রণ সঙ্গীত | |
কথা | কাজী নজরুল ইসলাম, ১৯২৯ |
---|---|
সঙ্গীত | কাজী নজরুল ইসলাম, ১৯২৯ |
গ্রহণকাল | ১৩ই জানুয়ারি ১৯৭২ |
অডিও নমুনা | |
চল চল চল |
নতুনের গান বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কর্তৃক ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে রচিত এবং সুরারোপিত সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত একটি গান। দাদরা তালের এই সংগীতটি ১৯৭২ সালের ১৩ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের তৎকালীন মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের রণ-সংগীত হিসেবে নির্বাচন করা হয়।[১] বাংলাদেশের যে কোনো সামরিক অনুষ্ঠানে এই গানটির ২১ লাইন যন্ত্রসংগীতে বাজানো হয়।[২][৩] গানটি ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার করা জরিপে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের ১৮তম স্থান অধিকার করে।[৪]
১৯২৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে নজরুল মুসলিম সাহিত্য সমাজের ২য় বার্ষিক সম্মেলনের উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় সৈয়দ আবুল হোসেনের বাসভবনে অবস্থানকালে তিনি এই গানটি রচনা করেন। গানটি "নতুনের গান" শিরোনামে প্রথম প্রকাশিত হয় শিখা পত্রিকায়। পরে এটি সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।[৫]
নতুনের গান
চল্ চল্ চল্। চল্ চল্ চল্।
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণী-তল
অরুণ প্রাতের তরুণ দল
চল্ রে চল্ রে চল্
চল্ চল্ চল্।।
ঊষার দুয়ারে হানি’ আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা টুটাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।
নব নবীনের গাহিয়া গান
সজীব করিব মহাশ্মাশান
আমরা দানিব নূতন প্রাণ
বাহুতে নবীন বল।
চল্ রে নও জোয়ান
শোন্ রে পাতিয়া কান
মৃত্যু-তোরণ-দুয়ারে-দুয়ারে
জীবনের আহবান।
ভাঙ্ রে ভাঙ্ আগল
চল্ রে চল্ রে চল্
চল্ চল্ চল্।।
কোরাসঃ
ঊর্ধ্ব আদেশ হানিছে বাজ,
শহীদী-ঈদের সেনারা সাজ,
দিকে দিকে চলে কুচ-কাওয়াজ—
খোল রে নিদ-মহল!
কবে সে খেয়ালী বাদশাহী,
সেই সে অতীতে আজো চাহি'
যাস মুসাফির গান গাহি'
ফেলিস অশ্রুজল।
যাক রে তখত-তাউস
জাগ রে জাগ বেহুঁশ।
ডুবিল রে দেখ কত পারস্য
কত রোম গ্রিক রুশ,
জাগিল তা'রা সকল,
জেগে ওঠ হীনবল!
আমরা গড়িব নতুন করিয়া
ধুলায় তাজমহল!
চল্ চল্ চল্।।
^ ক: পাকিস্তান আমলে (১৯৪৭-১৯৭১) এই কবিতাটি স্কুলে পড়ানো হতো, তখন স্কুলপাঠ্য সরকারি বইতে "মহাশ্মশান"-এর পরিবর্তে "গোরস্থান" শব্দটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল।