তিগ্রেন পেত্রোসিয়ান | |
---|---|
দেশ | সোভিয়েত ইউনিয়ন |
জন্ম | তিবিলিসি, সোভিয়েত ইউনিয়ন | ১৭ জুন ১৯২৯
মৃত্যু | আগস্ট ১৩, ১৯৮৪ মস্কো, সোভিয়েত ইউনিয়ন | (বয়স ৫৫)
খেতাব | গ্র্যান্ডমাস্টার |
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন | ১৯৬৩-৬৯ |
সর্বোচ্চ রেটিং | ২৬৪৫ (জুলাই, ১৯৭২) |
তিগ্রেন পেত্রোসিয়ান (রুশ: Тигра́н Варта́нович Петрося́н; আর্মেনীয়: Տիգրան Պետրոսյան; জন্ম: ১৭ জুন, ১৯২৯ - মৃত্যু: ১৩ আগস্ট, ১৯৮৪) সোভিয়েত-আর্মেনীয় গ্র্যান্ডমাস্টার। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। আর্মেনীয় পরিবারের সন্তান হিসেবে তিনি আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে বেড়ে উঠেন।[১] দাবা খেলায় অংশগ্রহণের পূর্বে তিনি রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করতেন।[২][৩]
১৯৪৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের জাতীয় মাস্টার উপাধিপ্রাপ্ত হন এবং ঐ বৎসরই মস্কোয় অবস্থানজনিত কারণে দাবা খেলায় দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে সক্ষম হন। ১৯৫১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন চ্যাম্পিয়নশীপে দ্বিতীয় হয়ে পরের বছর স্টকহোমে অনুষ্ঠিত ফিদে ইন্টারজোনাল টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেন। সেখানে তিনি প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন শেষে ১৯৫৩ সালে জুরিখে আয়োজিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপ ক্যান্ডিডেট প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ঐ প্রতিযোগিতায় ৫ম স্থান অর্জন করলেও প্রয়োজনীয় পয়েন্ট সংগ্রহ করায় আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার উপাধি লাভ করেন।[৪]
পরের বছরগুলোয় দৃশ্যতঃ তেমন কোন সাফল্য অর্জন করতে পারেননি এবং অন্যান্যরা বিশ্ব শিরোপা রক্ষার্থে সুযোগ গ্রহণ করতে থাকেন। ভাসিলি স্মাইস্লোভ এবং মিখাইল তাল - উভয়েই বিশ্ব শিরোপা জয় করলেও বোতভিনিকের কাছে পরবর্তীতে হেরে যান। অবশেষে ১৯৬২ সালে ক্যান্ডিডেট প্রতিযোগিতা জয় করে তিগ্রেন বোতভিনিকের নতুন প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হন। এছাড়াও তিনি চারবার সোভিয়েত চ্যাম্পিয়নশীপ জয় করেছিলেন।[৫]
বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা লড়াইয়ের খেলা শুরুর পূর্বে ফিদে তাদের প্রবর্তিত নিয়ম-কানুন পরিবর্তন করে। এতে যদি কেউ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে পরাজিত হয়, তাহলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনরায় অংশ নিতে পারবেন না বলে নতুন নিয়ম চালু করা হয়। এরফলে বটভিন্নিক তার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আরো বেশি সুবিধা পেয়েছেন বলে সমালোচকরা দাবী করেন। শিরোপা লড়াইয়ের খেলায় তিগ্রেন পেত্রোসিয়ান প্রথম খেলায় হেরে যান এবং ২য় খেলায় ড্র করে রক্ষা পান। এরপর তিনি ২৪ খেলার প্রতিযোগিতায় নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেন ও +৫ -২ = ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা লাভ করেন।
১৯৬৬ সালে বরিস স্পাস্কি'র বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে ১২১/২-১১১/২ পয়েন্টের ব্যবধানে জয়ী হয়ে শিরোপা অক্ষুণ্ন রাখেন। কিন্তু ১৯৬৯ সালে স্পাস্কি পুনরায় প্রতিপক্ষ হয়ে শিরোপার লড়াইয়ে পেত্রোসিয়ানকে ১০১/২-১২১/২ ব্যবধানে পরাজিত হন।
পেত্রোসিয়ান ১৯৫১ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত প্রতিটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে অংশগ্রহণ করেন। তার পুরনো শত্রু ভিক্টর কর্চনইয়ের কাছে কোয়ার্টার-ফাইনালে হেরে আর খেলেননি।
বিশ্ব দাবা অলিম্পিয়াডে তিনি অনতিক্রম্য দূরত্বে রয়েছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষ হয়ে নয়বার দাবা অলিম্পিয়াডে যোগ দেন। সামগ্রীকভাবে তার ফলাফল হচ্ছে +৭৯ -১ = ৫০।[৬]
তিগ্রেন পেত্রোসিয়ান হচ্ছে এমন ধরনের খেলোয়াড় যিনি প্রতিপক্ষ কর্তৃক আক্রমণ হবার পূর্বেই হারিয়ে দেন। কাপাব্লাঙ্কাও এ ধরনের খেলোয়াড় ছিলেন, কিন্তু তার দাবা খেলার ধরন ছিল সত্যিকারের এবং সাধারণ মানের। বিপরীতক্রমে পেত্রোসিয়ানের খেলার ধরন ছিল ভীষণ জটিল। অন্যান্য গ্র্যান্ডমাস্টারের কাছে যথেষ্টভাবে মূল্যায়িত হলেও তিনি তেমন জনপ্রিয় ছিলেন না। শীর্ষে থাকা অবস্থায় তিনি বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় ছিলেন এবং কৌশলের সাহায্যে জটিল অবস্থানে থেকে শেষ পর্যন্ত জয়ী হতেন।
পুরস্কার | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী মিখাইল বটভিন্নিক |
বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন ১৯৬৩-৬৯ |
উত্তরসূরী বরিস স্পাস্কি |
স্বীকৃতি | ||
পূর্বসূরী ডেভিড ব্রনস্টেইন |
সর্বকনিষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার দাবাড়ু ১৯৫২–১৯৫৫ |
উত্তরসূরী বরিস স্পাস্কি |