তিরুচিরাপল্লী ত্রিচি, তিরুচি | |
---|---|
মহানগর | |
স্থানাঙ্ক: ১০°৪৮′১৮″ উত্তর ৭৮°৪১′০৮″ পূর্ব / ১০.৮০৫০০° উত্তর ৭৮.৬৮৫৫৬° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | তামিলনাড়ু |
জেলা | তিরুচিরাপল্লী |
অঞ্চল | চোলনাড়ু |
জোন | কাবেরী বদ্বীপ |
সরকার | |
• ধরন | সিটি কর্পোরেশন |
• শাসক | তিরুচিরাপল্লী সিটি পৌর কর্পোরেশন |
• মেয়র | পদ শূন্য |
আয়তন | |
• মহানগর | ১৬৭.২৩ বর্গকিমি (৬৪.৫৭ বর্গমাইল) |
• মহানগর | ২১১.৫১ বর্গকিমি (৮১.৬৬ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ৪ |
উচ্চতা | ৮৮ মিটার (২৮৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১)[ক] | |
• মহানগর | ৯,১৬,৮৫৭ |
• ক্রম | ৪ |
• জনঘনত্ব | ৫,৫০০/বর্গকিমি (১৪,০০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর[১] | ১০,২২,৫১৮ |
বিশেষণ | তিরুচিতে |
ভাষা | |
• দাপ্তরিক | তামিল |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৬২০ ০xx |
টেলিফোন কোড | ০৪৩১ |
যানবাহন নিবন্ধন | টিএন-৪৫, টিএন-৪৮, টিএন-৮১ |
ওয়েবসাইট | ত্রিচি সিটি পৌর কর্পোরেশন |
তিরুচিরাপল্লী [খ] ( ) (তামিল: திருச்சிராப்பள்ளி, প্রতিবর্ণী. তিরুচ্চিরাপ্পল়্ল়ি) ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের দ্বিতীয় স্তরের প্রধান শহর এবং তিরুচিরাপল্লী জেলার প্রশাসনিক সদর। শহরটি তিরুচি বা ত্রিচি নামেও পরিচিত। এই শহরটি তামিলনাড়ুর সবচেয়ে বাসযোগ্য[৬] ও সবচেয়ে পরিষ্কার শহর এবং ভারতে মহিলাদের জন্য পঞ্চমতম সুরক্ষিত শহরের কৃতিত্ব অর্জন করেছে।[৭] এটি রাজ্যের চতুর্থ বৃহত্তম শহর, পাশাপাশি চতুর্থ বৃহত্তম শহরপুঞ্জ। শহরটি চেন্নাই থেকে ৩২২ কিলোমিটার (২০০ মাইল) দক্ষিণে এবং কন্যাকুমারী থেকে ৩৭৯ কিলোমিটার (২৩২ মাইল) উত্তরে রাজ্যের প্রায় ভৌগোলিক কেন্দ্রে অবস্থিত। কাবেরী বদ্বীপ শহরটির ১৬ কিলোমিটার (৯.৯ মাইল) পশ্চিমে শুরু হয়, যেখানে কাবেরী নদী দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে শ্রীরঙ্গম দ্বীপ গঠন করেছে, যা বর্তমানে তিরুচিরাপল্লী সিটি পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শহরটির আয়তন ১৬৭.২৩ বর্গ কিলোমিটার (৬৪.৫৭ বর্গ মাইল) এবং ২০১১ সালের হিসাবে জনসংখ্যা ছিল ৯,১৬,৮৫৭ জন।[ক]
তিরুচিরাপল্লী ভারতের প্রাচীনতম জনবহুল শহরগুলির মধ্যে একটি। এর লিপিবদ্ধ ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে শুরু হয়, যখন এটি চোল শাসনের অধীনে ছিল। শহরটি পল্লব, পান্ড্য, বিজয়নগর সাম্রাজ্য, নায়ক রাজবংশ, কর্ণাটিক রাজ্য ও ব্রিটিশদের দ্বারাও শাসিত হয়েছে। তিরুচিরাপল্লীর সর্বাধিক বিশিষ্ট ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির মধ্যে রয়েছে রকফোর্ট, শ্রীরঙ্গামের রঙ্গানাথস্বামী মন্দির এবং তিরুভানাইকাভালের জাম্বুকেশ্বরর মন্দির, তিরুভানাইকাভাল। প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর পারম্ভিক প্রাথমিক চোলদের রাজধানী উড়াইউর বর্তমানে তিরুচিরাপল্লীর একটি সন্নিহিত অঞ্চল। শহরটি ব্রিটিশ ও ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে কর্ণাটকের যুদ্ধগুলিতে (১৭৪৬–১৭৬৩) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শহরটি তামিলনাড়ু রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র এবং এখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান, যেমন জাতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান (এনআইটি), ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট অব ইনস্টিটিউট (আইআইএম) এবং ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান (আইআইআইটি) রয়েছে। এই শহরে ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যালস লিমিটেড (ভেল বা বিএইচইএল), গোল্ডেন রক রেলওয়ে ওয়ার্কশপ, তিরুচিরাপল্লী অর্ডিনেন্স ফ্যাক্টরি (ওএফটি) এবং ভারী অ্যালো পেনিট্রেটার প্রকল্প (এইচপিপি) এর মতো শিল্প এককগুলির কারখানা রয়েছে। শহর ও আশেপাশের অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক শক্তি সরঞ্জাম উৎপাদনের ইউনিটের উপস্থিতি জন্য এটি "ভারতের জ্বালানী সরঞ্জাম ও ফ্যাব্রিকেশনের রাজধানী" উপাধি অর্জন করেছে। তিরুচিরাপল্লী আন্তর্জাতিকভাবে ত্রিচিনোপলি সিগার নামে পরিচিত একটি চেরুটের ব্র্যান্ডের জন্য বিখ্যাত, যা ১৯ শতকে যুক্তরাজ্যে প্রচুর পরিমাণে রফতানি হয়।
রাজ্যের একটি প্রধান সড়ক ও রেলওয়ে কেন্দ্র, এই শহরে তিরুচিরাপল্লী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (টিআরজেড) মাধ্যমে উড়ান পরিবেশন করা হয়, যেটি মূলত মধ্য প্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে উড়ান পরিচালনা করে।
তিরুচিরাপল্লী তামিলনাড়ুর অন্যতম প্রাচীনতম জনবহুল শহর; এর প্রথম দিকের বসতিগুলি খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দ থেকে থেকে শুরু হয়।[১০] খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী থেকে ৬০০ বছর ধরে পারম্ভিক চোলদের রাজধানী ছিল উরাইউর,[১১] যা বর্তমান তিরুচিরাপল্লীর একটি সন্নিহিত অঞ্চল।[১২][১৩] শহরটিকে দ্বিতীয় শতাব্দীর রচনা ভূগোলে ইতিহাসবিদ টলেমি কর্তৃক “অরথৌরা” হিসাবে উল্লেখ করা হয়।[১৪] উরাইউর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) দূরে অবস্থিত কল্লানাই (লোয়ার আনাইকুট) বিশ্বের প্রাচীনতম সক্রিয় বাঁধ,[১৫] যা খ্রিস্টীয় ২য় শতাব্দীতে কারিকল চোল কর্তৃক কাবেরী নদীর তীরে নির্মিত হয়।[১৬]
তিরুচিরাপল্লীর মধ্যযুগীয় ইতিহাস পল্লব রাজা প্রথম মহেন্দ্রবর্মণের শাসনামল দিয়ে শুরু হয়, যিনি খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে দক্ষিণ ভারতে রাজত্ব করেছিলেন এবং রকফোর্টের মধ্যে পাথর-কাটে গুহা-মন্দির নির্মাণ করেন।[১৭][১৮][১৯] অষ্টম শতাব্দীতে পল্লবদের পতনের পরে, শহরটি মধ্যযুগীয় চোলদের দ্বারা দখলকৃত হয়, যারা ১৩শ শতাব্দী অবধি শাসন করে।[২০]
চোলদের পতনের পরে তিরুচিরাপল্লী পান্ড্যরা দখল করে নেয়,[২১] তাঁরা ১৩১১ সালে আল্লাউদ্দিন খিলজির সেনাপতি মালিক গফুরের কাছে পরাজয়ের পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত ১২১৬ সাল থেকে রাজত্ব করেন।[২২][২৩] মনে করা হয় যে দিল্লির সুলতানাতের বিজয়ী সেনাবাহিনী এই অঞ্চলকে লুণ্ঠন ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।[২২][২৩][২৪] শ্রীরঙ্গমের মন্দিরে হিন্দু দেবতা রঙ্গনাথের প্রতিমা প্রায় নিখোঁজ হয়ে যায় এবং পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পুনরুদ্ধার করা হয়নি।[২৩][২৪] তিরুচিরাপল্লী ১৩১১ সাল থেকে ১৩৭৮ সাল পর্যন্ত দিল্লি ও মাদুরাই সুলতানাতের শাসনাধীনে থাকে,[২৫] তবে চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগে মাদুরাই সালতানাত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে শুরু করে।[২৬] ধীরে ধীরে, বিজয়নগর সাম্রাজ্য রাজ্যের উত্তরের অংশগুলির উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে এবং বিজয়নগরের রাজপুত্র কুমার কাম্পন্ন উদাইয়ার ১৩৭১ সালে তিরুচিরাপল্লী দখল করেন।[২৭] বিজয়নগর সাম্রাজ্য ১৩৭৮ সাল থেকে ১৫৩০-এর দশক পর্যন্ত এই অঞ্চল শাসন করে এবং পূর্ববর্তী মুসলিম শাসকদের দ্বারা ধ্বংস হওয়া মন্দির ও স্মৃতিসৌধগুলির পুনর্গঠন করে হিন্দু ধর্মকে পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[২৮] ষোড়শ শতকের গোড়ার দিকে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের পরে, মাদুরাই নায়ক রাজ্যটি তার স্বাধীনতার দাবি করতে শুরু করে।[২৯][৩০][৩১] বিশ্বনাথ নায়কের (১৫২৯-১৫৬৪) রাজত্বকালে এই শহরটি সমৃদ্ধ হয়, কথিত আছে যে তিনি শ্রীরঙ্গম মন্দিরের আশেপাশে টেপ্পাকুলাম নির্মাণ ও প্রাচীর নির্মাণ করে অঞ্চলটিকে সুরক্ষিত করেন।[৩২][৩৩] তাঁর উত্তরাধিকারী কুমার কৃষ্ণপ্পা নায়ক তিরুচিরাপল্লীকে তার রাজধানী করেন[৩৩] এবং এটি ১৬১৬ সাল থেকে ১৬৩৪ সাল পর্যন্ত এবং ১৬৬৫ সাল থেকে ১৭৩৬ সাল পর্যন্ত মাদুরাই নায়ক রাজ্যের রাজধানী হিসাবে কাজ করে।[৩৪][৩৫][৩৬]
চতুর্থ অ্যাংলো-মহীশূর যুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশদের শত্রু টিপু সুলতান ও ওয়াল্লাজাহের পুত্র নবাব উমদাত উল-উমরার মধ্যে অশুভ আঁতাতের কথা ব্রিটিশরা জানার ফলে ১৮০১ সালের জুলাই মাসে কর্ণাটক রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়।[৩৭][৩৮] ত্রিচিনোপলিকে একই বছরে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ত্রিচিনোপলি জেলা গঠিত হয়, পাশাপাশি ত্রিচিনোপলি (বা তিরুচিরাপল্লী) শহরটিকে জেলাটির রাজধানী হিসাবে গড়ে তোলা হয়।[৩৯]
কোম্পানির রাজ এবং পরবর্তীকালে ব্রিটিশ রাজের সময়ে তিরুচিরাপল্লী ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসাবে আবির্ভূত হয়। ব্রিটিশ ভারতে প্রথম—১৮৭১ সালের ভারতীয় জনগণনা অনুসারে—তিরুচিরাপল্লীর জনসংখ্যা ছিল ৭৬,৫৩০ জন, এটি মাদ্রাজের রাজধানীর (বর্তমানে চেন্নাই) পরে প্রেসিডেন্সির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে পরিণত হয়।[৪০] এটি পুরো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ত্রিচিনোপলি সিগার নামে বিভিন্ন ধরনের অনন্য চুরুটের উৎপত্তি স্থান হিসাবে পরিচিত ছিল।[৪১] বিশ শতকের গোড়ার দিকে মাদ্রাজে স্থানান্তরিত না হওয়া অবধি তিরুচিরাপল্লী ১৮৭৪ সালে নবগঠিত দক্ষিণ ভারতীয় রেলওয়ে সংস্থার প্রথম সদর দফতর ছিল।[গ][৪৩]
