্তিসহ অল-সিলনের অধিনায়কত্ব করেন; বিশ্বমানের স্পিন বোলার রঙ্গনা হেরাথ।
১৯৮১ সালে শ্রীলঙ্কা দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পূর্ণাঙ্গ সদস্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়। এর পরপরই তামিল ইউনিয়নের সদর দফতর ও পরবর্তীতে পুণঃনামাঙ্কিত পাইকিয়াসোথি সারাভানামুত্তু স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলার আয়োজন করা হয়।[৩] টি. মুরুগাসার ও সি. টি. এ. স্কাফটার এ সফলতায় বেশ উচ্ছাস ব্যক্ত করেন। কিন্তু, দুই বছর পর ১৯৮৩ সালে ব্ল্যাক জুলাইকালে দাঙ্গার শিকারে পরিণত হয়।[৩] তাসত্ত্বেও, ক্লাবটি নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার আয়োজন করে থাকে। তন্মধ্যে, ১৯৮৫ সালে ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয় করে।[৩]
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে পি. সারাভানামুত্তু ওভালকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের উপযোগী করে সম্প্রসারণ ও মাঠের সুযোগ-সুবিধার উন্নয়নে সচেষ্ট হয়। নতুন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে আর্ট মিডিয়া সেন্টার, জিম, পুল, খেলোয়াড়দের বিশ্রাম কক্ষ, বার ও লঞ্জের পাশাপাশি নতুন দুইস্তরবিশিষ্ট স্ট্যান্ড ক্লাবের প্রথিতযশা সদস্য ড. রঞ্জন চানমুগম, এম. সতাশিবম ও অল-সিলন ক্রিকেটার, ভারতে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কান হাইকমিশনার সি. কুমারাস্বামী’র পুত্র সতী কুমারাস্বামীর সম্মানার্থে নামকরণ করা হয়।[৩] এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও ক্লাবের ইতিহাসের পাশাপাশি সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্লাবকে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া ক্লাবের মর্যাদা এনে দিয়েছে। দলটি নিয়মিতভাবে বিসিসিএসএল জাতীয় প্রতিযোগিতায় শিরোপা জয় করে থাকে।
ক্লাব গঠনের পর থেকেই দলটি জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ক্রীড়ার সাথে যুক্ত পরিচালনা পরিষদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ক্লাবের প্রথম সম্মানীয় সাধারণ সম্পাদক ড. জন রকউড সিলন ক্রিকেট সংস্থার প্রথম সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বেশ কয়েক দশক ক্লাবের সফলতার সাথে জড়িত পরিবারের সদস্যরূপে ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সিলন ক্রিকেট সংস্থারও সভাপতিত্ব করে পাইকিয়াসোথি সারাভানামুত্তু। ১৯৩২ থেকে ১৯৩৬ সময়কালে ক্লাবের সম্মানীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী ডব্লিউ. এম. সেলায়া একই পদে সিলন হকি সংস্থা ও সিলন ক্রিকেট সংস্থার দায়িত্বে ছিলেন। নতুন শতকে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ব্যবস্থাপক হিসেবে সিটিএ শাফটার হকি ও ক্রিকেটের দ্বৈত আন্তর্জাতিক খেলায় ক্লাবের অধিনায়ক মনোনীত হয়েছিলেন।[৩] ১৯৮০-এর দশকে ১৯৮০ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ক্লাবের সভাপতি টি. মুরুগাসার ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সহঃসভাপতি হন। ফলশ্রুতিতে, বেশকিছু বছর ক্লাবটি শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে অগ্রসর হয়েছিল।[৩]
১৯৪৫-৪৬, ১৯৫০-৫১
১৯৯৯-২০০০
|title=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)