তিরুচিরাপল্লী প্রায় কেন্দ্রীয় দক্ষিণ-পূর্ব ভারতে তামিলনাড়ু রাজ্যের প্রায় ভৌগোলিক কেন্দ্রে অবস্থিত। কাবেরী বদ্বীপ শহরটির পশ্চিমে ১৬ কিলোমিটার (৯.৯ মাইল) গঠন শুরু করে, যেখানে থেকে কাবেরী ও কল্লিদাম নামে নদীর দুটি ধারা প্রবাহিত হয় এবং শ্রীরঙ্গাম দ্বীপটি গঠন করে।[৪৪][৪৫][৪৬] সড়ক পথে এটি হায়দ্রাবাদের ৯১২ কিলোমিটার (৫৬৭ মাইল) দক্ষিণে, চেন্নাইয়ের ৩২২ কিলোমিটার (২০০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ও বেঙ্গালুরুর ৩৩১ কিলোমিটার (২০৬ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।[৪৭] তীরুচিরাপল্লীর ভূমিভাগ প্রায় সমতল এবং গড় উচ্চতা ৮৮ মিটার (২৮৯ ফুট)। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র পাহাড় বা টিলা ভূমিপৃষ্ঠের উপরে উঠে এসেছে,[৪৮] যার মধ্যে সর্বোচ্চটি হল রকফোর্ট;[৪৯][৫০] যার আনুমানিক বয়স ৩,৮০০ মিলিয়ন বছর এটি বিশ্বের প্রাচীনতম শিলাগুলির একটি।[৫১][৫২] অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ক্ষুদ্র পাহাড় বা টিলার মধ্যে রয়েছে গোল্ডেন রক, খাজমালাই[৫৩] এবং ইউয়াকান্দান তিরুমালাই ও থিরুভেরম্বুরের একটি করে।[৫৪]
কাবেরী ও এর শাখা কল্লিদাম ছাড়াও,[৫৫] শহরের মধ্যে ইউয়াকান্দান চ্যানেল, কোড়াইয়ার ও কুড়ামুরুতি নদী প্রবাহিত হয়।[৫৬] তিরুচিরাপল্লী অতিক্রম করে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে—কাবেরী নদীর আশেপাশের জমিতে উর্বর পলি মাটি জমা হয়,[৫৭] যেখানে আঙুল বাজরা ও ভুট্টার মতো ফসল চাষ করা হয়।[৫৮] আরও দক্ষিণে, ভূমিভাগটি নিম্নমানের কালো মাটি দ্বারা আচ্ছাদিত।[৫৭] ত্রিচিনোপলি গ্রুপ নামে পরিচিত ক্রেটিসিয়াস শিলার একটি বেল্ট শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়েছে[৫৯] এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রত্নতাত্ত্বিক শিলা, গ্রানাইট ও গিনিসের স্তর রয়েছে, যা কংগ্রোমেরেটিক ল্যাটাইটের একটি পাতলা আচ্ছাদন দ্বারা আবৃত রয়েছে।[৪৯] অঞ্চলটি ভূমিকম্পের তৃতীয় অঞ্চলের অধীনে আসে, যা ভূমিকম্পের জন্য মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ।[৬০]
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৮৭১ | ৭৬,৫৩০ | — |
১৮৮১ | ৮৪,৪৪৯ | +১০.৩% |
১৮৯১ | ৯০,৬০৯ | +৭.৩% |
১৯০১ | ১,০৪,৭২১ | +১৫.৬% |
১৯১১ | ১,২৩,৫১২ | +১৭.৯% |
১৯২১ | ১,২০,৪২২ | −২.৫% |
১৯৩১ | ১,৪২,৮৪৩ | +১৮.৬% |
১৯৪১ | ১,৫৯,৫৬৬ | +১১.৭% |
১৯৫১ | ২,১৮,৯২১ | +৩৭.২% |
১৯৬১ | ২,৪৯,৮৬২ | +১৪.১% |
১৯৭১ | ৩,০৭,৪০০ | +২৩% |
১৯৮১ | ৩,৬২,০৪৫ | +১৭.৮% |
১৯৯১ | ৩,৮৭,২২৩ | +৭% |
২০০১ | ৭,৫২,০৬৬ | +৯৪.২% |
২০১১ | ৯,১৬,৮৫৭ | +২১.৯% |
সুত্র: |
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, তিরুচিরাপল্লীর জনসংখ্যা হল ৮৪৭,৩৮৭ জন,[ক] যার ৯.৪% ছয় বছরের কম বয়সী এবং পৌর কর্পোরেশনের সীমানার মধ্যে ২,১৪,৫৯৯ টি পরিবারে বসবাস করে। নথিভুক্ত করা জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল ৫,৭৬৮ জন/ বর্গ কিমি (১৪,৯৪০ জন/বর্গ মাইল) এবং লিঙ্গ অনুপাত প্রতি ১০০০ জন মহিলার বিপরীতে ৯৭৫ জন পুরুষ।[৯] ২০১১ সালের হিসাবে তিরুচিরাপল্লী শহরপুঞ্জের জনসংখ্যা ছিল ১০,২২,৫১৮ জন এবং এটি তামিলনাড়ুর চতুর্থ বৃহত্তম শহরপুঞ্জ ও ভারতের মধ্যে ৫৩তম স্থান অর্জন করে।[১]
‘শহর উন্নয়ন আইন ১৮৬৫’ এর অধীনের ১৮৬৮ সালের ১ নভেম্বর ১৮ বর্গকিলোমিটার (৬.৯ বর্গ মাইল) জুড়ে বিস্তৃত তিরুচিরাপল্লী পৌরসভার উদ্বোধন করা হয়[৬৫]; এটি মূলত দু'জন উপ-আধিকারিক ও নয় জন মনোনীত সদস্য নিয়ে গঠিত।[৬৬] ১৮৭৭ সালে কাউন্সিল নির্বাচন চালু হয় এবং ১৮৮৮ সালে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।[৬৬] ‘তিরুচিরাপল্লী সিটি মিউনিসিপাল কর্পোরেশন আইন ১৯৯৪’ অনুসারে পূর্ববর্তী শ্রীরাঙ্গম ও গোল্ডেন রক পৌরসভাকে অন্তর্ভুক্ত[৬৭] করার সাথে তিরুচিরাপল্লী পৌরসভাটি একটি পৌর কর্পোরেশনে উন্নীত হয়[৬৮]। ১৬৭.২৩ বর্গকিলোমিটার (৬৪.৫৭ বর্গ মাইল) জুড়ে[ক][৬৯] বিস্তৃত পৌর কর্পোরেশন ৬৫ টি ওয়ার্ড এবং শ্রীরঙ্গম, আরিয়ামঙ্গালাম, গোল্ডেন রক ও অভিষেকপুরমসহ চারটি প্রশাসনিক অঞ্চল নিয়ে গঠিত।[৭০]
শহরটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ তামিলনাড়ু বিদ্যুৎ বোর্ড (টিএনইবি) কর্তৃক নিয়ন্ত্রণ ও বিতরণ করা হয়।[৭১] তিরুচিরাপল্লী হল টিএনইবির ত্রিচি অঞ্চলের সদর দফতর। শহর ও এর শহরতলি নিয়ে ত্রিচি মেট্রো বিদ্যুৎ বিতরণ বৃত্ত গঠিত, যা ছয়টি বিভাগে বিভক্ত।[৭১] তেন্নুর আঞ্চলিক সদর দফতরে একজন প্রধান বিতরণ প্রকৌশলী নিযুক্ত আছেন।[৭১] তিরুচিরাপল্লী সিটি কর্পোরেশন জল সরবরাহ করে।[৭২] কাবেরী নদী থেকে শহরে পানীয় জলের সরবরাহ করা হয় এবং শহরের আশেপাশে ৬০ টি সেবা জলাধারের সাথে সংযুক্ত ১,৪৭০ টি বোর কূপ যুক্ত রয়েছে।[৭৩] শহর যে ছয়টি জল সরবরাহ কেন্দ্র থেকে জল সরবরাহ পায়, তার মধ্যে চারটি পৌর কর্পোরেশন এবং বাকীগুলি অন্যান্য সংস্থা পরিচালনা করে।[৭৪]
তিরুচিরাপল্লিতে দূষণ একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। তামিলনাড়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড বায়ুর গুণগতমান পরীক্ষা করতে নগরীতে পাঁচটি স্টেশন স্থাপন করেছে।[৭৫] ২০১২ সালের হিসাবে, প্রতিদিন শহরে প্রায় ৪৩২ টন (৪,৩২,০০০ কেজি) কঠিন বর্জ্য উৎপাদিত হয়।[৭৬] কর্পোরেশন শহরের কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে; গান্ধী মার্কেট, সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস ও ছাত্রম বাস টার্মিনাসের মতো জায়গাগুলি অন্যান্য সংস্থা তদারকি করে।[৭৪] মূল ভাগাড়টি আরিয়ামঙ্গলামে রয়েছে।[৭৭] ত্রিচি-শ্রীরঙ্গম ভূগর্ভস্থ নিকাশী (ইউজিডি) অঞ্চলের বর্জ্য-জল বা তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটি তামিলনাড়ু জল সরবরাহ ও নিকাশী বোর্ড (টিডব্লিউএডি) এবং অন্যান্য অঞ্চলে তিরুচিরাপল্লী পৌর কর্পোরেশন পরিচালনা করে।[৭৪] ২০১৩ সাল পর্যন্ত, পৌর কর্পোরেশন কর্তৃক মোট ৪০,৫৮০ ইউজিডি সংযোগ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।[৭৮] ২০২০ সালে, অনুমান করা হয় যে শহরটির ৩১% নিকাশী নেটওয়ার্ক একটি নিকাশী ব্যবস্থার আওতাভুক্ত রয়েছে, তবে, স্থানীয় নগর সংস্থা, তমিলনাড়ু আরবান ফিনান্স অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (টুফিডকো) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের যৌথভাবে অর্থায়নে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কর্পোরেশন পুরো শহরকে নিকাশী ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করার প্রকল্পটিকে দ্রুত গতিতে সম্পূর্ণ করারা চেষ্টা করছে।[৭৯]
ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকেই তিরুচিরাপল্লী ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র হিসাবে স্বীকৃত।[৮০][৮১][৮২] সেন্ট জোসেফ কলেজ, যা ১৮৪৬ সালে নাগাপত্তিনমে খোলা হয় এবং ১৮৮৩ সালে তিরুচিরাপল্লীতে স্থানান্তরিত হয়, এটি দক্ষিণ ভারতের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।[৮৩] ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘সোসাইটি ফর দ্য প্রোপাগেশন অফ গসপেল’ (এসপিজি) কলেজটি শহরের একটি প্রিমিয়াম মিশনারি প্রতিষ্ঠান।[৮০]
২০১৩ সাল পর্যন্ত, তিরুচিরাপল্লীতে ৪৫ টি কলা ও বিজ্ঞান কলেজ, ৪০ টি পলিটেকনিক কলেজ এবং ১৩ টি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষা দানের কলেজ রয়েছে।[৮৪] চারুকলা ও বিজ্ঞান বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষাদানকারী বিশিষ্ট কলেজগুলি হল সেন্ট জোসেফ কলেজ, ন্যাশনাল কলেজ,[৮৫] বিশপ হেবের কলেজ,[৮৬] জামাল মোহাম্মদ কলেজ[৮৭] এবং সরকারি আইন কলেজ।[৮৮] শহর ও আশেপাশের অঞ্চলে প্রায় ৩৫ টি প্রকৌশলী কলেজ রয়েছে।[৮৯] ১৯৬৪ সালে আঞ্চলিক প্রকৌশলী কলেজ হিসাবে সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত তিরুচিরাপল্লী জাতীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের,[৯০] একটি ক্যাম্পাস তিরুচিরাপল্লীর উপকণ্ঠে থুওয়াকুডিতে রয়েছে।[৯১]
আনবিল ধর্মালিংম কৃষি কলেজ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ১৯৮৯ সালে তামিলনাড়ু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উপাদানভূত কলেজ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কলার জন্য জাতীয় গবেষণা কেন্দ্রটি কৃষিতে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা সুযোগ প্রদান করে।[৯২] আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের তিরুচিরাপল্লী শাখাটি ২০০৭ সালে আন্না বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিখণ্ডন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[৯৩]
তিরুচিরাপল্লীতে স্থানীয় পরিবহনের সর্বাধিক ব্যবহৃত পদ্ধতি হল রাজ্য সরকারের মালিকানাধীন তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহন কর্পোরেশনের (টিএনএসটিসি) বাস ও অটো রিকশা।[৯৪][৯৫] তিরুচিরাপল্লি টিএনএসটিসি-এর কুম্বকোনাম বিভাগের একটি অংশ গঠন করে।[৯৬] শহরে ছাত্রম বাস স্ট্যান্ড ও সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড নামে দুটি বড় বাস টার্মিনাস রয়েছে; উভয়ই আন্তঃনগর পরিষেবা এবং শহরতলিতে স্থানীয় যাত্রী পরিবহণের জন্য বাস পরিচালনা করে।[৯৭]
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; pollution
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; economictimes_it
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি